০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ কিন্তু ভোট হবে কি?

মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ কিন্তু ভোট হবে কি? - নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশের মানুষ ভোটপাগল। এতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে তাদের ভোট, তারা পছন্দের প্রার্থীদেরই দিতে চায়। সে জন্য উৎসবের আমেজ নিয়ে জনতা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়। ভোট দিতে আসা-যাওয়ার পথে হাস্যরসসহ নানা কাণ্ড ঘটায়। কিন্তু এখন সেটি আর দেখা যায় না। ভোটের নানান বাহানা আর প্রহসনের কারণে সেই আনন্দ উৎসব আর নেই। যাহোক, গত শতাব্দীর ’৭০-এর দশকে এ ভূখণ্ডে প্রথম সত্যিকার অর্থেই একটি ভোট হয়েছিল। সেই ভোটে এখনকার ভোট ভোট খেলা ছিল না। সে জন্য জনগণ ভোট দিতে বাঁধভাঙা পানির স্রোতের মতোই কেন্দ্রে হাজির হয়েছিল। সে ভোটে কোনো সঙ্ঘাত হয়নি, প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করা হয়নি; বরং প্রতিপক্ষের সাথে হাস্যরস করা হয়েছে। সে নির্বাচনে তখন আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিপক্ষ ছিল ন্যাপ মোজাফফর। কুঁড়েঘর ছিল ন্যাপের নির্বাচনী প্রতীক। আওয়ামী লীগ কর্মীরা হেসে হেসে সেøাগান দিত, কুঁড়েঘরে শুয়ে আছে বীর মোজাফফর। অথচ আজ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ আরো কত লীগ প্রতিপক্ষকে লাঠিসোটা দিয়ে পেটায়, ধাওয়া করে। স্বাধীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কী ভয়ঙ্কর রূপ দেখতে হচ্ছে তাদের প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে, যা ’৭০-এ দেখা যায়নি।

তখন অবশ্য মানুষের ঢল নামার মূল কারণ এই ছিল, তারা একটি বিশেষ লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য মরিয়া। সেই লক্ষ্য ছিল, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জন। তদানীন্তন আওয়ামী লীগ জনতার সেই আকাক্সক্ষা পূরণের আন্দোলনের সম্মুখে ছিল। তাদের আরো প্রতিশ্রুতি ছিল, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন কায়েম। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের লক্ষ্যে বৈষম্য দূর করার প্রত্যয়। তবে এ কথা সত্য, এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নে বীজ বপন করেছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। সে জন্য তাকে আওয়ামী লীগ গালমন্দ করেছিল।

এই ভোটপাগল মানুষগুলোকে নির্বাচনের প্রশ্নে হতোদ্যম-হতাশ করেছিল ক্ষমতায় থাকা আজকের আওয়ামী লীগ। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে যখন মানুষ দেখল, তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কারসাজি ও সরকারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল পরাজিত সরকারি দলের প্রার্থীদের। এমন ঘটনা ঘটেছিল কুমিল্লা আর টাঙ্গাইল জেলার অনেক স্থানে। তখন থেকে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা রাহুগ্রস্ত হতে শুরু করে। ঠিক তারপর ১৯৭৫ সালে ভোটব্যবস্থাকে দেশ থেকে ঝেঁটিয়ে দূর করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগই। তবে তখনই তাদের পক্ষে ভোটব্যবস্থা তাড়ানোর খায়েশ পূরণ করা সম্ভব হয়নি। সে জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল ২০১৪ সাল পর্যন্ত। সেই থেকে মানুষ ভোটাধিকার হারায়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোটের বিশুদ্ধতায় বিষ ঢেলে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এই বিষবাষ্পই আজ দেশের ভোটের পরিবেশকে করে তুলেছে দূষিত। এখন ভোট জনগণের লক্ষ্য অর্জনের জন্য হয় না। লক্ষ্য ঠিক করে প্রশাসন ও ইসি। যারা দীর্ঘকাল সমান্তরালভাবে পরস্পর হাত ধরাধরি চলছে, তাদের লক্ষ্য ক্ষমতাসীনদের আবার ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা। দেশ ও গণতন্ত্র গোল্লায় যাক। তাতে বর্তমান শাসকদের কোনো পরোয়া নেই। তাদের বাক্যবচনে অবশ্য মনে তারা গণতন্ত্রপ্রাণ।

বিশুদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চলমান যে আন্দোলন, সেটাও কিন্তু দল বিশেষের নয়। আরো অনেক দলের এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর। দেশের জনগণ তাদের হৃদয়ের আকুতি ও হৃদস্পন্দন এই আন্দোলনের মধ্যে অনুভব করছে। সেই অনুভূতি থেকে বিএনপি ও তাদের সমগামী দলগুলোর পেছনে একাট্টা হয়ে দণ্ডায়মান জনতা। গণতন্ত্রের এই অভিযাত্রায় এখন বন্ধুর পথ অতিক্রম করছে বটে। কিন্তু জনতা অভিযাত্রার সাফল্যের মিনারে পৌঁছাতে বদ্ধপরিকর। আসলে মানুষ আবারো ভোট দিতে চায়, আর সে জন্যই তারা রাজপথে ঘাম ঝরাচ্ছে।

বিগত দেড় দশকে দেশে যত স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার সব ক’টিতেই ভোটের প্রচণ্ড খরা গেছে। অথচ ভোটপাগল মানুষগুলো ইসি আর রাজনৈতিক প্রশাসনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের কোনো নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়নি। তারা এটি ঠিকভাবে বুঝতে পেরেছে। নির্বাচনের নামে তাদের (সরকার ও ইসি) প্রহসনকে জায়েজ করতে এসব পাতানো খেলা চলছে। সে জন্য এর শরিক হতে মানুষ কখনো চায়নি। আগামী নির্বাচনকে অর্থপূর্ণ ও প্রশ্নমুক্ত করতে হলে অবশ্য রাজনৈতিক প্রশাসন ও ইসির আপাদমস্তক বদলে ফেলা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। যে যত কথাই বলুক বা প্রতিশ্রুতি দিক, দেশের বৃহত্তর মানুষ তাতে কিছুমাত্র আগ্রহ বোধ করছে না। কেননা অতীতে তারা বারবার ঠকেছে। ইসি ও রাজনৈতিক প্রশাসনের কাছে তাদের দেয়া ওয়াদা ছিল নিছক কথার কথা। তারা সব সময়ই যেনতেন একটা ভোট করে। তাদের বিজয়ী হওয়ার একটা উপলক্ষ তৈরি করা ভিন্ন আর কিছুই নয়।

ভোট অর্থপূর্ণ করার মাধ্যমে ক্ষমতার পালা করা একমাত্র পথ হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হলে বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থার সামগ্রিক পরিবর্তন করা অপরিহার্য। বর্তমানে ভোটব্যবস্থার সব ব্যত্যয় দূর করার চূড়ান্ত সময় এসে গেছে। সেই অভিযাত্রা ইতোমধ্যে অগ্রসর হচ্ছে। এ যাবৎ লক্ষ করা গেছে, নির্বাচন কলুষিত করার সব আয়োজনের অংশ হিসেবে অশুভ শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে ‘দলীয় সরকার’ যাদের অধীনে কখনো কোনো নির্বাচন প্রশ্নমুক্ত হয়নি। গত ১৫ বছর ধারাবাহিকভাবে সেটারই চর্চা হয়েছে। এ ব্যবস্থা জনগণের ভোটাধিকারের প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে ভূমিকায় ছিল। সেই দলীয় সরকারের সাথে সমান্তরালভাবে চলে একই কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই দ্বৈত সারথিকে নির্বাচন থেকে হটাতে না পারলে এবং তার জায়গায় প্রতিস্থাপন করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারকে। সেই সরকারকে দায়িত্ব দেয়াই হবে ভালো নির্বাচনের পূর্বশর্ত। এই সরকারব্যবস্থা কায়েম খুব একটা কঠিন কিছু নয়। এখন দেশে ‘থোড় বড়ি খাড়া’ গোছের একটা সংসদ বহাল আছে। সেই সংসদ সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী বাতিল করলেই সব সমাধান হয়ে যায়। জাতি এই প্রশ্নে একাট্টা। এর বিরুদ্ধাচরণ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।

