২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ জিলকদ ১৪৪৫
`

ইজতেমা ময়দানে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় মুসল্লিদের রাত্রিযাপন

ইজতেমা ময়দানে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় মুসল্লিদের রাত্রিযাপন - নয়া দিগন্ত

টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ১৬০ একর আয়তনের সুবিশাল প্যান্ডেলের কোথাও ঠাই নেই। লাখো মুসল্লির পদভারে ইজতেমা ময়দান এখন জনসমুদ্র। মূল প্যান্ডেল তথা ময়দানের কোথাও ঠাই না পেয়ে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভীড় আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ইজতেমা ময়দান ওএর পার্শ্ববর্তী এলাকায় মুসল্লিদেরকে কনকনে শীত উপেক্ষা করে রাস্তায় পাটি বিছিয়ে শুয়ে পড়তে দেখা দেছে এবং তখনো ইজতেমা অভিমুখী জনস্রোত অব্যাহত ছিল।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেড মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মুসল্লিদের খোলা আকাশের নিচে রেখে তিনি রাতে বাসায় ঘুমাতে যান না। বুধবার সারারাত রাস্তায় ছিলেন। রাতে নগরীর সড়ক মহাসড়কগুলো ঘুরে সর্বত্রই যানজট পেয়েছেন।

এদিকে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে পুলিশ থাকলেও রাতে মহাসড়কে যানজট নিরসনে কোন পুলিশ চোখে পড়েনি। বৃহস্পতিবারও দিনব্যাপী সর্বত্রই যানজট লেগে ছিল। মুসল্লিদের সুখ-দুঃখে শরিক হতে বৃহস্পতিবারও গাজীপুরের মেয়র ইজতেমা মাঠে রাত কাটিয়েছেন।

এদিকে ইজতেমা সড়কে নগর কর্তৃপক্ষের অত্যাধুনিক বাতি রাতের অন্ধকার ছাপিয়ে আলোকমালা ছড়াচ্ছিল। এসব সড়ক বাতির নিচে বিছানা বিছিয়ে মুসল্লিরা সারিবদ্ধভাবে শুয়ে রাত কাটাচ্ছিলেন। রাস্তার দুই পাশে মুসল্লিরা অবস্থান নেওয়ায় ধীরে ধীরে রাস্তা সংকোচিত হয়ে আসে। কোথাও কোথাও যানবাহন এমনকি হেঁটে চলাচল করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়।

ইজতেমা ময়দানের উত্তর পাশে টঙ্গী-আশুলিয়া বাইপাস (কামারপাড়া) সড়কের ফুটপাতে অবস্থান নেয়া তাবলীগ জামাতের সাথী মোক্তার হোসেনের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, তারা টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর থেকে এসেছেন। ইজতেমায় তাদের নির্ধারিত খিত্তায় জায়গা না পেয়ে ফুটপাতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। ইজতেমার ওয়াল ঘেঁষে এ ফুটপাতের ধারে পথচারীদের প্রশ্রাব জমে ছিল। তারা হাতে করে বালি এনে প্রশ্রাব ঢেকে ওপরে বিছানা করে বহু কষ্টে অবস্থান করছেন।

নওগাঁর বদরগাজী থানা থেকে আগত তাবলীগ জামাতের সাথী বৃদ্ধ খলিলুর রহমান জানান, তাদের ১৯ জনের একটি জামাত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ইজতেমা ময়দানে এসে পৌছান। তাদের এলাকার জন্য ময়দানের ৩৪ নম্বর খিত্তার ১৭ নম্বর খুঁটি নির্ধরিত ছিল। কিন্তু তারা নির্ধারিত ওই স্থানে গিয়ে বসা বা শুয়া তো দূরের কথা দাঁড়ানোর জায়গাও পাননি। অবশেষে তারা সড়কের ফুটপাতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আরো পরে আসলে ফুটপাতেও ঠাই হতো না বলে তিনি জানান। ফুটপাতে তারা যেখানে অবস্থান করছেন এর পেছনেই ইজতেমার ১০ নম্বর তিন তলা টয়লেট ভবন। টয়লেটের দুর্গদ্ধ সহ্য করেই তাদেরকে বহু কষ্টে ফুটপাতে অবস্থান করতে হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থেকে আসা সুলতান উদ্দিন জানান, তাদের এলাকা থেকে ৬৫ জনের একটি জামাত বুধবার রাত ১০টায় ইজতেমায় আসে। নির্ধারিত খিত্তায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় অবশেষে তারা ফুটপাতে তাবু বিছিয়ে অবস্থান করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement