০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চাঁদা না দেয়ায় ক্রসফায়ারের হুমকি, অতঃপর যা করল পুলিশ

চাঁদা না দেয়ায় ক্রসফায়ারের হুমকি, অতঃপর যা করল পুলিশ
চাঁদা না দেয়ায় ক্রসফায়ারের হুমকি, অতঃপর যা করল পুলিশ - ফাইল ছবি

ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে দাবিকৃত দুই লাখ টাকা না দেয়ায় বরিশাল-১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর বন্দরের এক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর গ্রামে।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এসআই আলমগীর হোসেন স্থানীয় মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী শামিম হোসেন সিকদারের বিরুদ্ধে বাবুগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। রোববার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আদালতে বসে ভূক্তভোগী শিকারপুর বন্দরের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে শামিম হোসেন শিকদার জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে ইদলকাঠী গ্রামের তার বাড়ি থেকে পাশ্ববর্তী নতুনহাট এলাকায় মাহফিল শোনার জন্য তিনি বের হন। ইতোমধ্যে বাহেরচর গ্রামের তার (শামীমের) পূর্বপরিচিত মুক্তিযোদ্ধা সালাম পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে তার বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেল নিয়ে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে ফাঁকা রাস্তায় বসে থাকা অপরিচিত দুইজন লোক তার (শামীম) মোটর সাইকেলের পথরোধ করে।

এরইমধ্যে অন্য একজন মোটর সাইকেলের ট্যাঙ্কির উপর পলিথিনে মোড়ানো একটি পোটলা রেখে সরে যাওয়ার পর পরই ওই দুইজন ব্যক্তি পলিথিনে মোড়ানো পোটলাটি তার (শামীম) পকেটে দিয়ে অস্ত্র বের করে পুলিশ পরিচয় দিয়ে কোন কথা বলতে নিষেধ করে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার একপর্যায়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দুইলাখ টাকা দাবী করা হয়। এমনকি দাবীকৃত টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়া হয়। তিনি (শামীম) টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে মারধর করা হয়।

মামলার স্থানীয় স্বাক্ষী রিয়াজ বেপারী জানান, ঘটনাস্থল অতিক্রমকালে পুলিশ সদস্যরা তাকে ডেকে নিয়ে শামীমের পকেট থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে দেখায় এবং স্বাক্ষী হিসেবে তাকে অন্তর্ভূক্ত করে। রিয়াজ বেপারী আরও জানান, পুলিশ সদস্যরা তাকে স্বাক্ষী করায় ভয় পেয়ে সে তার প্রতিবেশী শওকত বেপারীকে ডেকে আনলে শওকত বেপারীকেও স্বাক্ষী করা হয়।

স্বাক্ষী শওকত বেপারী জানান, শামিম সিকদার আমার পূর্বপরিচিত। তার বিরুদ্ধে এ যাবত কোন মাদক সেবন কিংবা বিক্রির ঘটনা শুনতে পাইনি।

শামীম সিকদারের বড় ভাই কালাম সিকদার অভিযোগ করে বলেন, টাকার জন্য তার নিরপরাধ ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কতিপয় সদস্যরা। তিনি দায়ী এপিবিএন সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হেমায়েত মুন্সী ও সাধারণ সম্পাদক করিম খান জানান, শামীম শিকদার দীর্ঘদিন যাবত বাজারে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি কিংবা সেবনের কোন অভিযোগ নেই।

অভিযোগের বিষয়ে মামলার বাদী এপিবিএনের এসআই আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন।


আরো সংবাদ



premium cement