দুই সারথির এক নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একটা চমৎকার মূল্যায়ন করেছে টিআইবি। ইসিপ্রধান সম্পর্কে টিআইবির মূল্যায়ন হচ্ছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের স্ববিরোধী বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রত্যাশিতভাবে গ্রহণযোগ্য, অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সিইসির ‘হাল ছেড়ে দেয়া’ এবং সেটা প্রকারান্তরে পক্ষপাতমূলক অবস্থানের মানসিকতার প্রতিফলন বলে সমালোচনা করেছে সংস্থাটি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বারবার অবস্থান পরিবর্তন, পাল্টানো সন্দেহজনক ও বিভান্তিমূলক বলে তারা মনে করেন। টিআইবি এক বিবৃতিতে আরো বলেছে, বিরোধী দল বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দলীয় চিন্তার ঊর্ধ্বে থেকে নির্বাচন করার নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি যখন তিনি (সিইসি) বলেন, কে নির্বাচনে এলো আর কে এলো না; জনগণ যদি আসেন, ভোটাররা যদি আসেন, তারা ভোট প্রয়োগ করেন তাহলেই নির্বাচনের বড় সফলতা। বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘোষণা দলীয় পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন।

যাহোক, সুষ্ঠু ভোটের আরো অনেক পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে, যেমন ভোটকেন্দ্রের নি-িদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এই নিরাপত্তা শুধু কেন্দ্রচত্বরের নয়। ভোটারের তথা নারী-পুরুষ, আবালবৃদ্ধবনিতা প্রতিবন্ধীসহ সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য যারা দায়িত্ব পালন করবেন। সংশ্লিষ্ট সবাই যাতে নির্ভয়ে মুক্ত মন নিয়ে ভোটের সময় দায়িত্ব পালন করতে পারেন। সে জন্য তাদের সার্বিক নিরাপত্তার আঞ্জাম দেয়ার মধ্যেই নিরাপত্তা দানের বিষয়টি পূর্ণাঙ্গতা পাবে। ১৫ বছর ধরে সবাইকে এমন নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এই সেদিন রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানকালে পুলিশের উপস্থিতিতে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সরকারি দলের প্রার্থীর দলান্ধ কর্মীরা মেরে ধরাশায়ী করেছিল। কিন্তু পুলিশ সেই ব্যক্তির নিরাপত্তা দেয়নি। গত দেড় দশকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক এমনই ছিল। বরাবর এমনটিই দেখা গেছে, ভোটপ্রার্থী, তার পোলিং এজেন্ট, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবসময় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকতে হয়েছে। ইসির ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও এসব দেখেও তার কোনো প্রতিবিধান তারা করেনি। তাই দ্বিধাহীনচিত্তে এটিই বলতে হবে, ক্ষমতায় থাকা দলীয় সরকার বিগত দিনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেয়ার প্রয়োজনই অনুভব করেনি। সে জন্য বর্তমান ব্যবস্থাকে বহাল রেখে কোনোভাবেই মানোত্তীর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।

তা ছাড়া মেরুদণ্ডহীন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দিয়ে কোনো মহৎ উদ্যোগকে যেমন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয় না, তেমনি দেশের বর্তমান পিঠের দাঁড়াহীন ইসি দিয়েও ভালো নির্বাচন করানোর আশা করা বাতুলতা মাত্র যে ইসি আইন করে নিজেদের ক্ষমতা বিসর্জন দেয়; অর্থাৎ তারা বিধান করে নিজেদের ক্ষমতা সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে। নিশ্চয়ই কর্তার ইচ্ছাতেই কীর্তন গেয়েছে ইসি। এখন এমন ‘ঢাল তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার’দের দিয়ে কি যুদ্ধে জেতা সম্ভব? আসন্ন নির্বাচনকে সবাই বলছে, এটি দেশের অস্তিত্বের সাথে জড়িত এক যুদ্ধ। এখানে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাশ নেই।

জাতি এখন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে। তাতে তাদের সুহৃদ যেমন দেশের সব মানুষ, তেমনি বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের মানুষ, তাদের সরকারও এই আন্দোলনের বড় সম্পদ। তার পরও আত্মশক্তির কোনো বিকল্প নেই। সবাই জানেন, এ তুফান ভারী/নিতে হবে তরী পার। তাই মাঝি-মাল্লাদের সতর্ক থাকতে হবে। চতুর্দিক থেকে বিষবাষ্প প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যেই এগিয়ে যেতে হবে অতি সন্তর্পণে। কেননা প্রতিপক্ষ কোনোক্রমেই মাথা নত করতে প্রস্তুত নয়। ধৈর্যই হবে আন্দোলনকারীদের বর্ম।

প্রতিপক্ষ শক্তির সৃষ্ট অনেক সঙ্কটের মধ্যে সব বড় সমস্যা হলো তারা যা চাচ্ছে তার পেছনে নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই। কেননা তারা জনগণের মৌলিক অধিকারকেই শুধু দলিত-মথিত করে চলছে না, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যসহ আর যা কিছু দরকার তার সব কিছুর মূল্য এখন আকাশচুম্বী। কেননা ক্ষমতাসীনদের অপর এক সারথি সিন্ডিকেটের কারসাজিতে সব কিছুর মূল্যই এখন সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মানুষের লুণ্ঠিত এসব অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, মানুষের জন্য সব নিত্যপণ্য সহজলভ্য করার দৃঢ়প্রত্যয়। সেটা আন্দোলনকারীদের আরেক নৈতিক ভিত্তি। আরো বলার আছে; দেশে গত ১৫ বছরে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তার সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বিগত বছরে পিছিয়ে পড়া মানুষেরা শিক্ষা স্বাস্থ্য ও ভোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হতে পারেনি বলে মনে করেন। উন্নয়নে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বৈষম্য শুধু সম্পদের বৈষম্য নয়। এখানে ভোগ বেড়েছে; তবে বঞ্চিতরা তার ভাগ পায়নি। বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা এগিয়েছি; সন্দেহ নেই। কিন্তু যেসব মানুষ বিপন্ন অবস্থায় আছে, তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারেনি উন্নয়ন। এসব ব্যত্যয় দূর করার প্রত্যয় ঘোষণার মধ্যেই আন্দোলনকারীতে নৈতিক বল বিদ্যমান।

শেষ কথা হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলেই এসব সঙ্কট-সমস্যা দূরীভূত হতে পারে। প্রশ্ন, সেই ভালো নির্বাচনের পরিবেশ দেশে সৃষ্টি হতে দেবে কি না ক্ষমতাসীনরা। অতি সাম্প্রতিক তাদের বক্তব্য বিবৃতি কিন্তু সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির ঠিক বিপরীত। যেমন সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মির্জা ফখরুলকে ঢাকায় ঢুকতে দেয়া হবে না, ফখরুলের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেয়া হবে। এমনও বলা হয়েছে ‘তাদের (প্রতিপক্ষদের) ঢাকায় দাঁড়াতে দেয়া হবে না। এসব কথা কিসের ইঙ্গিত বহন করে? তবে কি সরকারি দল নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে! নির্বাচন হতে দেবে না?

ndigantababar@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement