২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিরাজগঞ্জে নদীতে বিষাক্ত বর্জ্যে মাছচাষিদের কোটি টাকার ক্ষতি

সিরাজগঞ্জে নদীতে বিষাক্ত বর্জ্যে মাছচাষিদের কোটি টাকার ক্ষতি। - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জে রায়গঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত ফুলজোর নদীতে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলায় মারা যাচ্ছে খাঁচা ও নদীর মাছ। কারখানার কেমিক্যালে পানি দূষণের ফলে হুমকির মুখে পরিবেশ। মাছচাষিদের দাবি, মাছ মরে যাওয়ায় তাদের দুই থেকে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

রোববার (২৮ মে) সকালে উপজেলার রায়গঞ্জ পৌরসভার ধানগড়া, চান্দাইকোনা, ঘুড়কা, সাহেবগঞ্জ, ফরিদপুর, নলছিয়া, তিননান্দিনা, বকুলতলা, নলকা এলাকায় দেখা যায় যে নদীর পানির রং বদলে গেছে এবং খাঁচা ও নদীর মাছ মরে ভেসে উঠছে।

স্থানীয়রা জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে পানির রং বদলে নীল আকার ধারণ করেছে। রোববার সকালে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখা যায়।

উপজেলার ফুলজোর নদীতে খাঁচায় মাছচাষ করা আব্দুস সালাম, আসাদুল ইসলাম, তুজাম, হাসেম, মাসুদ, লোকমান, ফরিদুল, জহুরুল, জয়নাল, সুজনসহ স্থানীয় ৫১ জন বেকার যুবকরা প্রায় এক হাজার ২০০ খাঁচায় দীর্ঘ দিন ধরে মাছ চাষ করেন।

তাদের দাবি, নদীটির উজানে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার এসআর কেমিক্যাল ও মজুমদার ফুড প্রোডাক্ট নামে দু’টি শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলায় পানি দূষিত হয়েছে। এ কারণে তাদের খাঁচার মাছ ও নদীর বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণি মারা যাচ্ছে।

স্থানীয় গৃহবধূরা জানায়, দু’দিন ধরে নদীর পানি এমনভাবে দূষিত হয়েছে যে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’-এর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ওই দু’টি কারখানার বিরুদ্ধে শেরপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলার সচেতন মানুষ প্রতিবাদ, আন্দোলন করলেও নদীদূষণ বন্ধ হয়নি।’

তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে স্থায়ী প্রতিকারের অনুরোধ জানিয়ে পরিবেশ বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় অবস্থিত মজুমদার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির সহযোগী ম্যানেজার এইচআর অ্যাডমিন রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের কারখানার কারণে নদী দূষণ হচ্ছে এবং আমরা আমাদের কোম্পানির কেমিক্যাল এসআর কেমিক্যাল কারখানা থেকে ক্রয় করি। এক্ষেত্রে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।’

তিনি আরো বলেন, পরিবেশ অধিদফতর তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।

শেরপুর উপজেলার এসআর কেমিক্যাল কারখানার সিকিউরিটি ইনচার্জ কিবরিয়া বলেন, ‘আপনাদের সাথে আমাদের স্যার সেন্টু ফোনে কথা বলবেন।’

গণমাধ্যম-কর্মীরা সেন্টু নামের কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার ফোন করলেও দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. হাফিজুর রহমান বলেন, কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যের কারণে গ্যাস হওয়ায় খাঁচায় চাষের মাছ মারা যাচ্ছে।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃপ্তি কণা মণ্ডল বলেন, ‘জানতে পেরেছি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার দু’টি কারখানার বর্জ্যে পানি দূষিত হয়ে নদীর সকল মাছ মরে যাচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি। পরিবেশের এডি এসে স্যাম্পল নিয়ে গেছেন এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement