নিকলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ বছর ধরে বন্ধ প্রসূতি সেবা!

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ বছর যাবত বন্ধ রয়েছে প্রসূতিদের সিজারিংসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা। হাসপাতালটির ইউওসি (ইমারজেন্সি অপটিক্যাল কেয়ার) ভবন এখন ব্যবহৃত হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যালয় হিসেবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রসূতিদের প্রসবকালীন স্বাস্থ্যসেবা (সিজারিয়ান অপারেশন) কার্যক্রমের জন্য হাসপাতাল চত্বরে ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে দ্বিতল আধুনিক ইউওসি ভবন নির্মিত হয়। একই বছর ইউওসি নতুন ভবনটি চালু হয়। ২০০৮ সালে ১০ আগস্ট থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচজন প্রসূতিকে সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা একযোগে অন্যত্র বদলি হওয়ায় সিজারিয়ান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১ সাল থেকে এই ভবনটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কমকর্তার চেম্বারসহ প্রশাসনিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

দীর্ঘদিন যাবত ডাক্তার সংকট থাকায় ১০ বছর যাবত সিজারিয়ান কার্যক্রমসহ প্রসূতিদের প্রসবকালীন স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতিরা স্বল্প খরচে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না। এ সেবা পেতে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোই প্রসূতিদের একমাত্র ভরসা। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক, স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোতে কমিশন বাণিজ্য জমে উঠেছে। বিভিন্ন পর্যায়ে কমিশনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বেসরকারি চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার-পরিকল্পনা কর্মী, পল্লী চিকিৎসক, ফার্মেসির ওষুধ বিক্রেতা, ধাত্রী, বেসরকারি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানের রিসিপশনিস্ট ও স্থানীয় পেশাদার মেডিকেল দালাল। ফলে নিম্নমানের বেসরকারি চিকিৎসা সেবায় আর্থিক ও স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন প্রসূতিরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে ডিসেম্বর মাসে ডা. মোজাম্মেল হোসেন এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও প্রসূতি শল্যচিকিৎসক ডা. সেলিনা দু’জনই বদলি হয়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই এ পদ শূন্য থাকায় প্রসূতি সিজারিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নষ্ট হচ্ছে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা: আস আদ দীন মাহমুদ এ প্রতিনিধিকে জানান, সার্জনের শূন্য পদে লোকবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ সমস্যা সমাধান হলেই প্রসূতিদের সিজারিয়ান কার্যক্রম আবারো শুরু হবে। ইউওসি ভবনটি খালি থাকায় আপাতত হাসপাতালের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।