১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


টুপু ও একঝাঁক দেশী পেঁচা

অলঙ্করণ : হামিদুল ইসলাম -

টুপুর দাদু গরিব উল্লাহ সাহেব গাঁয়ের বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তিদের একজন। পশুপাখির প্রতি তিনি খুব দয়াবান। পাখি পালতে পছন্দ করেন। তবে খাঁচায় আটকে নয়, গাছে গাছে পাখিদের জন্য খড় বিচালির বাসা তৈরি করে দিয়ে, ডালে ডালে হাঁড়ি বেঁধে দিয়ে। শহর থেকে গাঁয়ে এসে টুপুরা যে ঘরটিতে থাকে, সে ঘরটির ওপরকার ঝাঁকড়া কাঁঠালগাছে তিনি ১০টি হাঁড়ি বেঁধে দিয়েছেন। প্রতি হাঁড়িতে এক জোড়া করে দেশী পেঁচা থাকে। অর্থাৎ ২০টি পেঁচা থাকে গাছটিতে। পেঁচাগুলোর সাথে টুপুর দাদুর খুব বন্ধুত্ব। তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গাছটির নিচে দাঁড়ালেই পেঁচাগুলো হাঁড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ডালে ডালে বসে। তিনি কথা বললে পেঁচারা জবাব দেয়। তিনি যদি বলেন, পাখি তোদের নাম কী? ওরা সমস্বরে বলে, পেঁচু পেঁচু। তিনি যদি বলেন, পাখি তোরা খাস কী? ওরা বলে, পোকু পোকু (পোকা)। তিনি যদি বলেন, পাখি দেখি তোদের ডান চোখ; ওরা একযোগে মাথা বাম দিকে কাত করে ডান চোখ দেখায়। তিনি যদি বলেন, দেখি তোদের বাম চোখ; ওরা একযোগে মাথা ডান দিকে কাত করে বাম চোখ দেখায়। তিনি যদি বলেন, পাখি তোরা দুষ্টু; ওরা একযোগে মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে। তিনি যদি বলেন, পাখি তোরা বোকা; ওরা সাথে সাথে মাথা তুলে প্রথমে বড় বড় করে তাকায়। তারপর একযোগে পেঁচু পেঁচু শব্দে এমন শোরগোল পাকায় যে, কানে তালা লেগে যাওয়ার জোগাড় হয়। টুপুর দাদু যদি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন তো ওরা বোকা নয় প্রমাণ করতে শেষ পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে তুমুল ঠোকরাঠোকরি শুরু করে। ২০টি পেঁচার শোরগোল ও ঠোকরাঠোকরি; ওরে বাপরে বাপ! টুপুর দাদু ঠোকরাঠোকরি শুরু হওয়া মাত্রই বলেন পাখি, তোরা দুষ্টু। সাথে সাথে ওরা কোলাহল ও ঠোকরাঠোকরি থামিয়ে মাথা নিচু করে বসে। ঝিমানো শুরু করে।
শীতের ছুটিতে বাড়িতে এসে টুপু ওর দাদুর কাছ থেকে রীতিমতো পেঁচাদের সাথে কথা বলা শিখে গেছে। পেঁচারা এখন ওর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ও যা বলে পেঁচারা তাই শোনে। মাঝে মধ্যে ও বারান্দায় বসলে পেঁচারা উঠোনে নেমে ওর সাথে কথা জুড়ে দেয়। ওর সাথে এখানে সেখানে উড়েও যায়। সেদিন তো ও হেঁটে হেঁটে চলে গেল বাড়ির উত্তর দিকের শেষ সীমানায়। ওখানে থমকে দাঁড়াল। একটা কালো কুকুর দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীরের গা-ঘেঁষে। প্রাচীরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ভেতরে ঢুকেছে ও। টুপুকে দেখে কেমন করে তাকাল ও! তারপর ঘড়র ঘড়র শব্দে দাঁত বিজলে ছুট দিলো ওর দিকে। টুপু তো ভয়ে দিলো রীতিমতো চিৎকার।
টুপুর চিৎকার শোনামাত্র কাঁঠালগাছ থেকে একযোগে উড়ে গেল ২০টি পেঁচা। কুকুর আর যায় কোথায়! পেঁচাগুলো চার দিক থেকে ধরে বসল তাকে। কেউ মাথায় ঠোকর মারে, কেউ পেটে, কেউ পিঠে, কেউ লেজে, কেউ নাকে, কেউবা চোখে। দিশেহারা হয়ে কুকুর দিলো প্রাচীরের ফাঁকা দিয়ে ভোঁ-দৌড়।
টুপু এখন নিরাপদ। হেঁটে এসে ওই কাঁঠালগাছটির নিচে দাঁড়াল ও। পেঁচাগুলোও ওর মাথার ওপর দিয়ে উড়ে এসে গাছটিতে বসেছে। ওরা খুব মায়াবী চোখে টুপুর দিকে তাকাল। তারপর একযোগে ডেকে উঠল, টুপু! টুপু! টুপু!
টুপুর মুখে এখন হাসি। পেঁচাগুলোও মুচকি হাসছে।


আরো সংবাদ



premium cement
দুবাইয়ে বাংলাদেশীদের শত শত বাড়ি হলো কিভাবে সরকার দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে : নিতাই রায় সাভারে শিকল দিয়ে কুকুরের সাথে বেঁধে নির্যাতনের সেই মামুন গ্রেফতার ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সাহসিকতার সাথে তৎপরতা চালাতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান ট্যুরিস্ট ভিসায় ৩ দিন ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন না বাংলাদেশীরা রাশিয়ায় অস্ত্র রফতানির কথা অস্বীকার করেছে উ. কোরিয়া এফএলজেএফের সভাপতি মুন্না, সম্পাদক জাহিদ খাগড়াছড়িতে স্বর্ণালঙ্কারের লোভে চাচি শাশুড়িকে হত্যা ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন প্রতিরোধের দাবি রাশিয়ার আরো ২ দিনের তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বাবরকে চাপমুক্ত করতে চান কারস্টেন

সকল