৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


‘ইসলামিস্টস’ অপহরণ : একটি পর্যালোচনা

- ছবি : সংগৃহীত

সাম্প্রতিককালে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে অপহরণের নতুন একটি ধরন দেখা যাচ্ছে। গত ছয় মাসে বেশ কিছু অপহরণ বা ‘ফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’-এর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা একই ধরনের এবং তারা একই পদ্ধতিতে অপহৃত হয়েছেন। আমাদের এই স্বাধীন দেশে এই ধরনের ঘটনাগুলো বেশ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অপহরণগুলো কারা করছে, কী উদ্দেশ্যে করছে ইত্যাদি বিষয়ে সমাজে ভীতি এবং গুজব সমানভাবে ছড়াচ্ছে। সেই সাথে অপরাধীরা তাদের অপরাধকর্মে উৎসাহিত হচ্ছে। কাজেই আর দেরি না করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

গত ১০ জুন ২০২১ সালে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও ধর্ম প্রচারক আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ঢাকার গাবতলী থেকে গভীর রাতে তিনজন সহযাত্রী এবং গাড়িসহ নিখোঁজ হন। তার পরিবার পরিজন থানা-পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে বিফল হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়। তার স্ত্রী ‘ফেস দ্য পিপল’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রশাসন ও দেশবাসীর সাহায্য কামনা করেন স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য।

পরবর্তী সময়ে ‘ফেস দ্য পিপল’ ত্ব-হার অবস্থানস্থল প্রকাশিত হওয়ার দাবি করলে এর ২৪ ঘণ্টা পর তাকে নিজের প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে ফিরে আসতে দেখা যায়। কিন্তু এর পর থেকে তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি এবং তিনি কেন কিভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন সে ব্যাপারে আজো মুখ খোলেননি। শুধু স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে জানা যায়, আদনান তার সহযাত্রীদেরসহ রংপুরে এক বন্ধুর বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। গত ২ জুন নারায়ণগঞ্জের বান্টি বাজার এলাকা থেকে বাজার মসজিদের ইমাম শাহিদুলকে আরো দু’জন সহযোগীসহ প্রকাশ্য দিবালোকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের পরিবারও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সহযোগিতা না পেয়ে ‘ফেস দ্য পিপল’-এর মাধ্যমে দেশবাসীকে জানান এবং প্রিয়জনদের খুঁজে পেতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

গত ২৮ জুন ঢাকার মিরপুর থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের একজন ধর্মপরায়ণ শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান রাজু নিখোঁজ হন। ৬ জুলাই নোয়াখালীতে গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে কয়েকজন লোক সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুণবী নামে এক ইসলামী বক্তা ও ধর্মপ্রচারককে। তার নিকটজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সহযোগিতা না পেয়ে ‘ফেস দ্য পিপল’-এর মাধ্যমে গুণবীকে খুঁজে পাওয়ার জন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। পরে জানা যায়, মাওলানা গুণবী জঙ্গি সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। গত অক্টোবরে ‘ফেস দ্য পিপল’-এর টকশোতে জানা যায়, মিসরের ‘আল আজহার’ বিশ্ববিদ্যালয়পড়–য়া অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দর থেকে অপহরণের শিকার হন। তার মায়ের আহাজারির মাধ্যমে জানা যায়, একজন উদীয়মান ‘ইসলামিস্ট’ এই তরুণ কুরআন গবেষণায় নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার উদ্দেশ্যে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে দেশে বিয়ে করার জন্য এসেছিলেন। এরপর ‘ফেস দ্য পিপল’-এর টকশোতে জানা গেছে, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থেকে একজন ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ী অপহরণের শিকার হন। তিনি তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ইটভাটা থেকে কাজ শেষে ফেরার পথে কয়েকজন লোক তাকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। অতি সম্প্রতি ঢাকার উত্তরা এলাকার আধুনিক হাসপাতালে যাওয়ার পথে হাসপাতালের সামনে থেকে অপহরণের শিকার হন হাফেজ মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম। অপহরণের শিকার ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা নিবাসী। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতা পেতে ব্যর্থ হয়ে তার আপনজন ‘ফেস দ্য পিপল’-এর মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেন যেন মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমকে খুঁজে পাওয়া যায়। সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর বেলা ২টার সময় পুরান ঢাকার ইসলামপুরে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘খান প্লাজা’ থেকে ধর্মপ্রাণ ব্যবসায়ী সাইদুর রহমানকে সাদা পোশাকে দু’জন লোক ডেকে নিয়ে যান। পরে সাইদুর রহমান আর ফেরেননি। কিন্তু তার পরিবার কোতোয়ালি ও রমনা থানায় যোগাযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পায়নি। (নয়া দিগন্ত, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১)

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদের গুম-সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রæপের তথ্য মতে, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৬০০ জনকে গুম করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তাদের অভিযোগ মতে, প্রতিপক্ষ দমনে এসব গুম করা হয়েছে। (প্রথম আলো, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১) তবে উপরে আলোচিত অপহৃত হওয়া ব্যক্তিরা কোনো দল বা সরকারবিরোধী পক্ষের কি না সে ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট অভিযোগ ছিল না। উপরের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এসব অপহরণের শিকার বা লক্ষ্য, অপহরণের পদ্ধতি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া একই ধরনের। প্রতিটি ঘটনাতেই দেখা গেছে, ইসলামী বক্তা বা ধর্মপ্রচারক বা কোনো ইসলামিস্ট অপহৃত হয়েছেন। তাদের কেউ ইমাম, কেউ ওয়াজ মাহফিলের বক্তা, কেউ অন্য ধর্মের লোকদের কাছে ইসলাম ধর্মের প্রচারক আবার কেউ কুরআন-হাদিস চর্চা করে নিজের জীবন পরিচালনা করে চলছেন এবং ইসলামের কল্যাণে কাজ করছিলেন। আর এসব অপহৃত হওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে তীক্ষè মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে এদের কেউ কোনো ধরনের রাজনীতি বা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে আপাতত জানা যায়। এমনকি তাদের কেউই কোনো মামলার আসামিও ছিলেন না। আর প্রতিটি ঘটনাতেই অপহরণের পদ্ধতি প্রায় একই। কয়েকজন যুবক বয়সী লোক দক্ষ কায়দায় মাইক্রোবাসে করে অতি অল্পসময়ের মধ্যে সন্তর্পণে অপহৃতকে নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাস্থলের কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা শিকার ধরে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ ওই চক্রটি প্রশিক্ষিত এবং অত্যন্ত দক্ষ এ ধরনের অপহরণের কাজে। সাধারণত কোনো জনপ্রিয় লোককে অপহরণ করতে দরকার টার্গেটকৃত ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য (তার ঠিকানা, আত্মীয় স্বজন, সম্ভাব্য গমনাগমনের স্থান ও সময় ইত্যাদি) জানা, তাকে ঘনিষ্ঠভাবে নজরদারিতে রাখার সামর্থ্য, যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট এবং একটি সুসমন্বিত প্রশিক্ষিত অপহরণকারী দল। যে কেউ যাকে-তাকে খুশি যখন-তখন যেকোনো স্থান থেকে অপহরণ করতে পারে না। এর জন্য দরকার সুনিপুণ পরিকল্পনা, একদল দক্ষ লোক এবং প্রয়োজনীয় ব্যাকআপ সাপোর্ট। কাজেই কারা এসব অপহরণের কুশীলব তা নিয়ে সমাজে অনেক কল্পকাহিনী ছড়াচ্ছে... এরা কি দেশী না বিদেশী চক্র, এরা কি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী না প্রাইভেট বাহিনী, নাকি সরকারি লোক?

একেকটি অপহরণের পর সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে যে ধরনের সহযোগিতা ভিকটিমের পরিবারকে করা দরকার সেটি তারা পাননি বলে ‘ফেস দ্য পিপল’-এর লাইভে এসে অভিযোগ করেছেন। অথচ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মূল দায়িত্ব হলো, দেশের জনগণের জানমালের হেফাজত করা এবং মানুষের নিরাপত্তা ব্যাহত হলে দ্রুত তা নিরসন করা। কাজেই এসব ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে অনীহা মানুষের মনে সন্দেহ ও সমাজে গুজব সৃষ্টি করতে পারে। আবার অপহরণের পর অপহৃত ব্যক্তিদের শেষ পরিণতি অনেকসময় জানা সম্ভব হয় না। তবে কারো কারো ব্যাপারে জানা যায়, তারা গ্রেফতার হয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। আর যারা সৌভাগ্যক্রমে ফিরে আসেন তারা একেবারে নীরবে নিভৃতে লোকান্তরে চলে যান। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানা সম্ভব হয় না।

উল্লিøখিত অপহরণগুলোর বিষয়ে সবচেয়ে দুঃখজনক হলো- আমাদের আনুষ্ঠানিক মিডিয়া জগতের দৃষ্টিকটু নীরবতা। বিশ্বের কোনায় কোনায় যা ঘটছে তা তারা সবই জানতে পারে এবং প্রকাশ করে; কিন্তু নিজের দেশের মাটিতে এসব ব্যক্তির হারিয়ে যাওয়াকে তারা জানতে পারে না বলে কি বিশ্বাস হয়? আফগানিস্তানের কোন গ্রামে তালেবানরা কাউকে বেত্রাঘাত করলে একশ্রেণীর মিডিয়া ‘মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত’ হয়েছে বলে সরব হয়ে ওঠে; কিন্তু নিজের দেশে একের পর এক এতগুলো মানুষ হারিয়ে গেলেও তাদের কিছুই আসে-যায় না? তাহলে এসব অপহৃত ব্যক্তির জীবনের কি কোনোই মূল্য নেই? নাকি সমালোচকরাই সঠিক যে, মিডিয়ার একটি অংশ ইসলামিস্টদের পক্ষে নীরব; কিন্তু বিপক্ষে অত্যন্ত সরব। অর্থাৎ তাদের স্বার্থ রক্ষা হয় এমন সব বিষয়েই কি ওই শ্রেণীর মিডিয়া নীরবতা পালন করছে? তাহলে কি ইসলামিস্টদের পক্ষ নেয়ার মানেই জঙ্গিবাদকে প্রমোট করা? অথচ ইসলাম ও জঙ্গিবাদ মোটেই এক নয়! এ দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো স্পষ্টত চিহ্নিত এবং র‌্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত। অথচ যারা অপহরণের শিকার হয়েছেন তাদের এ জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এরা ব্যক্তিগতভাবে নিরীহ ইসলাম প্রচারক এবং পরিপালনকারী। কাজেই প্রশ্ন উঠছে ওই শ্রেণীর মিডিয়া কি জেনে বুঝেই এভাবে ইসলামিস্টদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, নাকি ইসলামিস্টদের পক্ষে যায় এমন খবর প্রকাশে কোনো অলিখিত বাধ্যবাধকতা রয়েছে? মিডিয়ার রহস্যজনক নীরবতার জন্য, কী কারণে এসব অপহরণের ঘটনা ঘটছে তা কেউ জানতে পারছে না; যারা মুক্ত হয়ে ফিরে আসছেন তারাও কিছু বলছেন না। এ জন্য রহস্যাবৃত থেকে যাচ্ছে এসব ঘটনার কারণ ও কাণ্ডারিরা। ফলে নানান ধরনের কথা, গল্প বা গুজব সমাজে ডালপালা গজাচ্ছে যা দেশের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নাগরিকদের মনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করছে। সাথে সাথে অপহৃত ব্যক্তিদের সমগোত্রের বা সম শ্রেণীর নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার ভীতি বা আশঙ্কা বিরাজ করছে। কী জানি কখন কোন ইসলামী বক্তা বা ধর্মপ্রচারক অপহরণের শিকার হয়ে পড়েন! এমন একটি অবস্থা দেশে বিরাজমান থাকলে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব ঘটনা এত সব উন্নয়নের মাইলফলককে কলঙ্কিত করে দিতে পারে। সেই সাথে ধর্মপ্রাণ মুসলমান নাগরিকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করতে পারে। সাধারণত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের মধ্যকার ক্ষোভ ভেতরে ভেতরে দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। কারণ এখনো এ দেশের বেশির ভাগ মুসলমান ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের কথা শোনে এবং মানে।

জনপ্রিয় ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের অপহরণ হওয়ার প্রক্রিয়া আজকের তরুণদের মাঝে দ্রæত ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তরুণমন প্রতিবাদী হয়ে উঠলে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক প্রভাব পুরো জাতির মধ্যে পড়তে বাধ্য। অন্য দিকে, যদি এসব অপহরণের উদ্দেশ্য হয় ইসলাম প্রচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা বা বন্ধ করে দেয়া, তবে তার বিপরীত ঘটনাটিই ঘটবে। ধর্মপ্রাণ তরুণদের একটি অংশ বরং নিজেদেরকে ইসলামী বক্তা বা ইসলাম প্রচারক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। কারণ ইসলামের ইতিহাস বলে, বাধার মুখে ধর্মপ্রাণদের উৎসাহ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। অন্য দিকে এসব অপহরণের প্রতিক্রিয়ায় মুসলমানদের একটি অংশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে উঠতে পারে। এই হতাশাগ্রস্তরাই পরবর্তী সময়ে চরমপন্থা বা উগ্রপন্থার পথ বেছে নেয়। সম্প্রতি মানবাধিকার নিয়ে আমরা একটু বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছি মার্কিন নেতৃত্বের বর্তমান একক বিশ্বব্যবস্থায়। কাজেই অপহরণের এই ঘটনাগুলো আমাদেরকে আরো বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে। অন্য দিকে এসব ঘটনার আড়ালে সুযোগসন্ধানী সন্ত্রাসীরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ব্যক্তিশত্রæ খতমের সুযোগও কেউ কেউ নেয়ার চেষ্টা করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সার্বিক বিবেচনায় উপরোক্ত প্রতিটি নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে হবে এবং নিখোঁজের ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত করে অপহরণকারী কারা ও তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, তাদের পেছনে কারা ছিল ইত্যাদি জাতির সামনে পরিষ্কার করলে তা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হবে। আর কাউকে কোনো কারণে গ্রেফতার করার প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অবশ্যই আইনি কাঠামোর মাধ্যমেই গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করলে তবেই এসব নিয়ে চলমান গুজব, অলীক গল্প, সরকারকে দোষারোপ করা ইত্যাদি নেতিবাচক চর্চা সমাজে বন্ধ হবে। তবে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, আর একজন ব্যক্তিও এ ধরনের অপহরণের শিকার হবে না।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: maksud2648@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement