২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঢাকা-১৯

অফিস ভাংচুর ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেওয়ান মোঃ সালাউদ্দিনের সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা-১৯ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ডাঃ দেওয়ান মোঃ সালাউদ্দিন - নয়া দিগন্ত

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাভার ও আশুলিয়ায় বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন, নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা প্রদান, নির্বাচনী অফিস ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে সমংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা-১৯ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাভার ও আশুলিয়ার দুই থানার পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপির নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা প্রদান করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ধানের শীষের নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা, বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান, গভীর রাতে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও তছনছ করা হয়েছে। অন্যদিকে ওয়ারেন্ট ও মামলা ছাড়াই বিএনপির ১৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাভারের নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা-১৯ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৫ ডিসেম্বর হতে আমার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৯ এ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপির নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা, দলীয় নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে ভয়ভীতি এবং হুমকি প্রদান, গভীর রাতে ধানের শীষের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর এবং তছনছ করা হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পরও এখনো কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি পুলিশ গত ৩/৪ দিনে দুই থানার (সাভার-আশুলিয়া) ১৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আটককৃতদের একজন ছাড়া কারো নামেই কোনো ওয়ারেন্ট নেই। এমনও দু’জন রয়েছেন যাদের নামে নতুন ও পুরাতন কোনো ধরনের মামলা নেই।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুইথানার ওসির সাথে কথা বলেও কোনো প্রতিকার পাননি। এসকল গ্রেফতারকৃতদের কোর্টে চালান করা হয়েছে এবং অনেককে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি অভিযোগ করেন, গত ৪/৫দিনের নির্বাচনী প্রচারনার প্রথম দিকে ১১ ডিসেম্বর পাথালিয়া ইউপি’র কুরগাঁও, চারিগ্রাম ও গেরুয়া বাজার এলাকায় ধানের শীষের লাগানো পোষ্টার ছিড়ে ফেলে সরকারদলীয়রা। একইদিন দুপুর ২টায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল লাঠিসোটা, রড, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ধামসোনা ইউপি’র গাজীরচট এলাকায় লাগানো ধানের শীষের সকল পোষ্টার ছিড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

১৫ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানার এসআই মোমিনুল দুপুর পৌনে ১টায় গাজীরচট বসুন্ধরাস্থ ধামসোনা বিএনপি নির্বাচনী কার্যালয় থেকে ১০ জনকে কোনো রকম ওয়ারেন্ট ছাড়াই আটক করে পেন্ডিং মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করে। গ্রেফতাকৃতরা হলেন- ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোখলেছুর রহমান খান ইলিয়াস শাহী, আশুলিয়া থানা বিএনপি যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ রানা, ধামসোনা ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আব্দুর রহমান (রহম আলী), একই ইউনিয়নের শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, বিএনপি সদস্য বিল্লাল হোসেন, ছাত্রনেতা সজল, সমীর, স্বেচ্ছাসেবকদলের ধামসোনা ইউপির যুগ্ম-সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল সুমন ও বিএনপি সমর্থক কবির হোসেন।

১৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ কর্মীরা রাত আনুমানিক পৌনে ১০টায় সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সবুজবাগ নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমানকে মারধর করে। একই রাত ৩টায় সাভার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের রাজাসন এলাকার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

১৭ ডিসেম্বর আশুলিয়ার ডেহুাবর নতুন পাড়ায় মহিলা কর্মীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যানের অনুসারীরা মহিলা কর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং তাদের সাহায্যকারী মধু ও নাসিরকে বেধড়ক মারধর করে। বর্তমানে তারা ওই এলাকার গণি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
১৭ ডিসেম্বর বিকেলে রাকিবুল ও হামিদুল সাভার ইউনিয়নে পোষ্টার লাগাতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী শিহাব ও জালালের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে তাদেরকে মারধর করে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান তাদের পিতা-মাতাকে ডেকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ না করার জন্য সতর্ক করে দেয়।
একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাভার থানার এসআই মামুন দেওসা থেকে ছাত্রদল নেতা রবিনকে আটক করে। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় ছাত্রদল নেতা দীন ইসলামকে সাভার পৌর এলাকার ৬নং কাতলাপুর থেকে সাভার থানার এসআই রুবেল আটক করে।

ওই ওয়ার্ডের বড়াইগ্রাম থেকে ছাত্রদল নেতা কবির হোসেনকে রাত সাড়ে ১০ টায় সাভার থানার এসআই রুবেল আটক করে। ১৭ ডিসেম্বর রাত ১১টায় আশুলিয়া থানার এসআই ফজিকুলের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের কোষাধ্যক্ষ জাহিদকে আটক করে। একই তারিখে ছাত্রদল নেতা শরীফ ও সুমনকে রাত আনুমানিক দেড়টায় আটক করে সাভার থানার এসআই এনামুল।

একইদিন ছাত্রদল নেতা সোহেল খন্দকারকে রাত ৩টায় নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। ওইদিন ভোর ৪টায় আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউপি যুবদল নেতা সেলিমকে আটক করে আশুলিয়া থানার এসআই নয়ন।

এছাড়াও সাভার ইউনিয়নের ধরেন্ডা, কাজীপাড়া, হাইপয়েন্ট ও কলমা এলাকায় লাগানো ধানের শীষের সকল পোস্টার আওয়ামী লীগ কর্মীরা ছিড়ে ফেলেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ১৯৯৬ সালে ও ২০০১ সালে এই আসন থেকে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। এবারের মতো অসমতল লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তিনি কখনো দেখেননি বলেও জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা-১৯ আসনের বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি সকল মিডিয়া প্রতিনিধিদের পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনে সকলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও আন্তরিক সহযোগিতাও তিনি প্রত্যাশা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২

সকল