২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোটা নিয়ে কথা

-

কোটাবিরোধী আন্দোলনে বেশ কিছু কাণ্ড ঘটেছে। প্রথমে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা হামলা করেছেন আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। পরে আবার তারা আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বললেন, রাজাকারের বাচ্চা। এতে আন্দোলনকারীরা মর্মাহত। কেননা, দেশকে ভালোবেসে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের বলা হলো ‘রাজাকার’। এটা তাদের বলা হলো, যারা একটা সময় দেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাই এর প্রতিবাদস্বরূপ কিছু ক্ষুব্ধ তরুণ টি-শার্টে ‘আমি রাজাকার’ লিখে মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তরুণেরা এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে অপমান করেনি, আর মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার প্রশ্নই আসে না। কেননা, তরুণেরা এক বাক্যে স্বীকার করেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির যোগ্য সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী সেই তরুণদের রাজাকার বলে বিভ্রান্ত করলেন একজন সিনিয়র মন্ত্রী। কোরিয়ায় একটি ট্রলার ডোবার কারণে ব্যর্থতার দায় নিয়ে সাথে সাথে পদত্যাগ করেন সে দেশের নৌমন্ত্রী। দুঃখের বিষয় হলো, বাংলাদেশে এমন উদার রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো দেখা যায়নি। গত ১১ মে অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ‘আমি রাজাকার : একটি আলোকচিত্র’ নামে একটি লেখা কয়েকটি দৈনিকে ছাপা হয়েছে। ওই লেখায় ‘আমি রাজাকার’ টি-শার্টে লেখা তরুণের ছবি ছাপা হয়েছে। তিনি এতে তরুণদের রাজাকার প্রীতির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। জাফর ইকবাল স্যারকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ওই লেখা প্রসঙ্গে বলতে চাই, সত্যিই আপনি ভুল বুঝেছেন স্যার। তরুণেরা রাজাকার হয়ে যায়নি। রাজাকার হলে তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে আন্দোলনে নামত না। তারা আসলে ‘আমি রাজাকার’ টি-শার্টে লিখে মন্ত্রীর অত্যন্ত আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তরুণেরা রাজাকার হয়ে গেছে; এটা ভাবলে ওদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই রাজাকার বানানো হবে। ‘নব্য রাজাকারদের রুখতে হবে’ শিরোনামে ছাত্রলীগ পোস্টার-ব্যানার ছাপিয়েছে যা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়াচ্ছে। আশা করি, এমন ভীতিকর পরিস্থিতি দ্রুত কেটে যাবে এবং স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে; একই সাথে নিপাত যাবে কোটাপ্রথা। হ
লেখক : শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ,
ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা


আরো সংবাদ



premium cement