জীবন সংগ্রামে থেমে নেই প্রতিবন্ধী শারমিন
- মুহাম্মদ হানিফ ভূঁইয়া নোয়াখালী
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
মাধ্যমিক শ্রেণী পাস করেই নিজ এলাকায় টিউশনি করছেন। এখন তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফল প্রার্থী। সংসারের অভাব-অনটনের পরেও অদম্য সাহস, প্রচণ্ড আত্মবিশ^াস, মেধা ও মননের ওপর ভর করে জীবন-সংগ্রামে থেমে থাকেননি প্রতিবন্ধী তরুণী শারমিন আক্তার।
দারিদ্র্য, দিনমজুর ও কৃষিজীবী পিতা ফিরোজ আলম ও মা বকুল আক্তারের সংসারে পাঁচ সন্তানের চতুর্থজন শারমিন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। দুই হাত থেকেও নেই। পুরোপুরিই অকেজো। তাই দুই পায়ের ওপর ভর করেই তার সব ধরনের পথচলা। স্কুল-কলেজে চলাফেরার ক্ষেত্রে সহযোগী দুই চাচাতো বোনের কিছুটা সহযোগিতা পান।
একমাত্র ভাই রাশেদ খান ঢাকায় সায়েদাবাদে গাড়ি মেরামত করার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। বোনদের মধ্যে বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।
রাশেদ জানান, পরিবারের একমাত্র প্রতিবন্ধী বোনের চাকরির ব্যবস্থা হলে একটু স্বস্তির নিঃশ^াস টানতে পারবেন। এ নিয়েই তাদের যত দুশ্চিন্তা আর ভাবনা।
শারমিন নোয়াখালী সমাজসেবা অধিদফতর থেকে লেখাপড়ার খরচ হিসেবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন। এজন্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি নিজের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে একটি সুদৃঢ় নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করছেন।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের লাল মিয়া কেরানী বাড়ির প্রতিবন্ধী শারমিন আক্তার নোয়াখালী সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে চলতি বছরে দর্শন বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফলপ্রার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি শিখছেন কম্পিউটার। বলেছেন, পরিবারের সবার অকৃত্রিম ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সাহসের কারণে তার মনোবল তাকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
শারমিন দুই পায়ের মধ্যে ডান পায়ে লিখছেন। পায়ের লেখা অত্যন্ত সারিবদ্ধ ও সুন্দর না বলে পারেন না সহশিক্ষার্থীরা। একই শ্রেণীর প্রিয়া স্মরনী জানান, সে হাত দিয়ে লিখতে পারলে টাইপিং বলা যেত তার লেখাকে।
শারমিন জানান, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেবেন। তিনি দেশবাসীকে জানাতে চান শারীরিক সমস্যা নিয়েও তিনি মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সংগ্রাম করছেন। তিনি বুঝাতে চান, প্রতিবন্ধিতা কোনো সমস্যা নয়, যদি তা জয় করা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা