লুটপাটের কারণে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সব ব্যাংক এখন ডুবতে বসেছে। একসময় রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সুনাম ছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সুশাসনের নজির হিসেবে তুলে ধরা হতো। এখন জনতা ব্যাংকের অবস্থা খুবই নাজুক। ব্যাংকটির সব সূচক এখন নিম্নমুখী। পুরনো খেলাপির চাপ, নতুন করে বিপুল অঙ্কের খেলাপি, প্রভিশন ঘাটতি এবং তারল্য সঙ্কটের কারণে ব্যাংকটিকে টাকা ধার করে চলতে হচ্ছে। এ ছাড়া, জুন শেষে বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের পাশাপাশি ব্যাংকটির লোকসানি শাখাও বেড়েছে। এ ধরনের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনাগত সমস্যার কারণে জনতা ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো নেতিবাচক রেকর্ড করছে।
দীর্ঘ দিন ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যক্ষ মদদে অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে। এত দিন চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতি গোপন অসুখের মতো। একসময় প্রকাশ পাবেই। এখন প্রকাশ হওয়ার বিপর্যয়ের চিত্র বেরিয়ে আসছে। গত জুন শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ৯ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২২ শতাংশ। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় জুন শেষে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়ে ব্যাংকটি।
জনতা ব্যাংকের লুটপাটের উদাহরণ হয়ে রয়েছে এই ব্যাংক থেকে ভুঁইফোড় দুই গ্রুপকে ঋণ দেয়ার ঘটনা। এনন টেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকটির ঋণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে অনিয়মের কারণে কিছু ঋণ খেলাপি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ক্রিসেন্ট গ্রুপের পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এর প্রায় পুরোটাই খেলাপি করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে যে সার্বক্ষণিক মনিটরিং দরকার, তা কখনো করা হয়নি। ফলে দুর্নীতির মাধ্যমে ইচ্ছেমতো ঋণ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এখন একসাথে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর ব্যাংকগুলোর ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাংক পরিচালনা করা এখন দুরূহ হয়ে পড়ছে।
জনতা ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বিপুল অঙ্কের খেলাপি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। কারণ, শীর্ষ খেলাপি থেকে ঋণ আদায় করতে পারছে না। অনেক েেত্র নিয়ম ভেঙে বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রভাবশালীদের ঋণ পুনঃনবায়ন করতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষমতাসীন রাজনীতির সমর্থনপুষ্ট এক অর্থনীতিবিদের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ থেকে এসব ঋণ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এ জন্য তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হয়নি। আমরা মনে করি, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সে সময় যারা ব্যাংকের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা