কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নির্বাচনী কর্মীসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-যুবলীগ সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৬ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় ৫ থেকে ৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
এ ছাড়াও উপজেলা বিএনপির ভৈরব বাজারের ডাইলপট্টিস্থ অফিস, বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের ঠিকাদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসও ভাংচুর হয় বলে জানায় দলীয় সূত্র।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের চন্ডিবের মধ্যপাড়া এলাকায় নির্বাচনী কর্মী সভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও যুবলীগ সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
খবর পেয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরীর নেতত্বে একদল পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় ইট-পাটকেলের আঘাতে পুলিশের উপ-পরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরীসহ পুলিশ সদস্য আব্দুল হাকিম ও আব্দুর রহমান নামের ৩জন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুর করা হয় ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আক্তার হোসেনের একটি ওষুধের দোকানসহ ৪/৫টি বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। উভয় পক্ষের মারমূখি অবস্থানের কারণে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুজ্জামান। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে দাবী প্রশাসনের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: বাহালুল খান বাহার ৩ পুলিশ সদস্য আহতের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন জানান, সংঘর্ষেও খবর পাওয়া মাত্রই সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আনিসুজ্জামানকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: রফিকুল ইসলাম দাবী করেন, তারা ওই এলাকার একটি বাড়িতে নির্বাচনী উঠান বৈঠক করার সময় পৌর যুবলীগের কর্মীরা অতির্কিতে হামলা চালায়। এতে তিনিসহ ৪জন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ছাড়া দলের কর্মী-সমর্থকদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, ভৈরবে ঐতিহ্যবাহী রেঁস্তোরা ভেনিস-বাংলায় হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর ও লুট-পাট করা হয়। ভাংচুর করা হয় ৪টি অটোরিক্সা, ভৈরব বাজারস্থ দলীয় অফিস, তার নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অফিস এবং দলীয় সমর্থক মো: ফেরদৌস মিয়ার মসলার দোকান। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর যুবলীগের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন ইমন জানান, তিনি তার কয়েক নেতা-কর্মী নিয়ে ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন ওইপথে। তাদেরকে দেখামাত্রই বিএনপি সমর্থকরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে তিনি আহত হয়েছেন।
বিনাউস্কানীতে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ চালিয়ে আহত করা এবং দলীয় কার্যালয় ভাংচুরসহ কর্মী-সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ-৬, ভৈরব-কুলিয়ারচর আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মো: শরীফুল আলম বলেন, নির্বাচনী পরিবেশকে অশান্ত করে ফাঁয়দা লুটতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ কামনা করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা