২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আম কুড়ানোর দিন

-

বৈশাখ মাস শেষ শেষ। গাছে গাছে আমে রঙ এসেছে। অনেক আম পেকেছে। প্রচণ্ড রোদে অনেক আমে রঙ এসেছে সময়ের আগেই। ধান কাটা শেষের দিকে। বাড়ি বাড়ি ধান কাটার আমেজ। সেই সাথে গ্রীষ্মের খরতাপ। তালহা বাবা-মায়ের সাথে দাদুর বাড়ি এসেছে। স্কুল ছুটি। সেই সাথে গ্রামে ধানের কাজে দাদুকে সাহায্য করতে এসেছে। দাদু বাড়ি অনেক আম, কাঁঠাল ও লিচুগাছ আছে। গ্রামের চাচাতো ভাই মঈন। বাবার সাথে গ্রামেই থাকে ওরা। সমবয়সী হওয়ায় তালহা আর মঈন খুব ভালো বন্ধু। গ্রামের ছেলে হওয়ায় মঈন একটু বেশি চঞ্চল। গাছে ওঠে আম পাড়া। পানিতে ডুব দিয়ে সাঁতার খেলা বা বৃষ্টিতে ভেজা। এগুলো মঈনের নৃত্যদিনের কাজ। তবে এসবে তালহার অভ্যাস নেই। সেই সাথে আছে কৌতূহল। আজ ধান কাটা শেষ। এখন শুধু ধানের খড় শুকিয়ে পালা দেয়ার সময়। মাঠে মাঠে খড় শুকাতে দিয়েছে। সেই খড়ের উপর তালহা আর মঈন খেলা করছিল।

ক্ষণেই আকাশ কালো হয়ে এলো। সবাই ব্যস্ত খড়গুলো গুছাতে। যেন বৃষ্টির জলে আবার ভিজে না যায়। এদিকে তালহা আর মঈন চলে গেল। বাগানে লাল টকটকে আম গাছে ঝুলছে। আকাশে অনেক মেঘ সেই সাথে গুড়ুম গুড়ুম ডাক। এই ঝড় এলো বলে। তালহা ভয় পাচ্ছে। কিন্তু মঈন অভয় দিয়ে বলছে। ভয়ের কিছু নেই। ঝড় এলে ওই পাকা পাকা আম পড়বে। তখন আমরা আম কুড়াব আর মজা করে খাব। তালহার কিছুটা ভয় করলেও আনন্দও হচ্ছে। আগে কখনো ঝড়ের মধ্যে আম কুড়ায়নি। ঝড় শুরু হয়ে গেল। সেই সাথে বাগানে এলো আরো গ্রামের কিছু ছেলেমেয়ে। আকাশ, শিলা, শিমুল এসেছে আম কুড়াতে। গ্রামে ঝড়ের মধ্যে আম কুড়ানোর আসল মজা পাচ্ছে তালহা।

ঝড় শুরু হলো। এলোমেলো দমকা বাতাস। ধুলো এসে চোখেমুখে লাগছে। এসবে কোনো পাত্তা নেই কারো। একটু পর পর ঠুসঠাস আম পড়ছে আর সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ছে ধরতে। গাছ তালহাদের হলেও। ঝরেপড়া আম আগে যে ধরতে পারবে আম তার। এই নিয়মটিও তালহার খুব ভালো লাগল। এতটা আনন্দ তালহা আগে কখনো পায়নি। আম কুড়াতে কুড়াতে শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। তালহা বাড়ি যেতে চাইলেও মঈন আটকাল।
-এখনই তো আসল মজা! বৃষ্টি ভিজে ভিজে আম কুড়াব। তারপর পুকুরে গিয়ে গোসল করব। আকাশ বলল, চল আমাদের কাকাদের বাগানে যাই ওখানেও হয়তো অনেক আম পড়েছে। কাকাদের ধানের কাজ চলছে তাই কেউ আজ বাগানের দিকে আসবে না। যেই কথা সেই কাজ। সবাই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে এ বাগান থেকে ও বাগানে চলে গেল। অনেক আম পড়ে আছে কিন্তু এত আম নেবে কিভাবে? সবাই নিজেদের গায়ের জামা খুলে সেই জামায় করে আম নিতে থাকল। বৃষ্টি কমে আসছে। সবাই ভিজে জবজব অবস্থা। তালহার কাশি শুরু হয়ে গেছে। ওদিকে খড় তুলে সবাই যখন হাফ ছেড়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। তখন হঠাৎ ছেলেদের কথা মনে হলো। তালহা আর মঈন কোথায়? বাড়িতে তো নেই। খুঁজতে বের হবে এমন সময় তালহা আর মঈন বাড়িতে এসে হাজির। ওদের এই অবস্থা দেখে তালহার বাবা রাগারাগি শুরু করল। এমন সময় দাদু নুরুল সাহেব এসে ছেলেকে থামিয়ে বলল? ওর এই বয়সে তো তুমি নিজের পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় চলে যেতে আম কুড়াতে। আমি নিজেও এই বয়সে আম কুড়িয়েছি।
বৃষ্টি ভিজে কত ঠাণ্ডাজ্বর এসেছে। আম কুড়ানো যে কি আনন্দ আমার এখনো মনে পড়ে। বাবার কথায় তালহার বাবাও চুপ হয়ে গেল। নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। সত্যিই ছোটবেলায় আম কুড়াতে কতই না আনন্দ ছিল!


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের

সকল