৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বৈশাখী আম আড্ডা জীবনের বাঁকে বাঁকে

-

বৈশাখ মাস। প্রখর উত্তাপে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। রোদ্দুর তো আছেই, সেই সাথে কৃষ্ণচূড়ায় যে আগুন তাতে মন অবধি জ্বলছে। স্যার ইনকোর্সের তারিখ দিয়েও আসেননি। ঠিক আসেননি বললে ভুল হবে, এসে চলে গেছেন অথবা যাবেন। খবরটা এক ক্ষুদে বার্তায় জেনেছি। তাই আজ হয়তো পরীক্ষাটা হবে না। ক্যাম্পাসে এসেই যখন পড়েছি তখন আর কি করা, খবরটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য সোজা ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার চিন্তা। যদিও আজ অন্য একটা পরিকল্পনা মাথায় আছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বন্ধু হিরককে এনেছিলাম সাথে। বেচারার ভার্সিটিতে বড় ক্যাম্পাস থাকতেও আমাদের ক্যাম্পাস দেখার শখ হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই গরিবের ক্যাম্পাস। ডিপার্টমেন্টের দোতলার সিঁড়িতে উঠতেই খবর নিশ্চিত, কারণ স্যার এইমাত্র আমার সামনে দিয়ে নেমে গেলেন।
গেট থেকে যখন শুনলাম ইনকোর্স পরীক্ষা হবে না। তখন বিরক্তি প্রকাশের ভাব করে বাকিদের তুলনায় আমি বেশি খুশি হয়েছিলাম। কারণ ক্যাম্পাসের আম খাওয়ার প্লানটা আজ পূরণ হবে।
বাড়িতে আমের মুকুল দেখে এসেছি, তা আম হয়ে এখন পাক ধরল। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার সময় হলো না। ক্লাস, ব্যবহারিক পরীক্ষার চেয়ে বেশি প্যারা হয়ে দাঁড়িয়েছে টিউশনি। তাই বুদ্ধি এঁটেছি এই বৈশাখে ক্যাম্পাসেই একটা আম আড্ডা দেবো। সেই ভাবনায় যোগ হয়েছে একজন নতুন অতিথি। তাই শাহীনকে পাঠিয়েছি ছুরি,লবণ-মরিচ বাজার থেকে আনতে। ও ফিরে না আসতে আমরা পুকুর পাড়ের আমগাছ তলায়। ছোটবড় মিলেয়ে অর্ধশত আমগাছ ক্যাম্পাসে। যদিও আম খাওয়াতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কাঁচা আম পেড়ে খাওয়ায় দোষের কি? একে একে হিরক আমি জোতির্ময়, আহাদ মোটা গাছটিতে উঠার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। তাই কোটার বিকল্প নেই। অবশেষে বাঁশের কোটা খুঁজতে বের হলাম। পেয়েও গেলাম। শাহীন ফিরে এসেছে। গাছের তলা থেকে বাঁশের কোটা দিয়ে যত আম পাড়লাম কুড়িয়ে দেখি তার অনেকগুলো খোয়া গেছে। বন্ধুদের অনেকেই এতে ভাগ বসিয়েছে। আম কাটতে লাগলাম। আহা! একটু কাশন্দি দিয়ে যদি মাখানো যেত! তবে বেশ জমতো। কিন্তু এখানে তা সম্ভব নয়।

আজকে ছোটবেলার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ল। স্মৃতিতে এখন প্রাইমারি স্কুলের পাশে থাকা বিশাল কাঁচামিঠা আমগাছটির দৃশ্য। সেদিন বাড়ি গিয়ে দেখি গাছটি মারা গেছে। গাছটির সাথে আমাদের ছিল গভীর মিতালী। ক্লাসের বাইরে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি গাছটির তলায়। খেলাধুলা থেকে শুরু করে রৌদ্রদিনের একমাত্র বন্ধু আমগাছটির কথা জীবনেও ভোলার নয়।
জীবনের সাথে মিলে হয়ে যাচ্ছে প্রতীমা ব্যানার্জীর উদাস করা এই গানটিÑ
‘আমি মেলা থেকে তাল পাতার এক বাঁশি কিনে এসেছি। বাঁশি কই আগের মতো বাজে না, মন আমার তেমন কেন সাজে না, তবে কি ছেলেবেলা অ-নে-ক দূরে ফেলে এসেছি!’
সত্যি তো কোথায় সেই ছেলেবেলা, কোথায় কৈশোরের দিনগুলো। স্কুলে যাওয়ার আগে ও পরে দীঘিতে সাঁতার কাটা। ঝড়ের দিনে আম কুড়ানো। সব হারিয়ে গেছে, শুধু আছে স্মৃতি।
তবে আজ মনে হচ্ছে ছেলে বেলায় আবার ফিরে এসেছি। আড্ডাটা লম্বা করতে চাইলাম কিন্তু গরমে সব কিছু চরমে চলে যাচ্ছে। মগজে আরেকটা স্মরণীয় দিন যোগ হলো। কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে সাজানো আঙ্গিনায় বৈশাখী আম আড্ডার কথা ভোলার নয়।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর।


আরো সংবাদ



premium cement
মামা সাংস্কৃতিক শিল্পীগোষ্ঠী বিডি মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সাংস্কৃতিক উৎসব কামাল হত্যা : ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার ১২ চুক্তি হোক বা না হোক, রাফায় অভিযান চলবে : নেতানিয়াহু সমুদ্রসীমায় ২০ মে থেকে ৬৫ দিন‌ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হচ্ছে ২ নতুন মুখ ও নর্টিসহ দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা শত কোটি টাকা আত্মসাৎ : বিমানবন্দর থেকে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক মঠবাড়িয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা গাজা যুদ্ধ : জার্মানির বিরুদ্ধে মামলার রায় দেবে আইসিজে হিট স্ট্রোকে ৮ দিনে ১০ জনের মৃত্যু : স্বাস্থ্য অধিদফতর মানিকগঞ্জে আ’ লীগের ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

সকল