২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সদর হাসপাতালে ২০০ রোগীর জন্য ডাক্তার ৪ জন সাতক্ষীরায় জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের প্রধান ভবন : নয়া দিগন্ত -

সাতক্ষীরা ১০০ শয্যা সদর হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ২০০ রোগী ভর্তি থাকেন। এ ছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন আরো ২০০ থেকে ৪০০ রোগী। জেলা সদরের এমন একটি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন মাত্র চারজন। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি ১০ জন ভর্তি রোগীর জন্য একজন ডাক্তার থাকার কথা। সে হিসেবে এ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ২০০ রোগীর জন্য প্রতি শিফটে ২০ জন করে দৈনিক ৬০ জন ডাক্তারের দরকার।
স্বাস্থ্যসেবার এমন বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসক সঙ্কট, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে সাতক্ষীরার চিকিৎসা খাতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পর্যাপ্ত আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও জনবল সঙ্কটের কারণে রোগীরা যথার্থ সেবা পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় একজন ডাক্তার তার সরকারি দায়িত্ব ফেলে রেখে বেসরকারি ক্লিনিক অথবা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে সময় দিলে জেলার স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। আর এসব কারণে ভুক্তভোগী রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে চিকিৎসকদের অভিযুক্ত করছেন। এমনকি চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে থাকে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমবিবিএস পাস করার পর বিসিএসের অপেক্ষায় প্রায় চার বছর শেষ করেন একেকজন ডাক্তার। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দীর্ঘসূত্রতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় এডহক ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগ ও পদায়ন করা না হলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করেন।
অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, একজন ডাক্তার নাইট ডিউটি শেষ করে ভোর ৬টায় বাসায় ফিরে আবারো সকাল ৮টায় কাজ শুরু করলে তার কাছ থেকে কতটা সেবা পাওয়া যাবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজে এনাটমি ও ফিজিওলজির কোনো শিক্ষক নেই। সেখানে এনাটমি পড়ান একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৭ জন ডাক্তারের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৬ জন। একজন রোগীর জন্য তিন শিফটে তিনজন ডাক্তার দরকার হয়। একই সাথে দরকার ৯ জন সেবিকাও। অথচ সেই জনবল এখানে নেই।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কেবলমাত্র এই জেলারই নয়, পাশের খুলনা ও যশোর জেলা থেকেও অনেক রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে জনবল বরাদ্দ আছে ৫০ শতাংশ। অথচ বাস্তবে আছে ৫০ শতাংশেরও কম। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও একই সমস্যা বিরাজ করছে। এ ছাড়া কলারোয়া, তালা, দেবহাটা, শ্যামনগরসহ প্রায় সব উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক ডাক্তার নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিএমএ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, প্রতিবছর গড়ে দুই হাজার ডাক্তার অবসরে যাচ্ছেন। অথচ সেই শূন্যস্থান পূরণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যে কারণে চিকিৎসক সঙ্কটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ছে না বরং কমছে জানিয়ে মতবিনিময় সভায় বলা হয়, এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে আরো বেশি গতিশীল করতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ২৭ জন ডাক্তারের স্থলে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র চারজন। এ ছাড়া কালিগঞ্জে ২১ জনের বিপরীতে চারজন, আশাশুনিতে ২১ জনের বিপরীতে চারজন, কলারোয়ায় ৩৪ জনের বিপরীতে চারজন, তালায় ৩৩ জনের বিপরীতে সাতজন, দেবহাটায় ১৬ জনের বিপরীতে পাঁচজন এবং শ্যামনগরে ৩৩ জনের স্থলে পাঁচজন ডাক্তার রয়েছেন। এসব হাসপাতালে ২০২ জন ডাক্তারের স্থলে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৫১ জন।
জেলায় শতভাগ সরকারি ডাক্তারের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ২৬ শতাংশ। মাত্র ৫১ জন সরকারি ডাক্তার দিয়ে পুরো জেলার স্বাস্থ্যসেবা দেয়া অসম্ভব বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দেশে রোগ ও রোগী দুই বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তারা বলেন, এখন দেশের ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীরা সেবা পাচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল