১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


সোনারগাঁওয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর প্রচারণায় হামলা ও হয়রানির অভিযোগ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের ঐক্যফন্টের মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা ও হামলাসহ নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মেঘনাঘাট প্রতাপেরচর এলাকায় প্রার্থীর নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী ৭ দফা দাবি করেন প্রার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে মান্নান অভিযোগ করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও লাঙ্গল প্রতীকের মহাজোট প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার কর্মী-সমর্থকরা তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বাধা প্রদান করে আসছে। কয়েক দফায় হামলা করে অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করেছে।

গত সোমবারও পুলিশের ছত্রছায়ায় মহাজোট প্রার্থীর কর্মীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার ২০ জন কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর পাশাপাশি থানা পুলিশও গায়েবী মিথ্যা মামলা দিয়ে শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার ও অন্যান্যদের বাড়িঘরে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে। এ অবস্থায় তিনি নেতা-কর্মী সহ নিজের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন।

তিনি জানান, জেলা রিটার্টিং কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কমিশন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে এসব ব্যাপারে অভিযোগ করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। এছাড়া বিগত উপজেলা ও ইইপি পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্র দখলসহ জাল ভোট প্রদানে সহায়তাকারী দুই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে এবারও বহাল রেখে নির্বাচনকে ঝুঁকিপূর্ণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আজহারুল ইসলাম মান্নান।

তিনি মনে করেন এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভোটাররা ভোট প্রদানে বাধাগ্রস্ত হবেন। তিনি হামলা মামলা বন্ধসহ ৭ দফা দাবী তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সিনিয়ন সহ সভাপতি শাহজাহান মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রফিক, কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজী সেলিম হক রুমি, সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম, সোনারগাঁও উপজেলা তাঁতী দলের সভাপতি আমির হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, সোনারগাঁও পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুর রাহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আজহারুল ইসলাম মান্নান অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের নির্বাচনী এলাকায় ৮০টির বেশি ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা, বিতর্কিত দুই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা, প্রচার প্রচারণায় বাধা ও হামলা রোধ করা, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধ করা, নির্বাচনে ভোটারদের ভোট প্রদানের পরিবেশ সৃষ্টি করা, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা এবং সরকার ঘোষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য দাবী।

শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি দাবী করেন, সোনারগাঁওয়ের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন, দুইজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০১৫ সালে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নুনেরটেক কেন্দ্রে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইয়াছিনুল হাবীব সরাসরি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট দিয়েছেন।

এছাড়াও সোনারগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী আলী হায়দার খাঁনও একই কান্ড ঘটিয়েছেন চরকিশোরগঞ্জ কেন্দ্রে। এ দুজন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার দাবি করেন। বিএনপি প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় বাঁধা, হামলা, নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছে মহাজোট প্রার্থীর নেতাকর্মীরা। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা, হয়রানী করে আসছে।

এ হয়রানী তিনি বন্ধের দাবি করেন। নির্বাচনে ভোটারদের তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ সৃৃষ্টির জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করেন। সরকার ঘোষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এছাড়ও নির্বাচনের রিটানিং, সহকারী রির্টানিং, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা দাবি করেন।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, প্রতিদিনই তার কর্মী সমর্থকদের উপর মহাজোট প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার লোকজন হামলা করে এ পর্যন্ত শতাধিক নেতাকর্মী আহত করেছেন। তিনি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement