২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সঙ্কটে চিকিৎসা বেহাল

-

জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী সঙ্কটে সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। সরেজমিন জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ১০ বছর আগে ৫১ শয্যায় উন্নীত করার পর স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করার কথা থাকলেও দিন দিন রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষসহ গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও ইউনিয়ন এবং কানাইঘাট উপজেলার বড় চতুল ইউনিয়নের চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫১ শয্যায় হাসপাতাল উন্নীত করা হলে ৩১ শয্যার স্টাফ দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম। ৩১ শয্যার হাসপাতালে ১০২ জন স্টাফের বিপরীতে ৩৯ জনের পদ রয়েছে শূন্য। তিন উপজেলার মধ্যবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হওয়ায় এবং এশিয়ান হাইওয়ে রোড থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার কারণে হাসপাতালটি জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেসব পদ শূন্য রয়েছে সেগুলো হলো জু: ক: গাইনি অব্স ১টি, জু: ক: অ্যানেস: ১টি, ডেন্টাল সার্জন ১টি, মেডিক্যাল অফিসার ২টি পদে ১টি, মেডিক্যাল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক) ১টি পদ, সহ: সার্জন (নবসৃষ্ট) ৫টি পদের ২টি, চিকিৎসক সহকারী ২টি পদের ১টি, চিকিৎসক সহকারী (নবসৃষ্ট) ৫টি পদ, ফার্মাসিস্ট ২টি, মেডিক্যাল টেক: (ল্যাব) ২টি পদ, মেডিক্যাল টেক: (রেডিওগ্রাফি) ১টি, মেডিক্যাল টেক:(ডেন্টাল) ১টি, সহকারী নার্স ১টি, ক্যাশিয়ার ১টি, স্টোরকিপার ১টি, অফিস সহকারী ৩টি পদে ১টি, স্বাস্থ্য সহকারী ২০টি পদে ৭টি, জুনিয়র মেকানিক ১টি, অফিস সহায়ক ৪টি পদের ৩টি, ওয়ার্ডবয় ৩টি পদে ৩ জন থাকলেও ২ জন ডেপুটেশনে অন্যত্র থাকায় ২টি, আয়া ২টি পদের ১টি, নিরাপত্তা প্রহরী ২টি পদের ১টি, বাবুর্চি ২টি পদের ১টি, গার্ডেনার ১টি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ৫টি পদের ১টি শূন্য রয়েছে। উন্নতমানের সার্জারি অপারেশন থিয়েটার, উন্নতমানের এক্স-রে, ইসিজি, আরবিএ মেশিন যন্ত্রপাতি থাকার পরও চিকিৎসক ও স্টাফ সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী। অপর দিকে জৈন্তাপুর উপজেলা নতুন অ্যাম্বুলেন্স গত ১০দিন যাবত যান্ত্রিক সমস্যা দেখিয়ে বিকল রয়েছে, আধুনিক জেনারেটর থাকার পরও ২ বছর যাবত বিকল, ঔষধি বাগান থাকলেও পরির্চযার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে এম এল এস সুমনের নামে বাসা বরাদ্দ নিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন ছত্তার মিয়া, শহিদুল ইসলাম মোল্লা ও ইসমাইল হোসেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আমিনুল হক সরকার বিধি মোতাবেক ১টি কোয়ার্টার্স ব্যবহার করার কথা থাকলেও তিনি নিজেই প্রথম তলার কোয়ার্টার্সে চেম্বার এবং দ্বিতীয় তলার কোয়ার্টার্স হিসেবে ব্যবহার করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আমিনুল হক সরকার প্রতিবেদককে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর ২ বছর যাবত নষ্ট। এ ছাড়া এক্স-রে মেশিন পুরনো হওয়ায় কাজের অনুপযোগী, ইসিজি মেশিন এখনও ইনস্টল করা হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত সময়ের মধ্যে সচল করা হবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ১০ বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনটি রোগীদের সেবায় কাজে লাগাছে না, তাই দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং স্টাফ সঙ্কট পূরণসহ যাবতীয় সমস্যা উত্তরণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে সমস্যা উত্তরণের বিষয়টি অবহিত করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement