আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না : মাহমুদুর রহমান
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ০৫ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, অহিংস কার্যকরী আন্দোলন বিএনপি এখনো গড়ে তুলতে পারেনি। সহিংস বা অহিংস হোক, আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। সবাইকে কারাবরণ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ সরকার সব সময় অবৈধ, এর কোনো মেয়াদ থাকে না। দুই বছর, তিন বছর বা পাঁচ বছর হিসাব করে লাভ নেই। কঠোর আন্দোলনে এদের হঠাতে হবে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামে সাংবাদিক-পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে গণমাধ্যম এবং জনগণের স্বাধীনতা থাকে না, যা এখন বাংলাদেশে চলছে। তিনি বলেন, অবৈধ দখলদার, নতজানু বিদেশী তাঁবেদার সরকারের তাঁবেদারি করছে এক শ্রেণীর সাংবাদিক নেতা। তিনি ভারতের এক পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ভারতের এক পত্রিকার খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৮৫ হাজার কোটি টাকা বৈধভাবেই ভারতে যাচ্ছে। অবৈধভাবে এর কতগুণ বেশি পাচার হচ্ছে তার হিসাব কেউ রাখে না বা জানে না। এসব কথা আমাদের দেশের বর্তমান কোনো পত্রিকা ছাপবে না। কারণ সত্য প্রকাশের সাহস কারো নেই। আমার দেশ পত্রিকা স্বাধীনতার কথা বলে বলেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ তারা জানে নির্বাচনের পরে তাদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তাই পাতানো নির্বাচন দিয়ে বিএনপির কিছু নেতার কিছু এমপি পদ দেয়ার জন্য ভারতেরও হিসাব নিকাশ শুরু হয়েছে। সরকারের ওই পাতানো নির্বাচনের পক্ষে কথা বলা বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার সাথে থাকলে ভারতের র-এর সেই তালিকায় আপনাদের নাম থাকবে না। যদি সেই এমপি পদ চান, আমার সাথে এখনই সম্পর্ক ছিন্ন করুন। না হয় র আপনাকে বাদ দেবে। সরকারকে হটাতে হাসিনা বিরোধী পেশাজীবী ঐক্য গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও মো: শাহনওয়াজের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরাই কথা বলতে পারেন না। জিয়া পরিবারের সাথে মুজিব পরিবারের পার্থক্য রয়েছে। জিয়া পরিবার বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয় আর মুজিব পরিবার মিডিয়া বন্ধ করে দেয়। তিনি বলেন, বর্তমানে এক শ্রেণীর ফ্যাসিবাদী সুশীল সমাজ তৈরি হয়েছে দেশে। সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে ৫৭ ধারার পরিবর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে সরকার। তা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, বাংলাদেশকে ভালোবাসাই কি মাহমুদুর রহমানের অপরাধ? ১/১১ এর সময় মাহমুদুর রহমান সাহস করে কলম ধরেছিলেন বলেই আজকের প্রধানমন্ত্রীসহ সব রাজবন্দী মুুক্তি পেয়েছিল। তিনি বলেন, আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে। সাগর-রুনিসহ ৩২ সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। সব কালাকানুন বাতিলসহ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। মাহমুদুর রহমানসহ সব সাংবাদিক নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলার নিন্দা জানান তিনি।
সাংবাদিক পেশাজীবী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস কাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন, ডা: খুরশিদ জামিল চৌধুরী, আবু সুফিয়ান, সাংবাদিক নেতা ইস্কান্দার আলী চৌধুরী, জাহিদুল করিম কচি, অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।