২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হোয়াইটওয়াশ নিয়ে যা বললেন সাকিব

পারফরম্যান্সে হতাশ সাকিব আল হাসান - ফাইল ছবি

আফগানিস্তানের সাথে সান্ত্বনার জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেও পারল না বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাদের। পুরো সিরিজ জুড়েই বাংলাদেশ তেমন চোখে পড়ার মতো পারফরম্যান্স করেছে খুবই কম। তাই তো ম্যাচ শেষে অধিনায়কের কথায় ফুটে উঠলো হতাশা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আগের দুই ম্যাচের চেয়ে আমরা ভালো খেলেছি। তবে সিরিজটা আমরা যেভাবে খেলেছি, অবশ্যই খুবই হতাশার। আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে নামতে হবে আমাদের।’

গতকালের ম্যাচ নিয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘তাদেরকে অল্প রানে আটকে রাখতে পেরেছিলাম। বিশ্বাস ছিল, এই রান তাড়া করার মতো ব্যাটিং আমাদের আছে। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে পারিনি। আজকে অনেক কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু মাঝের কিছু ওভারে মাত্র ৩-৪ রান করে হয়েছে। এটার মূল্য দিতে হয়েছে।’

মিডল অর্ডারে মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং অবশ্য প্রশংসা পেয়েছে অধিনায়কের। তিনি বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক ভালো খেলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ করতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমনটি হতেই পারে। ’

কন্ডিশন নিয়েও সন্তুষ্টু ছিলেন না বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। দেরাদুনের কন্ডিশন বাংলাদেশের মতো নয় যেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিলো বলে মনে করেন। আর উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আফগান স্পিনারা যে সুবিধা নিয়েছে সেটিকে কৃতিত্ব দিতেও ভুল করলেন না। আর সবগুলো সেক্টরের উন্নতির তাগিদ অনুভব করছেন বলেই জানালেন।

দারুণ লড়াইয়ের পরও হোয়াইটওয়াশ লজ্জা

দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেও তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ১ রানে পরাজিত হয়ে হোয়াটওয়াশ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার ভারতের দেরাদুনে শেষ ম্যাচে আফগানদের দেয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪৪ রানে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। এর ফলে ক্রিকেটের নতুন উদীয়মান শক্তি আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ লজ্জা বরণ করতে হলো বাংলাদেশকে।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। দলীয় ১৬ রানে ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরে যাওয়ার পর ৩২ ‍ও ৩৫ রানে রান আউটের শিকার হন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। এর কিছুক্ষণ পর ফিরে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। দলীয় রান তখন ৫৩।

এরপর মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পঞ্চম উইকেটের জুটি লড়াইয়ে ফেরায় বাংলাদেশকে। দুজনে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন। মুশফিক কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাটিং করলেও মাহমুদুল্লাহর ব্যাট ছিলো চড়াও। তবে রশিদ খানের করা ১৮তম ওভারে মাত্র ৩ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এখানে পিছিয়ে যায় টাইগার বাহিনী।

শেষ দুই ওভারে দরকার ছিলো ৩০ রান। করিম জানাতের করা ১৯তম ওভারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন 
মুশফিক। টানা ৫টি বাউন্ডারি আদায় করে নেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ বলে একটি সিঙ্গেল নিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ২১ রান। ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। 

শেষ ওভারে দরকার ছিলো ৯ রান। বল করতে আসে আফগানিস্তানের সেরা বোলার লেগ স্পিনার রশিদ খান। রশিদের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান মুশফিক। ৩৭ বলে ৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি শেষ হয় ডিপ স্কয়ার লেগে নাজিবুল্লাহ জাদরানের ক্যাচে।

৫ বলে দরকার ৮ রান। মাহমুদুল্লাহ এক রান নেয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান আরিফুল পরের বলে নেন দুই রান। এর পরের বলে আরেকটি সিঙ্গেল নিলে সমীকরণ দাড়ায় ২ বলে ৫ রানের। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ বলে দরকার চার। আরিফুলের উচু করে মারা শট বাউন্ডারি দারুণ ফিল্ডিং করে ম্যাচ বাঁচান আফগান ফিল্ডার শফিক। দৌড়ে দুই রান নেন ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশ হারে এক রানে। 
৩৮ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে এক উইকেট নেয়া রশিদ খান এই ম্যাচেও আফগানদের জয়ের নায়ক।

শেষ দুই ওভারে ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ

আগের দুই ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে আফগানরা। তাই এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। দেরাদুনে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ১৪৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ১৪৫ রান। 

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লের প্রথম ছয় ওভারে দারুণ দাপুটে ব্যাটিং করে আফগানিস্তান। দলটির দুই ওপেনার পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে তোলেন ৪৩ রান। এসময় কোন উইকেট নিতে পারেনি বাংলাদেশী বোলাররা। মারকুটে ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ছিলেন আগ্রাসী। প্রথম ওভারেই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে ১৮ রান নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন শাহজাদ। এর পরের তিনটি ওভারে নাজমুল ইসলাম, সাকিব আল হাসান ও আবু জায়েদ কিপটে বোলিং করলেও রানে গতি পুরোপুরি থামানো যায়নি।

তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই মারকুটে ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে ফিরিয়েছেন স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে শাহজাদকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার। ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় দলীয় সর্বেোচ্চ ২৬ রান করেছেন তিনি।

আর নবম ওভারে আরেক ওপেনার ওসমান গনিকে ফিরিয়েছেন পেসার আবু জায়েদ। উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের কাছে ক্যাচ দিয়েছেন ওসমান। ২৬ বলে ১৯ রান করেছেন তিনি।

১০ ওভার শেষে আফগানিস্তান দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ৬৪ রান। আর শেষ ১০ ওভারে তারা তুলেছে ৮১ রান। ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি ছিলো তৃতীয় উইকেটে আসগর স্টানিকজাই ও সামিউল্লাহ শেরওয়ানির ৩৬ রানের জুটি।

এক সময় বড় স্কোর চোখ রাঙালেও শেষ দুই ওভারে দারুণ বোলিং করেছেন বাংলাদেশর দুই ওপেনার। ১৮ ওভার শেষে আফগানদের রান ছিলো ৪ উইকেটে ১৩৫। সেখান থেকে ১৬৫-৭০ রান হওয়াটা স্বাভাবিক ছিলো। তবে আফগানদের দেড়শোর নিচে আটকে রাখার কৃতিত্ব দুই স্পিনারের। 

১৯তম ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৭ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন নাজিবুল্লাহ জাদরানের উইকেট। আর ২০তম ওভারে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে সফল বোলার নাজমুল ইসলাম অপু মাত্র ৩ রান খরচ করে নিয়েছেন একটি উইকেট। এই দুটি ওভারই ম্যাচে ফিরতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত আফগানরা থেমেছে ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে। 

চার ওভার বোলিং করে ১৮ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছে নাজমুল ইসলাম অপু। এছাড়া আবু জায়েদ ২৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন। সাকিব আল হাসান ১৬ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না

সকল