২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১ ওভারে ৩৭ রান

ছক্কা হাঁকাচ্ছেন জাজাই (বামে), আইডল গেইলের সাথে জাজাই - নয়া দিগন্ত

স্বপ্নটা যে এতো সহজে বাস্তব হয়ে যাবে তা হয়ত ভাবেননি আফগানিস্তানের তরুণ ব্যাটসম্যান হযরতুল্লাহ জাজাই। প্রিয় খেলোয়াড়ের সামনেই ব্যাটে ছক্কা ঝড় তুললেন তিনি। এক ওভারে হাঁকিয়ে ফেললেন একে একে ছয়টি ছক্কা! আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগের রোববারের ম্যাচেই ঘটেছে এ ঘটনা।

জাজাইয়ের আইডল ছিলেন ক্যারিবীয় দানব ক্রিস গেইল। তার মতোই চার-ছক্কার ঝড় তুলতে চাইতেন তিনি। এজন্য কঠোর পরিশ্রম ও করে গেছেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণ। সেই সাধনার ফল পেলেন প্রিয় ক্রিকেটারের সামনেই।

কাল গেইলের বালখ লিজেন্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল জাজাইয়ের দল কাবুল জাওনান। প্রথম ওভারেই তাণ্ডব চালিয়েছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন ৩৭ রান। ৬ ছক্কার ওভারটিতে একটি ওয়াইডও ছিল। পুরো নাস্তানাবুদ হয়েছেন বোলার আবদুল্লাহ মাজারি।

ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রেকর্ড গড়েছেন জাজাই। গেইল আর যুবরাজের মতো ক্রিকেটারদের সাথে নাম লেখা হয়ে গেছে তার। যারা এক ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকিয়েছেন।

ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১২ বলেই হাফসেঞ্চুরি করেছেন জাজাই। আর ১৭ বলে ৬২ রান করেই মাঠ ছেড়েছেন এই 'আফগান গেইল'। এর মধ্যে ৫৮ রানই এসেছে তার চার-ছক্কা থেকে।

তবে ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি তার দল। গেইলদের কাছে ২১ রানে হেরেছে তারা। তবে ম্যাচ শেষে প্রিয় ক্রিকেটারের সাথে হাসিমুখে  ছবি তুলতে ভুলেননি জাজাই।

রেকর্ড গড়া ইনিংস নিয়ে জাজাই বলেন, 'আমার জন্য এটি অবশ্যই গর্বের। কারণ এই একটি ইনিংসের মধ্য দিয়ে অনেকগুলো বড় বড় নামের সাথে আমার নাম লেখা হয়ে গেছে। তারা সত্যিকারেই এই খেলাটির কিংবদন্তি। আমি সবার আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে চাই যে, তিনি আমাকে ১২ বলে ফিফটি করার সুযোগ দিয়েছেন।'

 

এমন রেকর্ড চাননি আফ্রিদি

অনেক রেকর্ড তার ঝুলিতে। কিন্তু এবার এমন রেকর্ডের মালিক হলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি- যে রেকর্ড আদতে কেউ চায় না। গত শনিবার আফগান প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে এই রেকর্ডের মালিক হলেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক। পাকতিয়া প্যানথার্সের হয়ে মাঠে নেমে ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার ফিরেছেন কোন রান না করেই।

দর্শকরা মাঠে যায় তার ব্যাট থেকে ছক্কার ফুলঝুঁড়ি দেখতে। ছক্কা হাকানোর কারণে তার নামই হয়ে গেছে বুম বুম আফ্রিদি। কিন্তু কখনো কখনো আফ্রিদি নিরাশ করেন তার দর্শকদের। হতাশ করেন দলকে। আর যে কারণে ক্রিকেটে শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডেও রয়েছে তার নাম।

শনিবার আফগান লিগে শূন্য রানে আউট হওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের সব শীর্ষস্থানীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির গড়লেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। এর আগে তিনি ভারতের আইপিএল, অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ, শ্রীলঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট ও পাকিস্তান সুপার লিগে কোন না কোন ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন। এছাড়া আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শূন্য রানে সাজঘরে ফেরার রেকর্ড রয়েছে বুমবুম আফ্রিদির।

হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান হওয়ার কারণে যে কোন সময় ম্যাচের পরিস্থিতি কিংবা বোলারের দিকে না চেয়েই ব্যাট চালান আফ্রিদি। ম্যাচের শেষ দিকে ব্যাট করার কারণে কখনো কখনো পরিস্থিতিও দাবি করে সপাটে ব্যাট চালানোর। আর এ কারণেই তার ঝুলিতে যেভাবে ছক্কার রেকর্ড রয়েছে সেই একই ভাবে রয়েছে শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডও।

অবশ্য আফ্রিদি সান্তনা খুঁজে পেতেই পারেন একটা জায়গায়। শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের অনেকেই আছেন তার চেয়ে বেশি ডাক নিয়ে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আফ্রিদির শূন্য ৮টি, তার ওপরে আছেন আরো পাঁচ জন। সর্বোচ্চ ১০টি ডাক নিয়ে তালিকার শীর্ষে শ্রীলঙ্কান সাবেক ওপেনার তিলকারত্নে দিলশান।

আর স্বীকৃত ঘরোয়া কিংবা ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে আফ্রিদির ডাক বা শূন্য আছে ২১টি। এই তালিকায় এমনকি ক্রিস গেইলও(২৩) আছেন আফ্রিদির ওপরে। আফ্রিদির অবস্থান ১০ নম্বরে। তার আগে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ওপেনার হার্শেল গিবস, লঙ্কান তিলকারত্নে দিলশান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন স্মিথের মতো ব্যাটসম্যান। সবার ওপরে ২৭টি ডাক নিয়ে অবস্থান স্মিথের।

আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হওয়ার তালিকায় সবার ওপরে আছেন লঙ্কান সুপারস্টার সনথ জয়সুরিয়া। ব্যাটসম্যান হিসেবে জয়সুরিয়ার অবস্থান আফ্রিদির চেয়ে অনেক ওপরে, সেই জয়সুরিয়া তার চেয়ে বেশি ‘শূন্য পেয়েছেন’। ওয়ানডেতে জয়সুরিয়ার শূন্য ৩৪টি, আর আফ্রিদির ৩০টি।

২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে ছয়বার কোনো রান না করেই ফিরেছেন আফ্রিদি। অর্থাৎ টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফ্রিদির ‘ডাক’সংখ্যা ৪৪টি। আর সব ফরম্যাট মিলিয়ে শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শীর্ষে লঙ্কান স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। তার ডাক সংখ্যা ৫৯টি। দুইয়ে কোর্টনি ওয়ালশ ৫৪টি ও তিনে সনথ জয়সুরিয়া ৫৩টি ডাক নিয়ে। শহীদ আফ্রিদির অবস্থান ১০ নম্বরে, তার ডাক সংখ্যা ৪৪টি।

আফগান প্রিমিয়ার লিগে শনিবারের ম্যাচে ব্যাট হাতে ভালো করতে না পারলেও বল হাতে কিন্তু দারুণ পারফর্ম করেছেন আফ্রিদি। পাকতিয়া প্যানথার্সের ৯ রানের জয়ে আফ্রিদির বোলিং ফিগার ৪-০-১৩-১।


আরো সংবাদ



premium cement