০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পুনঃতফসিলের পর প্রধান বিরোধী জোট না মানার ঘোষণা

বার্ষিক ও ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ নিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ

-

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ নিয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়ায় দোদুল্যমান অবস্থায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ৭ দিন পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হলে পরদিন পহেলা জানুয়ারি সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বই উৎসব’ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা প্রশ্ন করেছেন, ভোটের পরদিন ‘বই উৎসব’ করা যাবে কি না ?
গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার পুনঃতফসিল ঘোষণা করলেও, প্রধান বিরোধী দলীয় জোট ‘ঐক্যফ্রন্ট’ তা মেনে নেয়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট তফসিল এক মাস পেছানোর দাবিতেই অনড় থাকবে। দাবি মানা না হলে নিজেরা বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তিনি আরো বলেন, সরকার চাইলে আলোচনা করে পুনঃতফসিল দেয়া সম্ভব।
ওই বৈঠক শেষে আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের একদিন পরেই ইংরেজি নববর্ষ। ওই সময় দেশে কোনো কূটনীতিক ও বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকবেন না। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্বাচন বানচাল করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের তারিখ যদি আবার পিছিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষাবর্ষ শেষে বার্ষিক পরীক্ষা এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ নিয়ে আবারো সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা করছেন বলে জানান রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক আবদুল মান্নান গতকাল সন্ধ্যায় নয়া দিগন্তকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বার্ষিক পরীক্ষা আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। সে অনুসারে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। তাতে নতুন করে কোনো পরিবর্তন করার কথা আমরা ভাবছি না। তবে সরকারি স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা কখন নেয়া হবে, তা নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। পুনঃতফসিল ঘোষণার পর আরো কিছু দিন সময় পাওয়া গেল। এখন আমরা আগের ভাবনার আলোকে আগামী ১৭, ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে অবস্থিত সরকারি সব স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথাই ভাবছি। তবে সেটি নিশ্চিত করতে হবে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে। বেসরকারি স্কুলগুলো তাদের পছন্দ সুবিধা মতোই ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অপর দিকে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে আমরা এখন আর ভাবছি না। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করব। ভর্তি পরীক্ষা বিগত বছরগুলোতে একদিন বিরতি দিয়ে নেয়া হতো। এবার ১০ ও ১১ ডিসেম্বর প্রথম শ্রেণীর ভর্তির লটারি হবে আর ১২, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর, অন্যান্য শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। তিনি যোগ করেন, কোনো পক্ষ নির্বাচনের তফসিল মেনে না নিলে বা আন্দোলনের যে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবেই সব কিছু শেষ হোক। পহেলা জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বলেন, নির্বাচনের পরের দিন কী করে ‘বই উৎসব’ করা হবে, তা এখনো ভাবিনি। দেখা যাক কী হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement