২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, কারণ কী?

ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, বিশ্বকাপ
ফুটবল খেলায় সমর্থনের জের ধরে দুই দলের অন্ধ ভক্তদের মধ্যে সঙ্ঘাতের ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয় - সংগৃহীত

দেশের কয়েকটি জায়গায় ফুটবল বিশ্বকাপ উন্মাদনার জের ধরে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে এসব দ্বন্দ্বের সমাধান করা সম্ভব হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

ফুটবল খেলায় সমর্থনের জের ধরে দুই দলের অন্ধ ভক্তদের মধ্যে সঙ্ঘাতের ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। ঘরোয়া ক্লাব ফুটবলে একসময় দুই বড় ক্লাব আবাহনী ও মোহামেডান সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটতো নিয়মিতই। তবে বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবল জনপ্রিয়তা হারানোর পর সমর্থকদের মধ্যে ফুটবল সংক্রান্ত দ্বন্দ্বটা পরিবর্তিত হয়ে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের সমর্থকদের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এর তীব্রতা কতটা তা বোঝা যায় ফুটবল বিশ্বকাপের সময়।

এবারের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় এরই মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে।

রাজশাহী, নীলফামারি বা ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ঘটনার মাত্রা ছোটখাটো হলেও, খুলনায় এক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটেছে বলে জানান খুলনার দৌলতপুর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা কাজী মোস্তাক আহমেদ।

অনেকে প্রশ্ন করেছেন, খেলা নিয়ে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে কেন?

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্রীড়াক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ না থাকার কারণেই এই ধরণের সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জিনাত হুদা ওয়াহিদ।

"আমরা যারা পিছিয়ে পড়া মানুষ আছি, তাদের খেলাধূলা বা বিনোদনের জগতটা সেভাবে বিকশিত হয়নি। স্বয়ংসম্পূর্ণ তো নয়ই, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি।"

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ধারার সুষ্ঠু বিকাশ ব্যাহত হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে দিন দিন বিদ্বেষমূলক মনোভাব তৈরি হচ্ছে।

"এক ধরণের রাজনৈতিক বিভাজন ও সংস্কৃতিতে যে না পাওয়ার হাহাকারগুলো আছে - সেই শূন্যতার বোধ থেকে এই ধরণের বিষয়গুলো উৎসরিত হয়," - বলছিলেন জিনাত হুদা।

তার মতে, রাজনৈতিক দর্শন ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ সুষ্ঠভাবে না হওয়ায় মানুষের মনে সৃষ্ট অপ্রাপ্তি থেকে এই ধরণের উগ্র মনোভাব তৈরি হচ্ছে।

"আমরা স্বীকার করি আর না করি, বাংলাদেশ তার আদি রাজনৈতিক দর্শন, সামাজিক বন্ধন ও ধর্মীয় অনুশাসন থেকে বিচ্যুত হয়েছে।"

নাগরিকদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের অভাবও এর অন্যতম প্রধান কারণ বলে তিনি মনে করেন। জাতীয়তাবোধের অভাব আমাদের ক্রীড়া, সংস্কৃতি, পোশাক-আশাক সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে।

সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও সেসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের জন্য মানুষকে উৎসাহিত করলে দেশের নাগরিকদের মধ্যে একাত্ববোধ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে মতপ্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা। - বিবিসি

 

আরো পড়ুন : ম্যারাডোনার চেয়ে মেসি এগিয়ে : রামোস

স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদ তারকা সার্জিও রামোসের দৃষ্টিতে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনার চেয়ে ঢের এগিয়ে লায়নেল মেসি। তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার মানুষ বেশ ভালোই জানে বিশ্বসেরা ফুটবলারের (মেসি) চেয়ে বেশ পিছিয়ে ম্যারাডোনা। আমার কাছে সেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার একজনই। তিনি হলেন, লায়নেল মেসি।’ সম্প্রতি রাশিয়া বিশ্বকাপে একটি সাক্ষাৎকারে রামোসকে নিয়ে মন্তব্য করেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘রামোসের চেয়ে দিয়েগো গোডিন অনেক ভালো ডিফেন্ডার।’

ম্যারাডোনার এমন মন্তব্য কানে পৌঁছেছে রামোসের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ম্যারাডোনাকে নিয়ে ওপরের মন্তব্যটি করেছেন রামোস।

গোডিন উরুগুয়ের ডিফেন্ডার। ক্লাব ফুটবলে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে খেলছেন তিনি। উরুগুয়ের হয়ে ১১৯ ম্যাচে ৮ গোল ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ২৪৭ ম্যাচে ১৪ গোল করেছেন ৩২ বছর বয়সী গোডিন। ২০১০ সালে ভিয়ারিয়াল ছেড়ে অ্যাথলেটিকোতে যোগ দেন তিনি। এর পর থেকে অ্যাথলেটিকোতেই আছেন গোডিন। রাশিয়া বিশ্বকাপেও উরুগুয়ের ডিফেন্স সামলানোর দায়িত্ব তার কাঁধে রয়েছে।

গোডিনের চেয়ে অভিজ্ঞতায় বেশ এগিয়ে রামোস। স্পেনের হয়ে ১৫৪ ম্যাচে ১৩ গোল ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩৯১ ম্যাচে ৫৩ গোল করেছেন ৩২ বছর বয়সী রামোস। ২০০৫ সাল থেকে রিয়ালে খেলছেন তিনি।

মেসি কেন এগিয়ে সেটিও স্পষ্ট করেছেন রামোস। তিনি বলেন, ‘মেসির যে রেকর্ড আছে ম্যারাডোনার তা নেই। মেসি যা করে দেখিয়েছে ম্যারাডোনা তা করতে পারেনি। মেসি দুরন্ত খেলোয়াড়। তবে এটি ঠিক, জাতীয় দলের হয়ে ম্যারাডোনার চেয়ে ভালো কিছু করতে পারেনি মেসি। কারণ জাতীয় দলে তাকে যোগ্য সহায়তা কেউই দিতে পারে না। যা ক্লাব ফুটবলে মেসি পেয়ে থাকে।’

বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপে দুইটি করে ম্যাচ শেষে সমান ৪ করে পয়েন্ট স্পেন ও পর্তুগালের। ৩ পয়েন্ট ইরানের। দুই ম্যাচ হেরে ইতোমধ্যে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে মরক্কো। আজ মরক্কোর মুখোমুখি হবে স্পেন। ওই ম্যাচে জিতলে বা ড্র করলেই শেষ ষোলোর টিকিট কাটবে স্পেন। আর যদি হেরে যায় এবং অন্য ম্যাচে যদি পর্তুগাল-ইরান ড্র করে তবে গোল গড়ের হিসাব-নিকাশে পড়বে স্প্যানিশরা।
তবে এসব নিয়ে না ভেবে শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া স্পেন কিছুই ভাবছে না বলে জানান রামোস। তিনি বলেন, ‘শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া আমরা অন্য কিছু ভাবছি না বা ভাবতে চাই না। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে খেলতে চাই।’


আরো সংবাদ



premium cement