যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ আর প্রতিবাদের পালা যেন শেষ হচ্ছে না। কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শেষে গত ৪ জুন ৭৫ বছর বয়সী মার্কিন এক বৃদ্ধ রক্তাক্ত হন কর্তব্যরত পুলিশ হাতে। ওই বৃদ্ধের নাম মার্টিন গুগিনো। এ ঘটনায় কর্তব্যরত দুই পুলিশকে বরখাস্ত করে প্রশাসন। যার প্রতিবাদ জানিয়েছে এবার বাফেলো নগরীর মার্কিন পুলিশ টিম। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে নিউইয়র্কের বাফেলো নগরীর ৫৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে পদত্যাগ করেছেন। দুজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলে বাহিনীতে এই অসন্তোষ দেখা দেয়।
বাফেলো পুলিশ বেনিভোলেন্ট অ্যাসোশিয়েশন (পিবিএ) প্রেসিডেন্ট জন ইভানস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিনেপোলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের নিহত হওয়ার ঘটনায় বাফেলোর নায়েগ্রা স্কয়ারে প্রতিবাদ সমাবেশ চলছিল। গত ৪ জুন দিনভর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের শেষ দিকে বৃদ্ধ মার্টিন গুগিনো সাথে বাকবিতণ্ডা হয় পুলিশের।
ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তার ধাক্কায় বৃদ্ধ মাটিতে পড়ে যান ও তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলেই চলে যান পুলিশ কর্মকর্তারা।
প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মার্টিন নিজেই পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মার্টিনের পক্ষ থেকে আসা ও ভিডিও ফুটেজ পুলিশের বক্তব্যও পাল্টে যায়। বাফেলোর গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ভিডিও দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভিডিওটি দেখে আমার অস্বস্তি বোধ হয়েছে। তিনি নিজেই ঘটনার তদারকি করেছেন ও আহত বৃদ্ধের সাথে ফোনে কুশলাদি বিনিময় করেছেন। তবে এ ঘটনায় দুজন পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
কিন্তু দুই সহকর্মীর ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার প্রতিবাদে বাফেলো পুলিশের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে পরদিন ৫ জুন ৫৭ জন কর্মকর্তা নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এই ৫৭ জন পুলিশের চাকরি থেকে পদত্যাগ করেননি। তারা নিজেদের ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এদিকে নিউইয়র্ক নগরীর পুলিশ প্রধান, রাজ্য গভর্নর ও নগরীর মেয়রের মধ্যে দুরত্ব ক্রমেই প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। পুরো আমেরিকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের আগুন দমনে নিউইয়র্কের মেয়রের ব্যর্থতা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন গভর্নর কুমো।
এদিকে, আমেরিকার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করেই করোনা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে হোয়াইট হাউসের টাস্কফোর্স সদস্য অ্যান্থনি ফাউসি দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের কারণে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, যখনই কোনো সমাবেশ হবে তখন সংক্রমণ নিশ্চিত বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে সর্বাধিক।
জর্জ ফ্লয়েডের নিহত হওয়ার ১০ দিন পরও আমেরিকাজুড়ে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু নগরীতে রাতে কারফিউ জারি আছে। নিউইয়র্কে রাত আটটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ রয়েছে। গত দুই দিন থেকে আন্দোলন বিক্ষোভের নামে লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা কমে এসেছে।
সূত্র : ডেইলি মেইল
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা