২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
উৎসের উচ্চারণ

দুঃসময়ে বুদ্ধিজীবীর আপন লড়াই

দুঃসময়ে বুদ্ধিজীবীর আপন লড়াই। - ছবি : সংগৃহীত

রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল স্পেনের গৃহযুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে, প্রায় তিন বছর চলমান ছিল এ যুদ্ধ। ১৯৩৬ সালে ১৭ জুলাই মরক্কোয় অবস্থিত স্পেনের সশস্ত্রবাহিনী বিদ্রোহ করে রাষ্ট্রের বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে। সরকারের প্রতি অনুগত ছিল শ্রমিক শ্রেণী, তাদের যোদ্ধারা নিয়ন্ত্রণ নেয় রাষ্ট্রীয় শিল্পাঞ্চলগুলোর।

সরকারবিরোধীরা ছিল জাতীয়তাবাদী। কৃষিপ্রধান অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করে তারা। দেশব্যাপী তৈরি করে খাদ্যসঙ্কট।
তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ফান্সিসকো ফ্রাঙ্কো (১৮৯২- ১৯৭৫)। ১৯৩৭ সালে ফ্রাঙ্কো স্পেনের ফ্যাসিস্ট পার্টি ফালাঞ্জির সাথে অন্য দক্ষিণপন্থী শক্তিগুলোকে যুক্ত করেন। তার নেতৃত্বে শক্তিশালী হয় ‘জাতীয়তাবাদী স্পেন’। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে তারা যখন যুদ্ধ শুরু করল, স্পেনের কৃষক ও শ্রমিকরা প্রতিরোধ করছিল প্রবলভাবে। তারা আশা করছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা শক্তিগুলো ফ্রাঙ্কোর নৈরাজ্যকে সহ্য করবে না। কিন্তু দিন শেষে দেখা গেল ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পরোক্ষভাবে ফ্রাঙ্কোকেই সাহায্য করেছে।

স্পেনের বৈধ সরকারকে রক্ষা করার ইচ্ছা তাদের মোটেও ছিল না। অন্য দিকে ইউরোপজুড়ে তখন ফ্যাসিবাদের জয়জয়কার। অনেক দিন আগেই (১৯২২ সালে) ইতালিতে ফ্যাসিবাদের প্রতিষ্ঠা করেছেন বেনিতো মুসোলিনি (১৮৮৩-১৯৪৫); জার্মানিতে ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার জার্মান সংস্করণ নাৎসিবাদ, প্রতিষ্ঠা করেছেন হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)। দু’জনই প্রবলভাবে যুদ্ধ শুরু করলেন ফ্রাঙ্কোর পক্ষ নিয়ে। এক হাজার ৯০০ জার্মান সেনা ও ৭৫ হাজার ইতালীয় সেনা ফ্রাঙ্কোর পক্ষে ছিল ময়দানে।
অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে জার্মানি পাঠায় ১০০ জঙ্গিবিমান। ইতালি পাঠায় বিপুলসংখ্যক সমরাস্ত্র; ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলন্দাজ বাহিনী।

যুদ্ধের শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ক্যাটালোনিয়ায়। ক্লান্ত-শ্রান্ত প্রজাতন্ত্রী বাহিনী ফ্রাঙ্কোর অভিযানের মুখে টিকতে পারেনি এবং শেষ পর্যন্ত ২৫ জানুয়ারি ১৯৩৯ বার্সেলোনার পতন ঘটে। ১৯৩৯ সালের ৭ মার্চ প্রজাতন্ত্রীদের আত্মসমর্পণের পূর্বক্ষণে মাদ্রিদে একটি ক্ষণস্থায়ী গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। এটি ছিল জনতার তরফে শেষ চেষ্টা। কিন্তু ফ্যাসিবাদীদের প্রতিরোধ করা যায়নি। ২৮ মার্চ ১৯৩৯ ফ্রাঙ্কোর বাহিনী রাজধানীতে প্রবেশ করে। গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। সূচিত হয় ফ্রাঙ্কোর একনায়কত্ববাদী দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট শাসনের যুগ।

যুদ্ধে ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার রিপাবলিকান সেনা। ফ্রাঙ্কোর সেনাবাহিনীর পরিচালিত গণহত্যার শিকার হয়েছিল অসামরিক পুরুষ-নারী ও শিশু; তাদের সঠিক সংখ্যা কেউ জানে না। ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যেই কেবল নিখোঁজ হন অন্ততপক্ষে এক লাখ ১৪ হাজার মানুষ । তাদের মধ্যে একজন হলেন স্পেনের বিখ্যাত কবি ও নাট্যকার ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা (১৮৯৮-১৯৩৬)। তাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয় নির্মমভাবে। প্রায় পাঁচ লাখ রিফিউজি পালিয়ে যান ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশে।

এ রকম একটি সময় নাকাড়া না বাজিয়ে আসে না। সব দুঃসময়কে স্পেনের সেই পরিস্থিতির দিকে যেতে হবে, এমন নয়। চরিত্রগতভাবে সে রকম বা এর কাছাকাছি না হয়েও দুঃসময় তার ধ্বংসাত্মক খেলা চালিয়ে যেতে পারে। যেখানে জনগণ হয়তো মরে না গণহারে, কিন্তু তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় মৃত মানুষের ভ‚মিকা। জীবিতের ভ‚মিকায় সক্রিয় চেষ্টা মানেই নৃশংসতার বিচিত্র বিষদাঁত। যার রয়েছে আত্মপক্ষ সমর্থনের বহুমুখী ভাষা ও ভাষ্যকার।

জাতীয় জীবনে দুঃসময় আসার আগে বুদ্ধিজীবীর উপলব্ধি করা উচিত যে, সাহিত্যিক নিষ্পৃহতা, গজদন্ত মিনারে বসবাস, অনিশ্চিত মনোভাব বা স্ববিরোধী অবস্থানে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানুষের অধিকার ও সংস্কৃতির পক্ষে অবস্থানকারী শক্তিগুলোর গলা চেপে ধরার দৃশ্য তাদের দেখা উচিত, মানুষের প্রাপ্যকে পদদলিতকারীদের হাতে অবদমিত জনতার নিশ্চুপ কান্না তাদের কানে প্রতিধ্বনিত হওয়া জরুরি।

স্পেনের সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে তখনকার লেখক-বুদ্ধিজীবীদের করণীয় প্রশ্নে বিখ্যাত প্রতিক্রিয়াগুলো প্রকাশিত হয়, যা গ্রন্থবদ্ধ হয় ঠড়রপবং অমধরহংঃ ঞুৎধহহু শিরোনাম-সঙ্কলনে। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত মূল্যবান এ সঙ্কলনের সম্পাদক হলেন জন মিলার। নিউ ইয়র্কের সি, স্ক্রিবনারস সন্স কোম্পানি থেকে বইটি হয় প্রকাশিত।

এতে লেখক-বুদ্ধিজীবীদের সমীপে রচিত একটি প্রশ্ন উত্থাপনকারী পত্র রয়েছে। পত্রের লেখক হচ্ছেন লুই আঁরাগ (১৮৯৭-১৯৮২), হাইনরিশ মান (১৮৭১-১৯৫০), ডব্লিউ এইচ অডেন (১৯০৭-১৯৭৩), পাবলো নেরুদা (১৯০৪-১৯৭৩), জাঁ রিচার্ড ব্লক (১৮৮৪-১৯৪৭), স্টিফেন স্পেন্ডার (১৯০৯-১৯৯৫) ব্রায়ান হাওয়ার্ড (১৯০৫-১৯৫৮) ত্রিস্তা জাঁরা (১৮৯৬-১৯৬৩) প্রমুখ। পত্রটি ইস্যু হয় প্যারিস থেকে, ১৯৩৭ এর জুনে।

এতে স্পেনের ফ্যাসিবাদসহ বৈশ্বিক নানা সঙ্কটে লেখক-বুদ্ধিজীবীরা কী ভ‚মিকা নিচ্ছেন, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সি ডে লুইস (১৯০৪- ১৯৭২) জবাবে লিখেছিলেন- অন্ধ ছাড়া কোনো মানুষ এ সম্পর্কে অসচেতন থাকতে পারে না। আর ফ্যাসিবাদ হলো মানবতা ধ্বংসের পাঁয়তারা। লুই ম্যাকনিশ (১৯০৭-১৯৬৩) লিখেন- স্পেনের প্রজাতান্ত্রিক সরকার যদি হেরে যায়, তা হলে সভ্য মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষের আর দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে না। থিউডর ড্রেইজার লেখেন- আমি সাধারণভাবে ফ্রাঙ্কো ও ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে। কারণ ফ্যাসিবাদে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার অভাব নিশ্চিত। এতে সামরিকতন্ত্র ও নিপীড়নমূলক সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। ধর্মীয়, জাতিগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মিথ্যা দর্শন প্রচারিত হয়। যার ভেতরে বাগাড়ম্বর ছাড়া কিছুই থাকে না। অন্য সব ব্যবস্থায় সামাজিক ন্যায়বিচার বা ধনের সাম্য ইত্যাদি ধারণা সম্পর্কে ভনিতাটুকু অন্তত আছে, ফ্যাসিবাদে তাও নেই। ফ্রাঙ্কো চায় গির্জা ও সেনাবাহিনীকে হাত করে দেশের সব সম্পদ ও ভালো-মন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে। জনগণের বাকি অংশকে নিজেদের দাস বানাতে, যেখানে জনগণ জানবে না কিভাবে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে?

