বাঁধের কাজ এখনই শুরু করা জরুরি
- ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
দেশের সর্বপ্রধান হাওরাঞ্চল, সুনামগঞ্জে শীত মওসুমে যথারীতি পানি সরে গেলেও এখনো হাওর রক্ষাবাঁধের কাজ শুরুই করা হয়নি। অথচ এ কাজে বিলম্ব হলে সামনের বর্ষায় কী অবস্থা দাঁড়াবে, এলাকাবাসী তা ভেবে শঙ্কিত। বিশেষ করে, কিছু দিন আগে বাঁধ ভেঙে অতিবর্ষণ ও ঢলের পানি সেখানে জনপদ ও ক্ষেতের ফসল ধ্বংস করার কথা কেউ ভোলেননি। তা ছাড়া, কোনো কোনো বছর আগাম আকস্মিক বন্যাও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত কমিটি গঠিত না হওয়ায় এবার হাওরের বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়নি।
জাতীয় একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আতঙ্কিত লাখ লাখ কৃষক পরিবার প্রকৃত কৃষকদের নিয়ে অবিলম্বে ওই কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করা গেলে বাঁধের ব্যাপারে অতীতের মতো অনিয়ম হবে না বলে তারা মনে করেন। গতবার ‘প্রকৃতি সদয়’ থাকায় হাওরের পুরো ফসল পাওয়া সম্ভব হয়েছে। যা হোক, প্রশাসনের নির্বাচনী ব্যস্ততা শেষ হওয়ার পর বাঁধ নির্মাণতৎপরতা এখন যত দ্রুত শুরু করা যায়, ততই সময়মতো এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে। অন্যথায়, বর্ষা এসে পড়লে বাঁধের কাজ সমাপ্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলায় এবার ছোট-বড় ৩৭টি হাওরে বাঁধ নির্মাণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। হাওরগুলোতে মোট দুই লাখ ১৫ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে আবাদের টার্গেট নির্ধারিত রয়েছে। এ দিকে, কৃষকেরা বীজতলা ও মূল জমি তৈরি এবং আনুষঙ্গিক কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তবে তাদের সব পরিশ্রম ও কষ্ট ব্যর্থ হয়ে যাবে, যদি বাঁধের অভাবে কিংবা বাঁধের ত্রুটির কারণে তারা ক্ষেতের ফসল শেষ পর্যন্ত ঘরে তুলতে না পারেন। হাওরে ফসল রক্ষার স্বার্থে বাঁধ নির্মাণকাজ ১৫ ডিসেম্বরে শুরু করে ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা; কিন্তু এবারের মতো অতীতেও দেখা গেছে, এ কাজে বিলম্ব করা হয়েছে। কাজ শুরু করতে বিলম্ব ঘটলে শেষও হবে দেরিতে। এতে বিপুল পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয়ের সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। বাঁধের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বা পিআইসি গত ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই গঠন করার কথা ছিল। তবে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যস্ততার দরুন তা করা যায়নি। সময়মতো বাঁধের কাজে হাত দেয়া গেলে বাঁধ মজবুত ও টেকসই করার সুযোগ থাকে বেশি। এবার হাওরের ফসল রক্ষার বাঁধ নির্মাণে হাতে নেয়া হয়েছে ৫৫৩টি প্রকল্প। এগুলোর জন্য ৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ২৩ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হচ্ছে। অপর দিকে, হাওরের সংশ্লিষ্ট আন্দোলনকারীরা প্রয়োজনীয় প্রকল্পে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের ওপর জোর দিয়েছেন।
হাওরাঞ্চলকে বলা যায় বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য, ধানের গোলা। কারণ, হাওরের নি¤œভূমিতে বছরে এক ফসল হলেও এর পরিমাণ বিপুল, যা দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদাও পূরণ করে থাকে। এ কারণে সেখানে টেকসই ও কার্যকর বাঁধের মাধ্যমে বন্যা রোধ করে ফসল উৎপাদন নির্বিঘœ করা জরুরি। নির্মাণে ত্রুটি থাকায় এবং প্রয়োজনীয় নজরদারি না থাকায় বাঁধ ভেঙে নিকট অতীতে হাওরে প্রচুর ফসলহানি এবং জনজীবনে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিল।
সবার প্রত্যাশা, বাঁধ নির্মাণের কাজ অবিলম্বে শুরু এবং যথাসময়ে শেষ করা হবে। তদুপরি, এ ব্যাপারে কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া চলবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা