২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মওসুমের প্রথম ঝড় ও শিলাবৃষ্টি : ফসল ও আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি

-

ফাল্গুনের শুরুতে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেতের ফসল ও আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে ঝড়ো হাওয়ায় গাছপালা ও কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। রোববার ভোর রাতে এ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রোববার মওসুমের প্রথম শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত ৩৮ মিনিট এই শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিল। এতে রাজশাহী মহানগরীতে মোট ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি হয়েছে বজ্রপাতও। এতে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর বৃষ্টি শুরুর পর থেকেই পুরো মহানগরী এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যা স্বাভাবিক হতে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সময় লাগে। ভোরে শিলাবৃষ্টির পর বিদ্যুৎহীন মহানগরীতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত এই শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিল। এ সময় বজ্রপাতও হয়েছে। তবে বৃষ্টির সময় ঝড়োহাওয়া ছিল না। আকাশে এখনো মেঘ রয়েছে। তাই আবারো বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাটোর সংবাদদাতা জানান,রোববার ভোর রাতে শিলাবৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়ি ও মওসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে বকসহ নানা ধরনের পাখিও মরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নাটোর সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সদরের পৌর এলাকা, রথবাড়ি, আমহাটি, ছাতনী ও তেবাড়িয়া, নলডাঙ্গা উপজেলারা বাঁশিলা, হাটবিলা, করের গ্রাম, মদনডাঙ্গা, পিপরুল, পাটুল, হাপানিয়া, বাসুদেবপুর, সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম, তাজপুর, লালোর, শেরকোল, ডাহিয়া, সুকাশ, ইটালী ইউনিয়নে ব্যাপক শিলাবৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। নাটোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা প্রস্তুত হলে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, শিলাবৃষ্টির ফলে গম, লিচু ও আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাতে হঠাৎ করে মেঘের গুরুম গুরুম শব্দে প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। শিলের আঘাতে আমের মুকুল ছিন্ন ভিন্ন হয়ে ছিটকে পড়ে। এ ছাড়া মুকুলে পানি প্রবেশের ফলে আমের ফলন ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কৃষিবিদদের মতে আমের মুকুল আসার সময় বৃষ্টি হলে মুকুলে পানি জমাট বেঁধে পরাগায়নে ব্যাপক ক্ষতি করে। অন্য দিকে শিলাবৃষ্টির ফলে গমের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গমের এখনো পুরোপুরি দানা হয়নি। শিলাবৃষ্টির ফলে ফুল ঝরে পড়ে যায়।
হবিগঞ্জ ও বানিয়াচং সংবাদদাতা জানান, বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মওসুমের প্রথম বৃষ্টির দিনেই প্রচুর পরিমাণ শিলাবৃষ্টি হয়। সাথে চলে দমকা হাওয়া। বৃষ্টিতে কৃষি জমির উপকার হলেও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে সবজি ক্ষেতের। অনেক স্থানে পানি লেগে থাকায় আলু জমির মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। একই সাথে শিলাবৃষ্টির কারণে আমের মুকুলও ঝরে পড়েছে ব্যাপকভাবে। সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও মাধবপুরে। ফাগুনের প্রথম সপ্তাহে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া। সেই সাথে ছিল ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। শিলাবৃষ্টি যেন তাণ্ডব চালিয়েছে ফসলি ক্ষেতে।


আরো সংবাদ



premium cement