২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাড়াশে গৃহবধূ পাখির রহস্যজনক মৃত্যু : তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ

-

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গৃহবধূ আফরোজা আকতার পাখির (২৬) রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগ তার মেয়েকে যৌতুকের কারণে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অপর দিকে ভিকটিমের স্বামীর পরিবার ও পুলিশের দাবি তিনি গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ নিয়ে তাড়াশ থানা ও সিরাজগঞ্জ আদালতে পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের লালুয়া মাঝিরা গ্রামের আক্কাস আলীর মেয়ে আফরোজা আক্তার পাখির সাথে পাশের মাধাইনগর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে ইউনুস আলীর প্রায় দশ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়; কিন্তু পাখির সে সংসার সুখের হয়নি। বিয়ের পর পরই স্বামী তাকে যৌতুকের জন্য নানাভাবে মারধর করত। প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিত। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশি বৈঠকও হয়েছে। এরই মধ্যে মামলার পাঁচ নং আসামি মুন্নীর (২৩) সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে পাখির স্বামী ইউনুস আলী। ফলে সে প্রায়ই পাখিকে তার সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিত।
গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে পাখির মা সুজাতা বেগম তার মেয়ের মৃত্যুর খবর পান। রাত আনুমানিক ৮টায় তিনি পরিবারের লোকজন সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে উঠোনে মেয়ের লাশ দেখতে পান। এ সময় মেয়ের স্বামীর বাড়ির লোকজন পলাতক ছিল। ১২ মার্চ পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পাখির মা সুজাতা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ওই দিনই পুলিশ তাড়াশ থানায় তার নিরক্ষর স্বামীকে ডেকে নিয়ে তড়িঘড়ি করে স্বাক্ষর নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। তারা হত্যা মামলা দিতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে।
থানায় হত্যা মামলা না নেয়ায় ১৯ মার্চ সুজাতা খাতুন সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাখির স্বামীসহ আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত তাড়াশ থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
বাদি সুজাতা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার চার মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ তদন্তের নামে গড়িমসি করছে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের কে কিছুই বলছে না। উল্টো আসামিরা মামলা আপস করে নিতে তাকে বারবার চাপ দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ইউডি মামলা নিয়েছি। এ ঘটনায় আদালতেও পৃথক একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement