২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুরাদনগর: ভোট দিতে না পেরে কাঁদলেন আছিয়া বেগম

আছিয়া বেগম - ছবি : নয়া দিগন্ত

চরম অনিয়ম ও ভোট চুরির অভিযোগ এনে কুমিল্লা-৩ মুরাদনগরের ধানের শীষ প্রার্থী একেএম মজিবুল হক ভোট না দিয়েই ফিরে এসেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের সহযোগীয় ভোটের আগের দিন অর্থাৎ শনিবার রাতেই ভোট চুরি করে ব্যালট বাক্স ভরে রেখেছে। ভোটের দিন শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য একটি নাটক তৈরী করেছে। যার কারনে তিনি ভোট না দিয়েই ফিরে এসেছেন।

রোববার সকাল থেকে মুরাদনগরের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট নেই। সকাল থেকেই ভোটাররা বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলেও সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা তাদের ফিরে দেয়। এই নিয়ে কয়েকটি কেন্দ্রে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে ধানের শীষ সমর্থক ও ভোটারদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সালে মিলে ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর থেকে কেন্দ্রগুলো নৌকা সমর্থকদের দখলে চলে যায়।

সকালে মুরাদনগর ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় ভোট দিতে যান বৃদ্ধা আছিয়া বেগম। ভালো ভাবেই ভোট কেন্দ্রে যান। পোলিং অফিসার তার হাতের আঙ্গুলে অমোচনীয় কালি লাগিয়ে দেন। এরপর আছিয়া বেগম ব্যালট পেপার চাইলে তাকে বলা হয় ‘ভোট দিতে হবে না, চলে যান’। কিন্তু তারপরও আছিয়া ভোট দিতে চাইলে তাকে ধমক দিয়ে বের করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন। পরে ভোট কেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হন। বাইরে এসে চোখ মুছতে মুছতে এমন সব অভিযোগ করেন তিনি।

পাহাড়পুর এমদাদুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসায় সকাল থেকে ভোটারদের উপচেপড়া ভীড় দেখা যায়; কিন্তু তাদের কেউ ভোট দিতে পারেননি। তার আগেই নৌকার সমর্থকরা ধানের শীষের সমর্থকদের ধাওয়া করে। ধানের শীষ সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পুলিশ নৌকার সমর্থকদের সাথে এক হয়ে তাদের ধাওয়া করে। এসময় ভয়ে সাধারন ভোটাররা সবাই চলে যায়। এই কেন্দ্রের প্রেজাইডিং অফিসার আব্দুল খালেক বলেন, সকালে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা সংঘর্ষ হয়েছিলো। তবে পুলিশ পরিস্থিতি সামলে নেয়ায় আর কোন অসুবিধা হয়নি।

মুরাদনগর হানিফ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে সাধারণ ভোটারদের দেখা যায়নি। সেখানে পুরো কেন্দ্র নৌকা সমর্থকদের দখলে ছিলো। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার তুহিন কান্তি দাসের কাছে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের অনুমতি চাইলে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে দেখিয়ে বলেন ‘আপনি একটু সাংবাদিক সাহেবদের সাথে গিয়ে কেন্দ্রগুলো ঘুরিয়ে দেখান’। পরে সাংবাদিকরা কেন্দ্র পরিদর্শন না করেই ফিরে আসেন।

এদিকে চরম অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ধানের শীষ প্রার্থী মজিবুল হক ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার রাতে প্রায় ৫০টি কেন্দ্রে নৌকার ব্যালটে সীল মেরে বাক্সে ভর্তি করেছে সরকার দলীয়রা। আর তাদের পুর্ণ সহযোগীতা করেছে পুলিশ প্রশাসন। এরপর ভোটের দিন সকাল থেকে লোক দেখানো নির্বাচনের নাটক করা হয়েছে। যে নাটকে সাড়া না দিয়ে তিনি ভোট প্রদান থেকে সরে দাঁড়ান।


আরো সংবাদ



premium cement