যুক্তরাষ্ট্রে বন্দী পাকিস্তানি নিউরো-বিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকির অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে প্রথম সাক্ষাতে তাকে চিনতেই পারেননি তার বোন ড. ফৌজিয়া সিদ্দিকি। ২০ বছর পর বিশেষ ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ফোর্ট ওর্থের কারা-হাসপাতালে তাদের মধ্যে ওই সাক্ষাত ঘটেছিল।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ড. ফৌজিয়া, পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামির সিনেটর মোস্তাক এবং মানবাধিকার আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড স্মিথ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আফিয়ার সাথে সাক্ষাত করার অনুমতি পান।
পাকিস্তানে ফিরে এসে করাচি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ড. ফৌজিয়া সিদ্দিকি বলেন, বর্তমান সরকার তার বোনের সাথে সাক্ষাত করার ব্যাপারে সহায়তা করেছে, যদিও আগের সরকারগুলো এ কাজটি করতে সক্ষম ছিল।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফিয়ার সাথে আমার সাক্ষাতে সহায়তা করেছেন।'
বোনের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে ফৌজিয়া বলেন, 'ড. আফিয়ার অবস্থা এত ভয়াবহ হতে পারে যে আমরা কল্পনা পর্যন্ত করতে পারিনি।'
তিনি বলেন, 'তার অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে আমি এমনকি তাকে চিনতেও পারিনি।'
ড. ফৌজিয়া উল্লেখ করেন যে সরকার চেষ্টা করলে আফিয়ার প্রত্যাবাসন খুবই সহজ হতে পারে। তিনি বলেন, আগামী জুলাই মাসে তার বোনের সাথে পরবর্তী সাক্ষাত হবে।
অবশ্য তাদের তিনজনের কেউই সরাসরি আফিয়ার সাথে সাক্ষাত করতে পারেননি। তাদের মাঝখানে স্বচ্ছ কাচের দেয়াল ছিল। তারা ফোনের মাধ্যমে কথা বলেছেন।
কে এই ড. আফিয়া সিদ্দিকি?
যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনাকারী ড. আফিয়া সিদ্দিকিকে ২০১০ সালে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল আদালত ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের গজনিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাতকারকালে খুন, হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। আফিয়া অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম নারী হিসেবে আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত হিসেবে তাকে শনাক্ত করে। কিন্তু ওই অভিযোগে তাকে কখনো শাস্তি দেয়া হয়নি।
আফিয়া সিদ্দিকি ১৮ বছর বয়সে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার ভাই বসবাস করতেন। তিনি বোস্টনের মর্যাদাপূর্ণ এমআইটি-এ পড়াশোনা করেন। পরে ব্রানডেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউরো সায়েন্সে পিএইচডি ডিগ্রি নেন।
২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর ইসলামি সংগঠনগুলোতে দান করার জন্য তিনি এফবিআইয়ের নজরে আসেন। অভিযোগ করা হয়, তিনি ১০ হাজার ডলার মূল্যের নাইটভিশন গগলস ও যুদ্ধবিষয়ক বইপত্র কেনার সাথে জড়িত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র সন্দেহ করে যে আফিয়া আমেরিকা থেকেই আল-কায়েদার সাথে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তানে ফিরে ৯/১১ হামলার অন্যতম কারিগর খালিদ শেখ মোহাম্মদকে বিয়ে করেন।
তিনি তার তিন সন্তানসহ ২০০৩ সালে করাচি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।
পাঁচ বছর পর পাকিস্তানের যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিবেশী আফগানিস্তানে তাকে দেখা যায়। স্থানীয় বাহিনী গজনিতে তাকে গ্রেফতার করে।
সূত্র : দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা