০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রাবিতে গণহারে নিয়োগ বাতিল চান প্রগতিশীল শিক্ষকরা

রাবিতে গণহারে নিয়োগ বাতিল চায় প্রগতিশীল শিক্ষকরা - ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অস্থায়ী ভিত্তিতে গণহারে দেয়া নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকরা। নিয়োগকে বিধিবহির্ভূত ও অবৈধ উল্লেখ করে এর সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিও তুলেছেন তারা।

শনিবার দুপুরে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের স্টিয়ারিং কমিটির’ ১৬ সদস্যের সই করা এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিধিবহির্ভূত ও অবৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর দায় বিদায়ী ভিসি ও তার সহায়তাকারীদেরই নিতে হবে বলে প্রগতিশীল শিক্ষকরা মনে করেন।’

তারা বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগের বিরোধী নই। কিন্তু এ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি মোতাবেক হতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের চাহিদা ছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা কোনো লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের পক্ষে আমরা নই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বায়ত্তশাসনের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থনৈতিকভাবে ভিসির লাভবান হওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লজ্জিত করেছে।’

প্রগতিশীল শিক্ষকদের দাবি, অতীতে তারা বহুবার সদ্য বিদায়ী ভিসির ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিষয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করে তার অপসারণ দাবি করেছেন। দাবি মেনে তাকে তখনই অপসারণ করা হলে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো বলে মনে করেন তারা।

শিক্ষকরা আরো বলেন, ‘সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা অনেক দিন আগে থেকেই ছিল। এরপরও চাকরির মেয়াদের শেষ দিনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু অশান্ত ও অস্থিতিশীল করেনি, বরং দেশ ও জাতির সামনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে। আমরা অবৈধ এসব নিয়োগ বাতিল দাবি করছি। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে অরাজক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, সদ্য সাবেক ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ অবৈধ এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা গেলে ক্যাম্পাসে সুশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস প্রগতিশীল শিক্ষকদের।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন অধ্যাপক তরিকুল হাসান, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহানুর রহমান, অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্লাহ ও অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ১৬ জন শিক্ষক।

এর আগে সদ্য বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনা ২৫টি অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশনা দেয়। তবে তা উপেক্ষা করেই ৬ মে মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন ভিসির ক্ষমতাবলে ১৪১ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন ভিসি এম আব্দুস সোবহান। এর পরপরই তিনি পুলিশ প্রহরায় ক্যাম্পাস ছাড়েন। তবে ভিসি বিদায় নেয়ার পর ওই নিয়োগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরপর প্রগতিশীল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিতর্কিত নিয়োগ বালিতের দাবিতে বিবৃতি এলো।


আরো সংবাদ



premium cement