২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্লিন ইমেজ : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার প্রথম শর্ত?

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের - ছবি : সংগ্রহ

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলটিতে এখন বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে এবং দলীয় সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, আসন্ন ডিসেম্বরের সম্মেলনে সভানেত্রী হিসেবে জীবন্ত কিংবিদন্তী শেখ হাসিনাই বহাল থাকবেন। তবে সাধারণ সম্পাদক এবং অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কোনো পরিবর্তন হবে কিনা বা হলে কারা আসবেন বা বাদ পড়বেন, সেটাই প্রধান প্রশ্ন। এ নিয়ে নানা আঙ্গিকে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে।

যেকোনো উচ্চ মার্গের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মৌলিক গুণাবলীর মধ্যে সততা, দক্ষতা, দেশপ্রেম ও দূরদৃষ্টি ও চরিত্র থাকতে হয়। আওয়ামী লীগের হয়ে যারা সাধারণ সম্পাদক অতীতে হয়েছেন, তাদের প্রত্যকের মধ্যে এই সকল গুণ বিদ্যমান ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাজউদ্দীন আহমেদ ছিলেন। সৈয়দ আশরাফের মতো নির্লোভ সত্তার চরিত্রও এই পদে ছিলেন।

দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে তিনি ওই পদে এসেছিলেন। তিনি কি ওই পদে বহাল থাকবেন? যদি থাকেন, তবে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না। কিন্তু যদি না থাকেন, তবে তার উত্তরসূরি কে হবেন, সে প্রশ্নটি অবধারিতভাবেই এসে যায়।

আওয়ামী লীগের রাজনীতির অন্দরমহলের সাথে যারা পরিচিত, তাদের মতে, ওই পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ সবচেয়ে বেশি করছেন জাহাঙ্গীর কবীর নানক। এর সাথে বাহাউদ্দীন নাসিমের নামটিও শোনা যাচ্ছে।। তাছাড়া সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মিছিলে যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আব্দুর রহমান ও দীপু মনি। এছাড়াও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বর্তমানে দলের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ ও মির্জা আজমও আগ্রহীদের মধ্যে নাম ঢুকিয়েছেন বলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সাক্ষ্য দিচ্ছে।

আলোচনা আছেন প্রধানমন্ত্রীর স্বজনখ্যাত দুই নেতার নামেও। এদের একজন ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপস। অন্যজন, নূর ই আলম চৌধুরী।

আবার এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নামও সামনে আসছে। তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। তার পিতা জাতীয় নেতা এ এইচ এম কামারুজ্জামানও আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। এমনিতে চাউর আছে, প্রতিটি সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে কে ভালো হতে পারেন- তার একটি ইঙ্গিত বার্তা আঙ্গিকে শেখ হাসিনা দিয়ে দেন। তবে তিনি গণতান্ত্রিক পছন্দে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোক- সেটিও প্রত্যাশা করেন।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে বাহাউদ্দীন নাসিম বলেছেন, আগামী বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং রাজনৈতিক অপশক্তি রুখতে একজন কার্যকর সাধারণ সম্পাদককেই দল বেছে নেবে।

অন্যদিকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক দলীয় সভানেত্রীর কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে গণমাধ্যমকে বলছেন, শেখ হাসিনা সম্মেলন নিয়ে কাজ করছেন। এমন বক্তব্যে দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে কি না, নতুন প্রশ্ন চলে আসে।

সাংস্কৃতিক মনোবোধের সাথে রাজনৈতিক সুবোধের একটা সুসমন্বয় আওয়ামী লীগ আজীবন রক্ষা করে গেছে। আজকের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন ২০১৬ সালে সাধারণ সম্পাদক হন, দলের চাহিদা পূরণ করে নিজ যোগ্যতায় তিনি উত্তীর্ণ হন। সময় বলবে, দলের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ নেতাটি কে! কারণ, আওয়ামী লীগে রাতারাতি পদ নিয়ে বড় নেতা হওয়া যায় না। দলের বর্তমান ৮১ সদস্যের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিষয়ভিত্তিক সম্পাদক পদে কোনো কোনো নেতা দীর্ঘদিন ধরে আছেন। তাদের অনেকে এবার বাদ পড়তে পারেন।

লেখক : বিশেষ প্রতিনিধি, নয়াদেশ; প্রকাশক : বাংলাদেশ জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশনা


আরো সংবাদ



premium cement