০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিশ্ব নেতৃত্ব থেকে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার ১০০ বছর

- ছবি : সংগৃহীত

গত ৩ মার্চ উসমানী খেলাফত বিলুপ্তির ১০০ বছর পূর্ণ হলো। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের দৃশ্যপট থেকে মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ারও শত বর্ষ পূর্ণ হলো। ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ তুর্কি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আইন পাসের মাধ্যমে উসমানীয় খিলাফতের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে উসমানী সালাতানারে প্রায় ৭০০ বছরের গৌরবদীপ্ত ইতিহাসের অবসান ঘটে।

উসমানী সালাতানাতের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলে সেলজুক রাজবংশের জামাতা আর্তুগুল গাজি। তার ছেলে প্রথম উসমানের নামানুসারে উসমানী খেলাফতের নামকরণ করা হয়। ১৫২৬ সালে হাঙ্গেরি জয়ের মাধ্যমে ইউরোপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল উসমানীয় খিলাফতের অধীন হয়।

ষোল ও সতেরর শতক ছিল উসমানীয় খিলাফতের উত্থানকাল। বিশেষত সুলতান প্রথম সুলাইমানের সময় উসমানী খেলাফত দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ, উত্তরে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর, পশ্চিম এশিয়া, ককেসাস, উত্তর আফ্রিকা ও হর্ন অব আফ্রিকাজুড়ে, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব অঞ্চলসহ বিস্তৃত একটি শক্তিশালী বহুজাতিক ও বহুভাষিক সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। এ সময় উসমানী খেলাফত ৩৬টি প্রদেশ ও বেশ কিছু অনুগত রাজ্যে বিভক্ত ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানীয় খেলাফত বিলুপ্তি হলে খেলাফতের অধীন বলকান ও মধ্যপ্রাচ্যের সাবেক অংশগুলো ৪৯টি স্বাধীন রাষ্ট্রে আত্মপ্রকাশ করে।

১৮৭৬ সালে অভ্যন্তরীণ সমস্যায় বিধ্বস্ত ও আন্তর্জাতিক ঋণে জর্জরিত উসমানী খেলাফতের সুলতান ও মুসলিম বিশ্বের আমিরুল মুমিনিন বা খলীফা হিসেবে দায়িত্বে আসেন আবদুল হামিদ ছানী।

ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি সুযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সালতানাতকে পুনরায় শক্তিশালী করে তুলতে সচেষ্ট হোন।

খলীফা আবদুল হামিদ ছানী মুসলিম জাগরণের চেষ্টা করেন, এবং এতে তিনি সফলতাও দেখাচ্ছিলেন।

খলীফার মুসলিম জাগরণের গতিপথ রুদ্ধ করতে ১৮৮৯ সালে ”ইত্তিহাদ-ই-উসমানী জেমিয়েতি” বা “কমিটি অব অটোমান ইউনিয়ন” নামে একটি গোপন সংগঠনের জন্ম দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে ”কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেস” রাখা হয়।

এই সংগঠনের ব্যানারে খলীফা ও খেলাফতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে পশ্চিমাদের মদতপুষ্ট তুর্কি জাতীয়তাবাদীরা।

অর্থনৈতিকভাবে ঋণগ্রস্ত উসমানী খেলাফতকে ঋণমুক্ত করতে ইহুদীদের পক্ষ থেকে খলীফা আবদুল হামিদ ছানীকে ফিলিস্তিন বিক্রির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ইহুদীদের তৎকালীন প্রধান রাজনইতিক নেতা থিওডোর হের্জল জানান আল কুদস শহর বা জেরুসালেম যদি ইহুদীদের দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে উসমানী খেলাফতের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দেবে ইহুদীরা।

খলীফা অত্যন্ত দৃঢ়টার সাথে ইহুদীদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর ”কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেস”-এর মাধ্যমে ইহুদীদের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা ইমানুয়েল কারাসু খেলাফতের সেনাবাহিনীর মধ্যে সালতানাতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গ্রুপ তৈরি করতে শুরু করেন।

১৯০৬ সালের মধ্যে তারা হাজারো তুর্কি তরুণ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে খেলাফত বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।

এই সংগঠনের বেশীরভাগ সদস্য তরুণ হওয়ায় এটি ”ইয়াং তুর্ক” বা তরুণ তুর্কি নামে পরিচিত হয়ে উঠে। উসমানী সেনাবাহিনীর মধ্যে এই ইয়াং তুর্কদের বিশাল প্রভাব তৈরি হয়।

ততদিনে ইয়াং তুর্কদের প্রধান নেতা হয়ে উঠেন আনোয়ার পাশা, তালাত পাশা ও জামাল পাশা।

ফলশ্রুতিতে আনোয়ার পাশার নেতৃত্বে ১৯০৮ সালে সুলতান আবদুল হামীদ ছানীর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়।

১৯০৯ সালে খলীফা আবদুল হামিদ ছানীকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২৭ এপ্রিল পঞ্চম মুহাম্মাদকে ক্ষমতায় বসানো হয়।

পঞ্চম মুহাম্মাদকে ক্ষমতায় বসানো হলেও কার্যত পিছন থেকে ক্ষমতা পরিচালনা করতেন এই তিন পাশাই।

১৯১১ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে খেলাফতে উসমানী থেকে লিবিয়াকে দখল করে নেয় ইতালি। ১৯১২ সালে প্রথম বলকান যুদ্ধের মাধ্যমে বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, মন্টিনিগ্রো ও গ্রীস ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ফলে ইউরোপে উসমানী খেলাফতের অবস্থান শেষ হয়ে যায়।

১৯১৩ সালে আরো একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিন পাশা সরাসরি ক্ষমতা দখল করে নেয়। পরবর্তী পাঁচ বছর তারা এক দলীয় শাসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে রাখে।

এসময় সুলতান তার পদে বহাল থাকলেও কোনো নির্বাহী ক্ষমতা ছিলো না তার।

এর মধ্যে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে ইউরোপ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে রণাঙ্গনে নামে।

এক পক্ষে ছিলো অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়ার ও জার্মান সাম্রাজ্য। তাদের বলা হতো ”কেন্দ্রীয় শক্তি”।

অন্যপক্ষে ছিলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, সার্বিয়া, রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও আমেরিকা। এদের বলা হতো ”মিত্রশক্তি”।

খ্রিষ্টান প্রধান দুইটি বড় শক্তির লড়াইয়ের মধ্যে জড়ানোর আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয় খেলাফতে উসমানীর ৩ পাশা। উসমানী খেলাফত আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করে ”কেন্দ্রীয় শক্তি”র সাথে।

৪ বছর ধরে চলা যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয় হয় ”কেন্দ্রীয় শক্তি”র।

যুদ্ধের ফলে পুরো আরব বিশ্বসহ বেশীরভাগ অঞ্চল দখল করে নেয় ব্রিটিশ, আমেরিকা, ফ্রান্স-ইতালীয় জোট।

উপায়-অন্তর না দেখে সুলতান পঞ্চম মুহাম্মাদকে জেহাদের ডাক দিতে বাধ্য করে জাতীয়তাবাদী ও সেকুলার ৩ পাশা। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। বিধ্বস্ত খেলাফতে পুতুল খলীফার পক্ষে মুসলিমরা সেই অর্থে জেহাদে নামতেও পারেনি, যারা নেমেছে তারাও কোন সফলতা বয়ে আনতে পারেনি।

পরাজয় সন্নিকটে দেখে ”ইয়াং তুর্ক” সরকার পদত্যাগ করে এবং তিন পাশা বলে পরিচিত আনোয়ার পাশা, তালাত পাশা ও জামাল পাশা জার্মান যুদ্ধজাহাজে করে দারুল খেলাফত ইস্তাম্বুল ছেড়ে পালিয়ে যান।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুদিন আগে ১৯১৮ সালের জুলাই মাসে খলীফা পঞ্চম মুহাম্মদ ইন্তেকাল করেন। নতুন সুলতানের দায়িত্বে আসেন খলীফা ষষ্ঠ মুহাম্মদ।

১৯১৮ সালের ৩০ অক্টোবর দারুল খেলাফা বা খেলাফতের রাজধানী ইস্তাম্বুলে প্রবেশ করে সুলতানের প্রাসাদ দখল করে নেয় ব্রিটিশ বাহিনী। উসমানীয় সেনাবাহিনী ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিক পরাজয় স্বীকার করে।

যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ও মিত্রবাহিনী বাগদাদ, দামেস্ক ও জেরুজালেমসহ পুরো আরব অঞ্চল দখল করে নেয়। খেলাফতের অধিকাংশ অঞ্চল ইউরোপীয় মিত্রবাহিনী নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।

১৯২০ সালের ১০ আগস্ট খলীফার প্রতিনিধিরা মিত্র শক্তির সাথে সেভ্র চুক্তি স্বাক্ষর করে। সেনা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশার নেতৃত্বে তুর্কি জাতীয়তাবাদিরা এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল আঙ্কারায় কামাল পাশার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়।

১৯২২ সালের ১ নভেম্বর তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি থেকে উসমানী সালতানাত বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কামাল পাশা। ১২৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া উসমানী সালতানাতের বিলুপ্তি ঘটে এইদিন। সালতানাত বিলুপ্ত হওয়ায় সুলতান পদও বিলুপ্ত হয়ে যায়।

অর্থাৎ সুলতান উসমানের মাধ্যমে শুরু হওয়া সিলিসিলা ষষ্ঠ মুহাম্মাদের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

সুলতান পদ বিলুপ্ত করলেও শুরুতে খলীফা পদ বহাল রাখেন কামাল পাশা।

দারুল খেলাফত ইস্তাম্বুল থেকে ষষ্ঠ মুহাম্মাদকে মাল্টায় নির্বাসনে পাঠানোর পর ১৯ নভেম্বর খলীফা পদে দায়িত্বে আসেন দ্বিতীয় আবদুল মাজিদ।

১৯২৩ সালের ২৪ জুলাই মোস্তফা কামাল পাশার নেতৃত্বে মিত্রশক্তির সাথে লুজান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে আঙ্কারাকে রাজধানী করে তুরস্ককে প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে খলীফা আবদুল মাজিদ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। খেলাফতের শাইখুল ইসলাম তুরস্ক রাষ্ট্র গঠনকে অনৈসলামিক বলে ফতোয়া জারি করেন। পরবর্তীতে কামাল পাশার চাপে খলীফা নির্বাচন দিতে বাধ্য হোন। নির্বাচনে কামাল পাশার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদীরা জয়ী হয়।

খেলাফত ব্যবস্থা পুনরায় কার্যকর করার লক্ষ্যে তৎকালীন ভারতবর্ষে মুসলিমরা বিশাল আন্দোলন গড়ে তুলে। যা ইতিহাসে খেলাফত আন্দোলন বা খেলাফত মুভমেন্ট নামে পরিচিত।

যেহেতু খেলাফত বিলুপ্তির পিছনে মূল কলকাঠি নেড়েছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, এবং ভারতও তখন ব্রিটিশদের হাতে, তাই এই আন্দোলনের বিশাল প্রভাব তৈরি হয়েছিলো বিশ্বব্যাপী।

এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন সব ধারার শীর্ষ আলেম-উলামারা। বিশেষ করে শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মুহাম্মদ আলি জওহার, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা আতাউল্লাহ শাহ বোখারী, মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, হাকিম আজমল, মাওলানা হাসরাত মোহানীসহ অনেকে। এই আন্দোলনে কংগ্রেস নেতা মহাত্মা গান্ধীও অংশ নিয়েছিলেন।

খেলাফত আন্দোলনের পক্ষ থেকে তুরস্কের জনগণের মধ্যে ইসলামী খেলাফতের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য কিছু কার্যক্রম চালানো হয়। এর অংশ হিসেবে তুর্কিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

উগ্র সেকুলার কামাল পাশার পক্ষ থেকে খেলাফতের পক্ষে চালানো এই প্রচারণাকে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতি অপমান ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

এবং এই ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ তুরস্কের পার্লামেন্ট থেকে খেলাফতে উসমানীকে বিলুপ্ত করা হয়। একই সাথে খলীফা দ্বিতীয় আবদুল মাজিদকে নির্বাসনে পাঠায় কামাল পাশা।

বর্তমান সময়টা চলছে ২০২৪ সাল। আজ থেকে ১০০ বছর আগে খিলাফত তথা ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা চির তরে ইতিহাসের নদে হারিয়ে যায়। কিয়ামতের আগে আবারো খিলাফত বা ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু হবে। রসুল সা. এর হাদিস থেকে জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের গুপ্তধনের নিকট তিনজন লোক ঝগড়া করবে।

প্রত্যেকেই হবে খলিফার পুত্র। কেউ তা দখল করতে পারবেনা। অতঃপর পূর্বের দিক থেকে কালো পতাকাধারী একদল সৈনিক আসবে। তারা ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালাবে। হাদিছের বর্ণনাকারী বলেন, এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কিছু বিষয়ের কথা বর্ণনা করলেন যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তোমরা যখন তাদেরকে দেখতে পাবে তখন তাদের নেতার হাতে বায়াত করবে। যদিও বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে উপস্থিত হতে হয়। কেননা তিনি হলেন আল্লাহর খলিফা মাহতিদ। (ইবনে মাজাহ, অধ্যায় কিতাবুল ফিতান)

হাফেজ আবুল হাসান আল-আবেরি রহ. বলেন, মাহদি সম্পর্কিত হাদিছগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। তিনি আহলে বায়ত তথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশধরের অন্তর্ভুক্ত হবেন। সাত বছর রাজত্ব করবেন। তার রাজত্বকালে পৃথিবী ন্যায়-ইনসাফে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তার রাজত্বকালে ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. আগমন করে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। ঈসা আ. তার পিছনে নামাজ পড়বেন। (আত তাহজিবুল কামাল ফি আসমায়ির রিজাল ৩-১১৯৪)

 


আরো সংবাদ



premium cement