কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ৯৫ বছরের বৃদ্ধা এক মুমূর্ষ মায়ের শেষ ইচ্ছার কথা জানান, যেন মৃত্যুর আগে তার বাক-প্রতিবন্ধী ছেলেকে একবার দেখে যেতে পারেন।
জানা যায়, উপজেলার আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব নবী হোসেনকে একটি গায়েবি মামলায় গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার জামাইল গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে হোসেনপুর থানা পুলিশ। এর পর থেকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছেন তিনি। ৪৫ বছর বয়সী নবী হোসেন বাকপ্রতিবন্ধী।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে জেলে থাকায় অসুস্থ মায়ের দেখভাল করার মত সংসারে কেউ নেই। ৯৫ বছরের বৃদ্ধ ও গুরুতর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার ডাক্তারি কাগজপত্র দেখিয়ে মানবিক জামিনের আবেদন করলেও বরাবরই নাকচ হচ্ছে। ছেলের অবর্তমানে অসুস্থ মা রহিমা খাতুন বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। কখনো একটু ভালো বোধ করলেই ছেলেকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন।
সোমবার সকালে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শয্যাশায়ী শাশুরির সেবা করছেন নবী হোসেনের এর স্ত্রী ফারজানা আক্তার। তিনি জানান, সংসারে তাদের ৭ ও ৩ বছর বয়সী দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া নাইমাতুল ফালা নিসা বাবা কাছে নেই সেটা বুঝলেও ৩ বছরের জান্নাতুল ফালা সাবা বাবাকে খোঁজে সর্বক্ষণ।
এক প্রশ্নের জবাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নবী হোসেনের স্ত্রী বলেন, আমার বাক-প্রতিবন্ধী স্বামীকে বিনা কারণে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে পুলিশ মিথ্যা মামলায় জেল খাটাচ্ছে। তিনি এ সময় তার স্বামীর মুক্তিসহ ন্যায় বিচার দাবি করেন। এ ব্যাপারে ওই মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম জুয়েল জানান, নবী হোসেন বিএনপি কর্মী হওয়াই তার দোষ। তাকে ২০১৭ সালের হাসপাতাল চৌরাস্তায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের একটি মামলার আসামী দেখিয়ে জেলে আটক রাখা হয়েছে। হোসেনপুরে-কিশোরগঞ্জে কোন নাশকতার মামলা এমনকি কোন রাজনৈতিক হানাহানির মামলা না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ আওয়ামী লীগের আসামীদের গ্রেপ্তার না করে নবী হোসেনের মত নিরীহ বিএনপি কর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা