০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এলো ডিজিটাল পুশ বাটন

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এলো ডিজিটাল পুশ বাটন
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এলো ডিজিটাল পুশ বাটন - সংগৃহীত

গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নানা পদ্ধতি ব্যবহারের ব্যর্থতার পর এবার রাজধানীতে উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল পুশ বাটন টাইম কাউন্টডাউন সিগন্যাল চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকপর্যায়ে ৪৮টি স্থানে এ পুশ বাটন চালু করা হবে। তবে অগ্রাধিকার ভত্তিতে ২০টি স্থানে এ পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকি স্থানগুলোতেও এ পদ্ধতি চালু করা হবে। এ পদ্ধতি চালু হলে ঢাকায় দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজধানীসহ সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। এর জন্য চালকদের মূলত দায়ী করা হলেও পথচারীদের বেপরোয়া চলাচলও কম দায়ী নয়। রাস্তার মাঝখানে লোহার বেড়া, কাঁটাতার দিয়েও পথচারীদের নিয়মের মধ্যে আনা যাচ্ছে না। কর্মব্যস্ত মানুষ সুযোগ পেলেই আড়াআড়ি রাস্তা পার হচ্ছে। দ্রুতগতির গাড়ি চলাচলের মধ্যেই হাত উঁচিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। এতে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলেছে। এজন্য বিভিন্ন সময় ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা হলেও তার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে এখনো কোথাও হাতের ইশারায় কোথাও দড়ি দিয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারীদের সড়ক পারাপারে ডিজিটাল পুশ বাটন টাইম কাউন্টডাউন সিগন্যাল ব্যবস্থা রয়েছে। যে পদ্ধতি প্রয়োগে পথচারীরা একটি নির্দিষ্ট সময় পর বাটনে চাপ দিলে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।

এ সময়ে পথচারীরা রাস্তা পার হতে পারবেন। তবে নির্দিষ্ট সময় ছাড়া পথচারীরা রাস্তা পার হতে পারবেন না। আবার পথচারী বাটনে চাপ দিলে কোনো গাড়িও চলতে পারবে না। গাড়ি চললে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইভাবে পথচারীও আইন অমান্য করলে জরিমানার শিকার হবেন। এতে দুর্ঘটনাও কমে আসবে। ঢাকাকে স্মার্ট সিটি গড়তে এবং দুর্ঘটনা কমাতে সম্প্রতি উন্নত বিশ্বের এ প্রযুক্তি বাংলাদেশেও আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথমে রাজধানী ঢাকায় এ পদ্ধতি চালু করা হবে। এটি সাফল্য পেলে পরবর্তীতে অন্যান্য শহরেও এ পদ্ধতি প্রয়োগ সম্ভব হবে। সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে একটি জরিপ করা হয়। তারা প্রাথমিকভাবে ঢাকার ৪৮টি স্থানে এ পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা নেন। এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০টি স্থানে ইতোমধ্যে এ পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে মোহাম্মদপুর আসাদ এভিনিউতে গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে একটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। মহাখালী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আরেকটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। নির্মাণাধীন এ দুটি সিগন্যাল তৈরিতে খরচ হয়েছে নয় লাখ ২০ হাজার টাকা।

কিভাবে কাজ করবে সিগন্যাল : পুশ বাটন সিগন্যালটি রাস্তার পাশে ফুটপাথে স্থাপন করা হয়েছে। এতে লাল ও সবুজ দুটি সিগন্যাল রয়েছে। পথচারীদের জন্য সবুজ এবং গাড়ির জন্য লাল রঙের সঙ্কেত প্রদর্শন করবে। আর রাস্তায় রয়েছে একটি জেব্রা ক্রসিং। এ জেব্রা ক্রসিং দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীসহ সব বয়সের মানুষ যাতে সহজে পারাপার হতে পারে সেজন্য ফুটপাথ রাস্তার সাথে সমান করে মিলানো হয়েছে। তা ছাড়া এ স্থানে গাড়ির গতি কমানোর জন্য রেইজড জেব্রা ক্রসিং তৈরি করা হয়েছে। এই সিগন্যালে সড়ক পারাপারে ইচ্ছুক কোনো পথচারী পুশ বাটনে চাপ দিলে ডিজিটাল সিগন্যালে একটি ‘কাউন্ট ডাউন’ শুরু হবে।

পথচারীদের পারাপারের জন্য প্রাথমিকভাবে সবুজ সঙ্কেত হিসেবে ২৫ সেকেন্ড সময় দেয়া হয়েছে। বাটনে চাপ দেয়ার পর এ সময়ের মধ্যে পথচারীরা রাস্তা পার হবেন। এরপর আবার গাড়ি চলাচল শুরু হবে। গাড়ি চলাচল করবে ১২৭ সেকেন্ড ধরে। এরপর আবার পথচারীরা চলতে পারবেন। গাড়ি চলাচলের ১২৭ সেকেন্ডের মধ্যে পথচারীরা বাটনে চাপ দিলেও কাজ হবে না। নির্দিষ্ট সময় পরই এটি চালু হবে। পথচারী পারাপারের জন্য সবুজ সঙ্কেত চালু হলে গাড়িকে থামানোর জন্য গাড়ির দিকে প্রদর্শনকারী লাল সঙ্কেত দেখাবে। অন্ধ পথচারীদের জন্য এই ডিভাইসে আছে ‘ভয়েস’ নির্দেশিকা সুবিধা।

মোহাম্মদপুরে প্রথম পুশ বাটন চালু : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে পুশ বাটন টাইম কাউন্টডাউন সিগন্যালসহ জেব্রা ক্রসিং গতকাল উদ্বোধন করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম এটি উদ্বোধন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সিস্টার রেবা ভেরোনিকা ডি’কস্টা, স্কুলের অধ্যক্ষ সিস্টার ভার্জিনিয়া আশা গোমেজ, ডিসি (ট্রাফিক পশ্চিম জোন) জসীম উদ্দীন মোল্লাসহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, এখানকার সঙ্কেতগুলো গাড়ি ও পথচারী চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গ্রিন হেরাল্ড স্কুলের দুইজন লোক নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এই পুশ বাটন গ্রিন হেরাল্ড স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।

অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল বানানোর উদ্দেশ্য হলো নিরাপদ সড়ক তৈরি করা। আমরা নিরাপদ সড়ক ও শহর চাই। সড়কে সবাইকে আইন মানার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, এখানকার নতুন সিগন্যাল লাইটের সাথে ক্যামেরার ব্যবস্থা আছে। যেসব গাড়ির ড্রাইভার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করবে তাদের গাড়ির নম্বর ক্যামেরা দিয়ে খুঁজে বের করা হবে। তাদেরকে চিহ্নিত করে মামলা দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পুলিশকে সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে হলে আমাদের সুনাগরিক হতে হবে। ঢাকা শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
গ্রিড লাইনের ত্রুটিতে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ভুক্তভোগী নারী ও তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ বাড্ডায় নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কথিত স্বামী পলাতক গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করবে খতমে নবুওয়ত ঝিনাইদহ-১ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জাতীয় গ্রিডে ত্রু‌টি, সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

সকল