৩০ বছর পর শিকলবন্দী থেকে মুক্ত হলেন মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার উত্তর রামগোপালপুর গ্রামের বৃদ্ধ রাম সাহা। গত শনিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন তালা ভেঙে রামা সাহাকে উদ্ধার করে।
গত বুধবার নয়া দিগন্তে সংবাদ হওয়ার আগে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের ফেসবুক ইনবক্সে নিউজ ও ছবিটি দেয়া হয় এবং তালাবদ্ধ রামকৃষ্ণ সাহাকে উদ্ধারের অনুরোধ করা হয়। নিউজটি নয়া দিগন্ত অনলাইনে আপলোড হয় এর ফেসবুকে শেয়ার হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের আদেশ এবং মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের দিকনির্দেশনায় হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা রামকৃষ্ণ সাহাকে উদ্ধারে বের হন। তারা রামকৃষ্ণ সাহার বাড়ি গিয়ে পরিত্যক্ত একটি জরাজীর্ণ ঘর থেকে তালা ভেঙে রামা সাহাকে বেলা সাড়ে ৩টায় উদ্ধার করে। পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম ফেরদৌস রাম সাহাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
চিকিৎসক জানান, দীর্ঘ দিন বন্দী জীবনযাপন করায় রামকৃষ্ণ সাহাকে কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মনে হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং ওষুধ লিখে দেয়া হয়েছে।
হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে অভিযানে নেমে রামকৃষ্ণ সাহাকে শিকলমুক্ত করে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে, সম্পত্তির লোভে ৩০ বছর ধরে শিকলবন্দী করে রাখার অভিযোগ করেছেন রামকৃষ্ণ সাহা ওরফে রাম। কিশোর বয়সে বাবা গৌরাঙ্গ সাহা মারা গেলে সংসারের হাল ধরেন রামকৃষ্ণ সাহা। বরিশালের আঞ্জুরহাট থেকে ধান-ডাল এনে মিরকাদিম বন্দরের আড়তে বিক্রি করতেন রাম সাহা। সম্পত্তির কারণে জীবনের সোনালি সময় শিকলবন্দী থেকে তিনি এখন বৃদ্ধ।
রাম সাহার আত্মীয়স্বজনদের দাবি, বরিশালে ব্যবসায় করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে রাম সাহা মানসিক ভারসাম্য হারায়। ছেড়ে দিলে অত্যাচার ও উৎপাত করে। এই জন্য তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।