শার্শায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন মানা হচ্ছে না
- আবদুল মান্নান শার্শা (যশোর)
- ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
যশোরের শার্শায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন মানছেন না ইটভাটা মালিকেরা। ফলে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ইটভাটা। প্রশাসনের সহযোগিতায় অনাবাদি জমির পরিবর্তে তিন ফসলি জমিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনের লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। তিন ফসলি জমির উর্বর অংশ কেটে ইট তৈরির কাজে লাগাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা মোতাবেক খাদ্য উৎপাদন ঘাটতিসহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
উপজেলায় প্রতিটি ইটভাটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় গ্রাম্যের সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী ও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক তিন ফসলি জমিতে ব্যাঙের ছাতার মতো ইটভাটা নির্মাণের লাইসেন্স প্রদান করায় আবাদি জমি ঘাটতি শুরু হয়েছে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত ইট তৈরি না করার বিধান থাকলেও একবার লাইসেন্স নেয়ার পরে ভাটা মালিকেরা প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়ন না করেই ইট তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ ছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের লাইসেন্স নেই ৮০ শতাংশ ভাটা মালিকের। বেশির ভাগ ভাটায় ১২০ ফুট চিমনি ব্যবহার হচ্ছে। যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ফারজানা জান্নাত স্বাক্ষরিত তথ্যে প্রকাশ, যশোর জেলার শার্শায় কাগজ কলমে আছে ১৪টি আর বাস্তবে ৩৪টি ইটভাটা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উপজেলায় অতিরিক্ত ২০টি ইটভাটার কোনো খবরই রাখে না প্রশাসন। ইটভাটায় ইট প্রস্তুত হচ্ছে অথচ লাইসেন্স নেই শার্শা মেসার্স হক ব্রিকস, রুপালি ব্রিকস, রুহু ব্রিকস, অর্ণব ব্রিকস ও মুন্নি অটো ব্রিকসসহ ২০টি ইটভাটার। প্রতিটি ভাটা তিন ফসলি ২০ থেকে ৫০ বিঘা ফসলি জমিতে নির্মাণ করে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সব কিছু জানা সত্ত্বেও এসব অবৈধ মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিষয়টি সাধারণ জনগণের নিকট প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পরিবেশ দূষণমুক্ত করার জন্য কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ঝিকরগাছার ৭ নম্বর নাভারণ ইউনিয়নের কুন্দিপুর গ্রামে নির্মিত হিরা ব্রিকস সরকারি বিধান না মেনে ভাটা নির্মাণ করায় স্থানীয় প্রশাসন ভাটায় ইট প্রস্তুত ও পোড়ানো বন্ধ ঘোষণা করলেও আইনের ফাঁকফোকর দেখিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে হিরা ব্রিকস তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ আইন)-২০১৩, নীতিমালার আলোকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, একাধিকবার কৃষি পণ্য উৎপাদনকৃত জমিতে ভাটা স্থাপন করা যাবে না।
লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তুত করা যাবে না, যত্রতত্র ভাটা স্থাপন করা যাবে না। কৃষি জমির উর্বর মাটি দিয়ে ইট প্রস্তুত করা যাবে না, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কিলোমিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপন করার কথা, অথচ ভাটা মালিকেরা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের ১ থেকে ২২ ক্রমিকের কোনো আইনই মানে না। এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, অচিরেই অবৈধ ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা