২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিপন্ন বৈশ্বিক নিরাপত্তা দায় কার

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ইউক্রেনের রাস্তায় মানুষের ছিন্নভিন্ন লাশ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া কিংবা গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া সামরিক যানের পাশেই নাম না জানা সৈনিকের নিথর সেই দেহ। শুধু সামরিক স্থাপনা ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে না; সাজানো গোছানো আবাসিক এলাকাও গোলার আঘাতে নরকে পরিণত হচ্ছে। ভেঙেচুরে পড়া বিধ্বস্ত ভবনের চিত্র, ভীতবিহŸল মানুষের আর্তচিৎকার গণমাধ্যমে আসছে। বিগত দুই দশক ধরে এমন চিত্র শুধু মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসতে দেখা গেছে।

ইউরোপ এভাবে আক্রান্ত হয়ে যাবে ভাবা যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা শুধু বেড়েছে। জার্মানির একত্রীকরণ, ইউরোপের প্রায় সব দেশ মিলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা ইইউ গঠনের পর পৃথিবীতে সচ্ছল উন্নত জীবন যাপনের চমৎকার এক মডেল হয়ে ওঠে ইউরোপ। বাকি বিশ্বের কাছে তারা এক স্বপ্নের মহাদেশ যেখানে তৃতীয় বিশ্বের মানুষেরা যেকোনো মূল্যে পাড়ি জমাতে চায়। হাজার হাজার মাইল বিপদসঙ্কুল পথ পেরিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার দরিদ্র মানুষের ইউরোপের পৌঁছার সীমাহীন প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে। জঙ্গল পাহাড় ও তুষারে বিরূপ আবহাওয়ায় প্রাণ যাওয়ার পাশাপাশি ভূমধ্যসাগরে মানুষের সলিল সমাধি ঘটছে নিয়মিত বিরতিতে। তার পরেও ইউরোপগামীদের ঢল থামছে না। আমাদের দেশের তরুণরাও এ যাত্রায় এগিয়ে রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ায় সমাজতান্ত্রিক বøক থেকে আক্রমণের শঙ্কা উবে গিয়ে ইইউ নিরাপত্তা আরো টেকসই হয়েছিল। তাছাড়া ক্রমান্বয়ে ন্যাটো জোটের সদস্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এমনকি নবগঠিত রুশ ফেডারেশনকে তারা ঘিরে ধরেছিল। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ইউরোপকে মনে করিয়ে দিলো, এই নিñিদ্র নিরাপত্তা টেকসই কিছু নয়। এর নিশ্চিত ফলাফল কেউ জানে না। যেকোনো সময় এটি বহুমাত্রিক আরেক যুদ্ধের রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অবস্থান দীর্ঘতর হলেও ইউরোপের নিরুপদ্রব নিরাপত্তা আর থাকবে না। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অচিরেই টানাপড়েন শুরু হতে পারে।

তারও আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ সমৃদ্ধিশালী দেশ হয়েছে। তারাই মূলত এ যাত্রায় ইউরোপকে জাগতিক উন্নতির স্বর্ণশিখরে ওঠার পথ দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দু’পাশে দুটো মহাসাগর। রাশিয়া চীন ইরান কিংবা উত্তর কোরিয়ার সেখানে হামলা চালাতে হলে বোমারু বিমানকে কয়েক হাজার মাইল উড়ে যেতে হবে। দীর্ঘ নৌপথ পাড়ি দিয়ে অথবা আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আক্রমণ করাও কঠিন। মার্কিন নৌবাহিনী অপ্রতিদ্ব›দ্বী। তাদের নৌশক্তিকে পরাস্ত করে মূল ভূখণ্ডে আক্রমণ চালানো এখনো তাই দুঃসাধ্য। আর তাদের রয়েছে শক্তিশালী আকাশ সুরক্ষাব্যবস্থা। তাই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তাদের পর্যুদস্ত করা এখনো অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের তাই অনেক নিরাপদ বোধ করে। তবে আমেরিকা নিজেই নিজের নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে উঠছে। তার মসৃণ গণতন্ত্র ভেঙে পড়ার শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে সৃষ্ট অচলাবস্থা তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত বছরের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলের সন্ত্রাসী হামলা এটাই প্রমাণ করেছে, ভেতর থেকে আমেরিকার মূল্যবোধ ক্ষয়ে গেছে। তাদের কাছে ধর্ম ও বর্ণ পরিচয় বড় হয়ে উঠেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে নিতে পারলে এই বিভাজন বহু মাত্রায় বেড়ে যাবে। সেই ক্ষেত্রে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্রয়োজন হবে না। পুতিনের মতো লোকেরা বাইরে থেকে এর পেছনে ইন্ধন দেয়া অব্যাহত রাখলে, আমেরিকার পুরনো গৃহযুদ্ধ আবারো শুরু হওয়া অদূর ভবিষ্যতে অবাস্তব হবে না।

স্রষ্টা নিজে ইনসাফের ধারক। তিনি মানুষকে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আদেশ দিয়েছেন। সমাজে যারা কর্তৃত্ববান হবেন তারা এটি করবেন। অন্য দিকে যারা বিশ্ব নেতৃত্বে আসীন হবেন তারা আরো গুরুত্বের সাথে ন্যায়বিচারের পথে হাঁটবেন। আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের কথা বাদ দিলাম। কারণ বর্তমান আধুনিক বা উত্তরাধুনিক মানুষেরা তাদের ‘অতটা সভ্য নয়’ বলেই মনে করেন। সুতরাং তারা যতসব অন্যায় অবিচার করেছেন, সেগুলো ধর্তব্য নয়। বর্তমান যুগে মানুষ কী করছে সেটা আমরা একটু বিবেচনা করে দেখতে পারি। ১৯৪৫ সালের পরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এক নজিরবিহীন বিশ্ব ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রে রয়েছে, সর্বজনীন মানবাধিকার। জাতিসঙ্ঘসহ বহু আন্তর্জাতিক সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে তা যথাযথ পরিপালনের জন্য। এগুলোর মূলে ‘ইনসাফের’ তাগিদই রয়েছে। আজকে দাঁড়িয়ে আমরা যদি কয়েক দশক পেছনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, যারাই এসব উন্নত বৈশ্বিক নিয়ম কানুন ও ব্যবস্থাপনা তৈরি করেছেন তারাই নিজেদের হাতে থাকা শক্তির বলে এগুলোকে ভেঙে তছনছ করেছেন। বলদর্পী যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের সাথী ইউরোপ এসব করেছে।

নতুন বিশ্বব্যবস্থার অধীনে ১৯৪৮ সালে ‘সর্বজনীন মানবাধিকার’ ঘোষণা হয়। এর প্রথম ধারায় স্বীকার করা হয়, সব মানুষ স্বাধীনভাবে সমান মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাদের বিবেকবুদ্ধি আছে। সবারই একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্বসুলভ আচরণ করা উচিত। পঞ্চম ধারায় বলা হয়েছে, কাউকে নির্যাতন করা যাবে না; কিংবা কারো প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ করা যাবে না অথবা কাউকে এহেন শাস্তি দেয়া যাবে না। এ দুটো ধারা যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা পালন করলে পৃথিবী সত্যিকার অর্থে এক শান্তির নিবাসে পরিণত হতো। এ ছাড়া এই ঘোষণায় ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও রাষ্ট্র সম্পর্কে যতগুলো ভালো কথা বলা হয়েছে সেগুলো তারা আমল করলে যুদ্ধ হানাহানি এতদিনে বিশ্ব থেকে বিদায় নিত। রাজনৈতিক, মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দরিদ্রতাও পৃথিবীতে আর থাকত না। ঘটেছে সম্পূর্ণ তার উল্টো।

মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ও চর্চায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করে। তারা নিজেদের দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পূর্ণ বিকাশ ঘটিয়েছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে তারা গণতন্ত্রের চর্চা করেছে। ভোটের ব্যবস্থাকে তারা পূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিকতা দিয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রত্যেক নাগরিক নিজের অবস্থানে থেকে মত প্রকাশ করতে পারে। মানবিক অধিকার রক্ষায় তারা পূর্ণমাত্রায় সক্ষম হয়েছে। গুম অপহরণের মতো রাষ্ট্রীয় বিকার সেখানে একেবারে কল্পনা করা যায় না। বিচারব্যবস্থা অত্যন্ত সবল। অপরাধের বিচারে সেখানে ব্যক্তির ক্ষমতা মর্যাদা ও দলীয় পরিচয় দেখা হয় না। সেজন্য রাস্তার ফকির থেকে প্রেসিডেন্টের বিচার পাওয়ার সমান অধিকার রক্ষিত হয়েছে। এই দেশগুলো সে কারণে সত্যিকারার্থে ‘কল্যাণ রাষ্ট্র’ হয়ে উঠছে। স্বাধীনতার কিছু বাড়াবাড়ি প্রয়োগ রয়েছে : আইন করে সমকামী বিয়ে ও বিকৃত যৌনাচারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি যেসব অনাচার পশু সমাজেও নেই। যাই হোক, বাকি বিশ্বের জন্য এমন ইনসাফের বিকাশ তারা সমানভাবে চায়নি। তাদের পছন্দ অনুযায়ী অল্প কিছু দেশে এর বাস্তবায়নে তারা সহযোগী হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা এ উন্নত মূল্যবোধ বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

বিগত কয়েক দশকে তারা বড় বড় কিছু অপরাধ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ইরাক আক্রমণ। কয়েক হাজার বছরের সভ্য সুস্থির শক্তিশালী একটি দেশকে কামান দাগিয়ে বিরান করে ছেড়েছে। প্রাণ হারিয়েছে নিরপরাধ মানুষ, ধ্বংস হয়েছে সহায় সম্পত্তি। তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডবিøউ বুশ ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা ইরাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন ‘গণবিধ্বংসী’ অস্ত্রের মজুদ থাকার। তবে তারা এর কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি যদিও কোনো একটি দেশের কাছে এমন মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা তার ওপর আক্রমণ করতে পারে না। এমন কোনো আন্তর্জাতিক আইন কানুন সব দেশের সম্মতিতে তৈরি হয়নি। এ ধরনের অস্ত্র বরং তাদের কাছেই রয়েছে। ওই সব দেশের কাছে থাকা বিপুল পরমাণু অস্ত্র দিয়ে খোদ এই গ্রহটিকে কয়েকবার ধ্বংস করে ফেলা সম্ভব। পরমাণু বোমার হামলা চালানো পৃথিবীর একমাত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রই । আফগানিস্তান, সিরিয়া ও লিবিয়াকে ধারাবাহিকভাবে একে একে হামলা করে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রত্যেকটি আগ্রাসনে গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী যুক্তরাষ্ট্র্রের সঙ্গী হয়ে থেকেছে ইউরোপ।

মানবাধিকারের যে সনদ তাদের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে তার প্রয়োগ হয়েছে আবার তাদের পছন্দ অনুযায়ী। ফিলিস্তিন, সুদান, কাশ্মিরের মানুষেরা এর আওতায় রক্ষা পায়নি। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচার নিপীড়নের ঘটনাটি এর আরেকটি জোরালো উদাহরণ। ইরাকে হামলা হয়েছিল ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’ থাকার অজুহাতে। অথচ এর দ্বারা ইরাকে জাতিগত নির্মূল কিংবা বড় আকারের গণহত্যার ঘটনা সেখানে তখনো ঘটেনি। একই ধরনের উদাহরণ তাদের আক্রমণে পর্যুদস্ত হওয়া অন্য দেশগুলোর ব্যাপারেও দেয়া যাবে। অন্য দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সরাসরি সে অপরাধ করেছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। আগুনে নিক্ষেপ করে, মাটি চাপা দিয়ে, আরো নানা নারকীয় কায়দায় মানুষ হত্যা করেছে। নারী শিশুদের গণধর্ষণ করেছে। হাজার মানুষকে হত্যা করে লাখ লাখ মানুষকে দেশটি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের যারা আজও দেশটি থেকে পালিয়ে যেতে পারেনি তাদের আটক করে রাখা হয়েছে বন্দিশিবিরে। সেখানে অত্যন্ত অমানবিক তাদের জীবনযাপন। এসব অপরাধ একদিন দুদিন নয়, কয়েক দশক ধরে তারা করে চলেছে। এদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের মানবাধিকারের দণ্ডটি প্রতিষ্ঠা করার কোনো তাগিদ অনুভূত হয়নি।

এসব কথা বলছি কারণ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বব্যবস্থতার প্রতারণা আমাদের সামনে থাকা দরকার। তাহলে ইউক্রেনে আগ্রাসন বিশ্লেষণে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। ইউক্রেন নিয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রতিক্রিয়া সতর্ক হয়ে লক্ষ করলে বুঝতে পারব, এখানে মানবতা, ন্যায়-অন্যায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। রাশিয়া গণতান্ত্রিক ইউক্রেনের ওপর হামলা করেছে এজন্য বাকি গণতান্ত্রিক বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেমে পড়ছে, এমন কিন্তু হচ্ছে না। দেশগুলো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তাদের দেশের এবং নিজের দলের রাজনৈতিক স্বার্থ অনুযায়ী। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দেয়নি সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। ইউক্রেনে গণতন্ত্র ও মানুষের প্রাণ রক্ষার চেয়ে তাদের কাছে রাশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেন এজন্য ক্ষেপেছে ভারতের বিরুদ্ধে। তারা এটিকে ‘প্রতারণা’ মনে করছে। সেজন্য সীমান্তে ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়া ভারতীয় ছাত্রদের তারা লাঞ্ছিত করছে।

এখন পর্যন্ত ইউক্রেন আক্রমণের ঘটনায় কোনো একটি দেশকেও পাওয়া যাবে না যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের উন্নত মূল্যবোধতাড়িত হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সিঙ্গাপুর ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলোকে দেখা যাচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে তৎপরতা দেখাতে। এ দেশগুলোর এমন সিদ্ধান্ত যতটা না ‘যুদ্ধোন্মাদ রাশিয়ার ভল্লুকদের’ বিরুদ্ধে তার চেয়ে ঢের বেশি ছোট রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থেকে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনকে গিলে হজম করে ফেলতে পারে তাহলে অন্য সুপার পাওয়ার বড় বড় শক্তিগুলোর পেটে তারাও ঢুকে যেতে পারে।

এখন চারদিক থেকে নিষেধাজ্ঞা নেমে আসছে। রাশিয়া যদি এর ধকল সামলে উঠতে পারে পুরো বিশ্বব্যবস্থা পাল্টে যাবে। রাশিয়ার প্রতি সমর্থন দেওয়া রাষ্ট্রের সংখ্যা তখন হু হু করে বাড়বে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনকে উগড়ে দিয়ে পিছিয়েও যায়, তাহলেও বিশ্বব্যবস্থা পরিবর্তিত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। কারণ প্রতারণা কখনো টেকসই হতে পারে না। বিশ্বব্যবস্থার শীর্ষে ওঠা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের শক্তিমত্তা ধস এখন সময়ের অপেক্ষায়।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement