২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ধর্ষণের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা

কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হয় না

-

দেশে ধর্ষণের মতো নারকীয় অপরাধ বেড়ে চলেছে। পাশবিক আচরণটি বিকৃত মানুষরা করেই চলেছে। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ধরন ও নৃশংসতা। আমরা প্রথম জানতে পারলাম, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একটি চলন্ত বাসে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এরপর ধর্ষণের এ অভিনব ধরনটি বাংলাদেশেও ঘন ঘন ঘটতে শুরু করে। সর্বশেষ এর শিকার হয়েছেন ধামরাইয়ের এক নারী শ্রমিক। এর আগে আরো কয়েকবার বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এদেশে। সাধারণত পাশবিক নির্যাতক অপরাধীরা ধর্ষণের জন্য সুযোগ খোঁজে। কিন্তু রাস্তায় বাসের ভেতর অসহায় নারী ধর্ষণ করার মতো অপসংস্কৃতি নতুন করে যেন চালু হলো। আমরা এখন এই অপরাধের ব্যাপক চর্চাকারী। ধর্ষণের পরিসংখ্যান বাংলাদেশে ভয়াবহ মাত্রায় ঊর্ধ্বমুখী। উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।
ধর্ষণের পর আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করে থাকে লম্পট ধর্ষক। তদুপরি ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অনেকে প্রাণও হারায়। যারা বেঁচে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষকরা বল প্রয়োগ করে পাশবিকভাবে। নিজেদের সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করে ধর্ষণের ঘটনা চাপা দিয়ে দেয়। রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা এ ধরনের অনেক ঘটনা দেশে ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ বাসে ধর্ষণের শিকার নারী শ্রমিক ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামের বাসিন্দা। গত শুক্রবার ভোরে তিনি তার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসে ওঠেন। বাসটি কারখানার স্টাফদের বহনের জন্য নির্ধারিত। তিনি তখন বাসে একা। বাসচালক একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে। তদুপরি শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঝোপের মধ্যে তার লাশ ফেলে যায়।
ধামরাইয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিলে চলন্ত বাসে আরেক পোশাক শ্রমিক ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের আগস্টে টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী। ঠিক একই ধরনের ঘটনার শিকার হন ২০১৩ সালে মানিকগঞ্জে এক পোশাক শ্রমিক। অপরাধ একটি সংক্রামক ব্যাধির মতো। চলন্ত বাসে ধর্ষণ সে ধরনের কোনো অপরাধকে উসকে দিচ্ছে কি না, অপরাধ বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে ভাবতে পারেন। বাসের ভেতর নারীদের যৌন হয়রানি এখন যেন নৈমিত্তিক ঘটনা। এ ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রচারণাও আমরা লক্ষ করছি। কিন্তু একাকী পেয়ে নারীদের ধর্ষণের ‘সুযোগ’টি রোধ করার জন্য কী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, সেটা এখনো অজানা। তবে যারা অপরাধ করছে, দ্রুততার সাথে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া গেলে ওদের সামনে নজির নিশ্চয়ই থাকবে।
একটি দৈনিক পত্রিকা গৃহকর্মী হত্যার বিচার নিয়ে অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিচ্ছে। কিন্তু হত্যা ও ধর্ষণের শিকাররা ‘দুর্বল’ হওয়ায় বিচার পাচ্ছেন না। ধর্ষণ কেন বন্ধ হচ্ছে না বা কমছে না, সে প্রশ্নের উত্তরও আমরা এখান থেকে পেতে পারি। ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীরা অর্থবিত্তে দুর্বল। সম্ভবত এ জন্য তারা বিচার পাচ্ছেন না। অন্য দিকে, বিত্তবান অপরাধীরা এমন জঘন্য অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার আমরা দেখতে পেলাম, আরো চারজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে একটি পত্রিকা। অর্থাৎ ধর্ষণ অত্যন্ত ব্যাপক একটি অপরাধ হিসেবে আমাদের সমাজে রয়েছে। ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এর আরো বিস্তৃতি ঘটবে। চলন্ত বাসে ধর্ষণের প্রবণতার সাথে নতুন করে যুক্ত হতে পারে আরো কোনো নতুন উপসর্গ।


আরো সংবাদ



premium cement
মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি ইতিহাস গড়া জয় পেল পাঞ্জাব

সকল