ডব্লিউ এইচ অডেন (১৯০৭-১৯৭৩) সরাসরি লিখেন, ফ্রাঙ্কো যদি জয়ী হয়, তা হলে ইউরোপে ভয়াবহ যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। কারণ তখন ফ্যাসিবাদী দর্শন অন্যান্য দেশে নিজেকে প্রয়োগ করার জন্য আরো আগ্রাসী হয়ে উঠবে। তার জয়জয়কারে এমন আবহাওয়া তৈরি হবে, যেখানে সৃজনশীল শিল্পীরা হারাবেন বাকস্বাধীনতা। সব কিছু হয়ে উঠবে দুঃসহ। ন্যায়বিচার, চিন্তার স্বাধীনতা, সংস্কৃতির স্বাধীনতা ইত্যাদির পক্ষে বলে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে উঠবে। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে লিখেন, যেকোনো সাধারণ মানুষের মতো আমি জেনারেল ফ্রাঙ্কো ও ফ্যাসিবাদের বিরোধী।

জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬-১৯৫০) লিখেন- তার স্বভাবসিদ্ধ ঋজুতায়। তার মতে, স্পেনে ডান ও বামপন্থী উভয় গোষ্ঠীই দেশ শাসনে পালাক্রমে এত অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে যে, নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় কারা বেশি অযোগ্য? আমি মনে করি, স্পেনের শাসনকর্ম কারা চালাবে, তা নিশ্চিত করুক স্পেনের জনগণ। এ বিষয়ে মতামত দেয়া আমার কাজ নয়।

স্যামুয়েল বেকেট (১৯০৬-১৯৮৯) লিখেন- প্রজাতন্ত্রের জয় হোক। এডলাস হাক্সলিও (১৮৯৪-১৯৬৩) প্রজাতন্ত্রের পক্ষে নিজের মতামত ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু টিএস এলিয়ট (১৮৮৮-১৯৬৫) রহস্যময় নির্লিপ্ততাকে পছন্দ করে নেন। তার মতে, স্পেনের যুদ্ধের ব্যাপারে আমি খুবই সহানুভ‚তিশীল, তবু আমি এখনো এ বিশ্বাস পোষণ করি যে, কিছু কিছু জ্ঞানী-গুণী মানুষের এসব দলবাজির ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকা উচিত।

ইভেলিন ওয়াহ (১৯০৩-১৯৬৬) লিখেন- আমি যদি স্প্যানিশ হতাম, তা হলে জেনারেল ফ্রাঙ্কোর হয়ে যুদ্ধ করতাম। কিন্তু সৌভাগ্যবশত আমি একজন ইংরেজ, ফলে দুটো বাজে জিনিসের কোনোটাই বেছে নিচ্ছি না। আমি ফ্যাসিবাদী নই। তবে মার্কসবাদ থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য অন্য কোনো উপায় না থাকলে আমি ফ্যাসিবাদকেই গ্রহণ করব। যারা বলছেন পক্ষ নেয়া জরুরি, তারা প্রতারণা করছেন।

সবচেয়ে খিটখিটে জবাব দেন এজরা পাউন্ড (১৮৮৫-১৯৭২)। সরাসরি ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিল তার অবস্থান। পত্রটির প্রশ্নে লিখেন- এই প্রশ্নপত্র অনভিজ্ঞ ও বোকাসোকাদের কাজ। যারা চিন্তাভাবনা করতে ভয় পায়, এটি তাদের জন্য পলায়নের এক পথ। এসব লোক এত অলস যে, প্রশ্নপত্র তৈরির টাকা কোথা থেকে এসেছে, তালাশ করে দেখবে না। এর সাথে ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক জড়িত, সেটিও জানবে না। এ প্রশ্ন থেকে ইংল্যান্ডের খাটাশগুলোর দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, তাও ঠাহর করতে পারবে না। স্পেন হলো গোবরে মাথাভর্তি একদল লোকের তৈরি আবেগের খচখচানি।

এই যে বুদ্ধিজীবীদের বিভক্ত মতামত, এর পেছনে রয়েছে মতাদর্শিক অবস্থান। আপন মতবাদের দ্বারা তৈরি চিন্তার আয়না দিয়ে স্পেনের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞকে তারা প্রত্যক্ষ করেছেন। এজরা পাউন্ডের মতো কবির কাছে সেই ধ্বংসতাণ্ডবে রয়েছে নতুন মুক্তির সম্ভাবনা। যার ফলে ফ্যাসিবাদের হাত সবল হবে এবং এতেই কল্যাণ। অতএব, সেখানকার যুদ্ধ, প্রলয়লীলা তার কাছে উদ্বেগের কোনো ব্যাপারই নয়, এমনকি এ নিয়ে প্রশ্ন তোলাও মূর্খতা, অন্যের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের প্রভাব।

এলিয়ট বা এজরা পাউন্ড যখন এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ, তখন স্পেনের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে গেছেন বহু লেখক, বহু বুদ্ধিজীবী। অনেকেই প্রাণের ঝুঁঁকি নিয়ে এ যুদ্ধে অংশ নেন। কেউ সাংবাদিক হিসেবে, কেউ যোদ্ধা হিসেবে। সরাসরি রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেন জর্জ অরওয়েল (১৯০৩-১৯৫০), কবি ডারোথি পার্কার (১৮৯৩-১৯৬৭)। আমেরিকা থেকে আসেন আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৯-১৯৬১), জন ডস পাজোস (১৮৯৬-১৯৭০), যুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করতে গিয়ে তারা প্রায় ছিলেন মৃত্যুর মুখোমুখি। মরতে মরতে বেঁচে যান। পাউল টমাস মান (১৮৭৫-১৯৫৫), উইলিয়াম ফকনার (১৮৯৭-১৯৬২), পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩), স্যামুয়েল ব্যাকেট (১৯০৬-১৯৮৯), যুদ্ধে না গিয়েও ছিলেন যুদ্ধে। ফ্রাঙ্কোর বিরুদ্ধে তাদের সোচ্চারতা ছিল যুদ্ধের সমান। তাদের সহানুভ‚তি ছিল উগ্রজাতীয়তাবাদী ফ্রাঙ্কোর বিরুদ্ধে লড়াকু জনতার পক্ষে। শিল্পী ও সাহিত্যিকরা মানবিক তাগিদে নবসৃষ্টির অনুপ্রেরণাও পেয়েছেন এই যুদ্ধ থেকে। ১৯৩৭ সালের ২৬ এপ্রিল জাতীয়তাবাদীদের বিমানবাহিনী নির্বিচার বোমাবর্ষণে ধ্বংস করে গের্নিকা (Guernica) শহর, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় এক হাজার ৬৫৪ জন অযোদ্ধা নাগরিকের। এর প্রতিবাদে পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩) আঁকেন তার বিখ্যাত ‘গের্নিকা’ প্রাচীরচিত্র। সুররিয়ালিস্ট শিল্পী সালভাদর দালি (১৯০৪-১৯৮৯) তার ‘গৃহযুদ্ধের পূর্বাভাস’ ছবিটি আঁকেন ১৯৩৬ সালে। স্পেনের মাদ্রিদ শহরে চিলির দূতাবাসে উচ্চপদে কাজ করতেন কবি পাবলো নেরুদা; স্পেনের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করে তিনি বামপন্থায় আস্থাবান হন, প্রতিবাদে সোচ্চার হন এবং স্পেন থেকে পলাতক ২০০ রিফিউজিকে ফ্রান্সের রিলিফ ক্যাম্প থেকে চিলিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। কুবার কবি নিকোলাস গিয়েনও (১৯০২-১৯৮১) স্পেনে উপস্থিত ছিলেন গৃহযুদ্ধের সময় সাংবাদিক হিসেবে। ফ্যাসিবাদী-জাতীয়তাবাদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে ছিলেন সরব।

দুঃসময়ে বুদ্ধিজীবী এমন ঐক্যের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন না, যা কখনো নিশ্চিত হবে না। তিনি সবার মতামত সংগঠনে চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু এর ফলাফল তার হাতে নেই। তিনি মানবতাবিরোধী শক্তির হুমকির প্রেক্ষাপটে আপন কর্তব্য বুঝে নেবেন নিজের মধ্যকার আলোর নির্দেশে। কর্তব্যবোধের আহ্বানে, অরওয়েলের মতো প্রবল ঝুঁকি নিতেও তিনি দ্বিধা করবেন না। যদিও অন্য কোনো বুদ্ধিজীবীর চোখে তার অবস্থান হতে পারে নির্ঘাত বোকামি!

লেখক : কবি, গবেষক
71.alhafij@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট

সকল