২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এমসি কলেজে গণধর্ষণ : আদালতে নির্যাতিতাকে নিয়ে কটূক্তি

সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। - ফাইল ছবি

সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এদের কেউই ধর্ষণের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করছেন না। তারা একেক সময় একক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নিজেদের রক্ষায় অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ সম্পর্কে আদালতে কটূক্তি করেছেন এক অভিযুক্ত।

প্রধান আসামি সাইফুরসহ অপর দুই আসামি অর্জুন ও রবিউলকে গত সোমবার আদালতে হাজির করে তাদের রিমান্ড শুনানিকালে এক আসামি জানায়, ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। তারা ঘটনা জানে না। এ ঘটনা ঘটিয়েছে রাজন, তারেক ও আইনুদ্দিন।

ওইদিন আদালত থেকে বেরিয়ে এসে আইনজীবীরা জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে অনুশোচনা নেই। লোমহর্ষক ঘটনা ঘটিয়েও তারা বিব্রত নয়।

পরদিন আদালতে হাজির করা হয় আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, রাজন ও আইনুদ্দিন আইনুলকে। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শতাধিক আইনজীবী ছিলেন।

শুনানির এক পর্যায়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্যকালে আসামি রাজন গৃহবধূকে নিয়ে কটূক্তি করেন। তার এ কটূক্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন উপস্থিত আইনজীবীরা। আদালতে উপস্থিত থাকা সব আইনজীবী এক সাথে প্রতিবাদ জানান।

আইনজীবীরা বলেন, ঘটনাটিকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে আসামিরা এ ধরনের মন্তব্য করছে।

আসামিদের রিমান্ড শুনানি শেষে বেরিয়ে এসে সিনিয়র আইনজীবী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ওদের দম্ভোক্তি কমেনি। তারা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে। এতে আমরা প্রতিবাদ করছি।’

তিনি বলেন, ‘এমসি কলেজ হচ্ছে আমাদের প্রাণের কলেজ। ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের ঐতিহ্যে আঘাত করেছে আসামিরা। সুতরাং আমাদের জেলা বারের কোনো আইনজীবীই ধর্ষকদের পক্ষে দাঁড়াবে না।’

এদিকে, আসামি শাহ রনি, রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছিলো র‌্যাব। গ্রেফতারের পর তাদেরকে র‌্যাব প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে। সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানিয়েছিলো, আসামিদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া আইনুদ্দিন সিলেটের আলোচিত মজিদ ডাকাতের নাতি। তিনি এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বে বালুচর পয়েন্ট থেকে টুলটিকর পর্যন্ত ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হয়। ছাত্রলীগের রঞ্জিত গ্রুপের সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত তিনি।

সোমবার রাতে উল্লিখিত তিন আসামিকে শাহ পরাণ থানা পুলিশে হস্তান্তরের পর আসামিরা ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে নানা নাটকীয়তার আশ্রয় নেন। তারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর আসামিরা ধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধূর ওপর দোষ চাপাতে চাচ্ছে। ফলে পুলিশ তাদের কথা বিশ্বাস করছে না। পুলিশের ধারণা, ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আসামিরা চালাকি করছে।


আরো সংবাদ



premium cement