২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুনামগঞ্জে শতবর্ষ প্রাচীন সম্প্রীতির কুস্তিখেলা

তাহিরপুরে সম্প্রীতির কুস্তিখেলার উত্তেজনাকর একটি মুহূর্ত : নয়া দিগন্ত -

হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলায় শতবর্ষ প্রাচীন কুস্তিখেলা এখনো জনপ্রিয়। কুস্তি লড়াই উপলক্ষ মাত্র, লড়াই ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি। জেলার সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলায় কুস্তিখেলার প্রচলন বেশি। কুস্তি উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা নেয় স্বাগতিক গ্রাম। আষাঢ়-শ্রাবণ কুস্তিখেলার সময়। কার্তিক শেষে সমাপ্তি। তাই মালদের ডেকে নিয়ে আসেন গ্রামের মাতব্বররা। কিভাবে জয়লাভ করা যায় চলে সেই বুদ্ধি-পরামর্শ। তারপর আমন্ত্রণ জানানো হয় অন্য গ্রামের মালদের। বহুকাল ধরে এ ভাবে খেলা হচ্ছে গ্রামে গ্রামে। নিমন্ত্রিত হয় প্রতিপক্ষ গ্রামবাসী। হয় গরু জবাই। দূর গ্রাম থেকে বাবার বাড়িতে নাইয়র আসে মেয়েরা। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে খেলা দেখতে আসে হাজার হাজার দর্শক। পরাজিত হলেও আপ্যায়নে কমতি হয় না।
খেলা চলে সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তিনটি দলে মুখোমুখি হন খেলোয়াড়রা। সবার আগে আসে উৎসাহী তরুণরা তাদের আদতে তেমন খ্যাতি নেই। পড়ে ছানি দাগারা মুখোমুখি হন। তারা দ্বিতীয় স্তরের খেলোয়াড়। ভবিষ্যতে ভালো খেলোয়াড় হবেন এমন সম্ভাবনা আছে। সব শেষে মাঠে টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন দাগার মালরা। তারাই গ্রামের সেরা বাছাই কুস্তিগির। দাগার মালদের লড়াইয়ের ওপরই নির্ভর করে চূড়ান্ত জয়-পরাজয়। মালদের নানা কৌশল থাকে। এগুলোকে তারা বলেন ‘প্যাঁচ’। আঞ্চলিক ভাষায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্যাঁচ হলো ঘারি মুছকা (দুই হাতে কোমর ধরে ফেলে দেয়া), বাইম্যা প্যাঁচ (বাইম মাছের প্যাঁচ), বাল্লা (পায়ে পায়ে লড়াই), আউকরা (গোড়ালি দিয়ে পেঁচিয়ে প্রতিপক্ষকে ফেলে দেয়া), বস্তাটান (হঠাৎ বিপক্ষকে ঘাড়ের ওপর তুলে ফেলা) ইত্যাদি। কোনো কুস্তিগিরের হাঁটু, মাথা, কোমর, হাত, পিঠ বা বুক মাটিতে পড়ে যাওয়া মাত্র তিনি হেরে যাবেন।
জেলার শক্তিয়ার খেলা গ্রামের কামাল হোসেন এক সময়ের মাল জানান, সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কুস্তি খেলার মওসুম। খেলার জন্য এক গ্রামের মানুষ আরেক গ্রামের মানুষকে দাওয়াত দেন বলে এর নাম ভাইয়াপি কুস্তি বা দাওয়াতি কুস্তি খেলা। দাওয়াতি গ্রামের লোকদের থাকা-খাওয়ার আয়োজন করে যে গ্রাম দাওয়াত করে তারা।
সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেলা টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। যুবসমাজকে মাঠে ফেরাতেই এই উদ্যোগ নেয় বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। তিনি বলেন, কুস্তিখেলায় বিপুল দর্শকই প্রমাণ করে এর জনপ্রিয়তা। আগামীতে আরো বড় কুস্তিখেলার আসর বসানো হবে বলে তিনি জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি ইতিহাস গড়া জয় পেল পাঞ্জাব

সকল