২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সব রিক্রুটিং এজেন্সির মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত

সব রিক্রুটিং এজেন্সির মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত - ছবি : সংগৃহীত

‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এবার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে বলে জয়েন্ট ওযার্কিং গ্রুপের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মঙ্গলবার বিকেলে কুয়ালালামপুর থেকে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্য যুগ্ম সচিব ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোঃ আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথকে আরো স্বচ্ছ ও নিরাপদ করার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী ও এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী থেকে জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে আরো সহজ ও বেগবান করার লক্ষ্যে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা মঙ্গলবার সকালে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের প্রশাসনিক কার্যালয় পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বাংলাদেশের পক্ষে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দিয়েছেন মারয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম। এরপরই বেলা আড়াইটায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলটি মালয়েশিয়ার হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মি. কুলাসেগারানের সাথে সভায় মিলিত হন। ওই সভায় শ্রমবাজার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিদ্ধান্তের মধ্যে ‘জি টু জি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশী বৈধ সকল রিক্রুটিং এজেন্সর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়। অপরদিকে কলিং ভিসায় কর্মী নিয়োগের বিষয়েও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়ায় অপেক্ষমাণ মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের যাওয়ার পথ উন্মুক্ত থাকবে।

এছাড়াও মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অনিয়মিত কর্মীদেরকে নিয়মিত করার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে মর্মে সভায় জানানো হয়েছে। বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে।

মঙ্গলবারের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ সেলিম রেজা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কর্মসংস্থান) আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) মোঃ আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, এ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শাহীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব সানজিদা শারমিন। সভায় মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শ্রম) মোঃ সায়েদুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব) উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য নাজিব সরকারের সময়ে ঢাকার ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি শুধু মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য এসপিপিএ সিস্টেমে মনোনীত হয়েছিলো। এনিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৯ শতাধিক লাইসেন্সের নাম দেয়ার পরও দেশটির সরকার ক্লিন ইমেজের মাত্র ১০টি এজেন্সিকেই বেছে নেয়। এরপর থেকে ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত এসপিপিএ সিস্টেমে মোট আড়াই লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। মাহাথির মোহাম্মদ সরকার নির্বাচিত হওয়ার পরই এসপিপিএ সিস্টেম সাময়িক স্থগিতাদেশের ঘোষণা দেয়া হয়। যা মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিত হয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মঙ্গলবার দু দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে শুধুমাত্র ১০টি এজেন্সি নয়, সব এজেন্সি শ্রমিক পাঠানোর ঘোষণা আসে।

এ প্রসঙ্গে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আবুল বাশার নয়া দিগন্তকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি, ব্যবসা যাতে সকলে করতে পারে সে উদ্যোগ নেন। অবশেষে আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সবাই ব্যবসা করতে পারবে এমন কথা শোনার পর এই সেক্টরে সবার মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আশা করছি এবার আমরা সুন্দরভাবে সবাই মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ব্যবসা করতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement