২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গা নৃশংসতায় জড়িতদের বিচারে আনতে চায় ইইউ

রোহিঙ্গা নৃশংসতায় জড়িতদের বিচারে আনতে চায় ইইউ - ছবি : সংগৃহীত

রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ জন্য জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে একটি প্রস্তাব এনেছে ২৮ জাতির এই জোট। এই অধিবেশনেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে ইইউর প্রস্তাবটি পাস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মানবাধিকার কাউন্সিলে ইইউর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নৃশংস অপরাধ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনকারী সবাইকে বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) এখতিয়ার মিয়ানমারের মেনে নেয়া উচিত। 

গত সপ্তাহে আইসিসির এক রুলিংয়ে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে বিতাড়িত করা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই অপরাধে জড়িতদের বিচার করার এখতিয়ার আইসিসির রয়েছে।

মিয়ানমার আইসিসি সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এ জন্য দেশটি আইসিসির কোনো এখতিয়ার অস্বীকার করেছে। তবে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ চাইলে মিয়ানমার পরিস্থিতিকে আইসিসিতে রেফার করতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া বাধা হয়ে আছে।

গত মাসে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে রাখাইনে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের তথ্য-প্রমাণ দেয়া হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর জন্য সুনির্দিষ্টভাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে। তথ্যানুসন্ধান দলটি আগামী মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। এর পরদিন বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাউন্সিলে একটি আলোচনার আয়োজন করেছে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশন চলবে। কাউন্সিলের ৪৭ সদস্য রাষ্ট্র ইইউর প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে অংশ নেবে।
গত বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস হওয়া এক প্রস্তাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্ণ তদন্তের জন্য অবিলম্বে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমার পরিস্থিতিটি আইসিসিতে রেফার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সমন্বিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপে জোর দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবে রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, মিডিয়া ও মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোতে নির্বিঘেœ প্রবেশাধিকার দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইইউর পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘারিনি বলেছেন, মিয়ানমারের ওপর অবরোধ সম্প্রসারণ করতে ইইউ প্রস্তুত রয়েছে। জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে আমরা আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি। ইইউর বাজারে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক সুবিধা প্রশ্নে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পরিষ্কার শর্তযুক্ত। ইইউর সাথে বিদ্যামান বাণিজ্যিক চুক্তিগুলো বহাল রাখতে হলে পরিস্থিতি উন্নয়নে মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
রাখাইন সঙ্কট নিরসনে জাতিসঙ্ঘের প্রয়াত মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই গত বছর ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নজীরবিহীন নৃশংসতা চালানো হয়। হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করার চেষ্টা চালানো হয়। নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচতে এর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময়ে নিপীড়নের হাত থেকে রেহাই পেতে আগে থেকেই বাংলাদেশে চার লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল।

জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে গত বছর ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে অন্তত ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিস্তারিত বিবরণ এতে তুলে ধরা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
সৌদি আরবে আরব ও ইইউ কূটনীতিকদের গাজা নিয়ে আলোচনা ইউক্রেনকে দ্রুত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিতে যাচ্ছে পেন্টাগন ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৯ মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে বাংলাদেশ দূতাবাসের বই অনুদান ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশী প্রভুদের দাসত্ব করছে : কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু সুলতান মাহমুদকে বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় নিহত ১৫ মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি

সকল