২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যাংকের প্রণোদনা ও খেলাপি ঋণ আদায়ে মন্থরতা

-

প্রণোদনা ও খেলাপি ঋণ আদায়ে ধীরগতি ব্যাংকগুলোকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। করোনার ক্ষতি মোকাবেলার জন্য গত বছর (২০২০) এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষিত হয়। সে আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিমালা জারি করে। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত ৩০ জুন ২০২১ প্যাকেজের প্রথম দফার মেয়াদ শেষ হয়।

বর্তমানে প্রথম দফা প্রণোদনার আদায়ের সময় চলমান। কিন্তু প্রণোদনা ঋণ আদায় আশানুরূপ হচ্ছে না। কোনো কোনো গ্রাহক ভাবছেন, এটা না দিয়ে পারা যায় কি না। ফলে ইতোমধ্যে চলমান সাধারণ ঋণের বকেয়া বৃদ্ধির পাশাপাশি বিতরণকৃত প্রণোদনার ঋণ আদায়ে মন্থরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে অনাদায়ী (ওভারডিউ) অর্থের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রাহকের পাশাপাশি নতুন ও ভালো গ্রাহকদেরও ঋণ পরিশোধে শৈথিল্য দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর ওভারডিউ ও খেলাপি ঋণের হার বেড়েই চলেছে।

প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাবে ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার ঘাটতিতেও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে শিথিলতা আরোপ করে। এ শিথিলতার কারণে ঋণ পরিশোধ না করলেও কাউকে খেলাপি বলা যাচ্ছে না। সম্প্রতি ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রেও ২৫ শতাংশ ঋণের কিস্তি পরিশোধে সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত বছরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে ২০২০ সালে পুরো সময় ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পান গ্রাহকরা। পরে করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখতে চলতি বছরের জুন মাসে ঋণের কিস্তির ন্যূনতম ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বা গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ বছর ৩১ আগস্ট এর মধ্যে পরিশোধ করলে ওই সময়ে ঋণ শ্রেণিকরণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক; কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সুযোগ আবারো চার মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ঋণের বিপরীতে জানুয়ারি ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিগুলোর ন্যূনতম ৫০ শতাংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের মধ্যেও পরিশোধ করা হলে ওই সময়ে ঋণগুলো বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির অবশিষ্টাংশ বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে প্রদেয় হবে। এ ছাড়া অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে। করোনার কারণে ঋণ খেলাপিরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। ঋণ পরিশোধের চাপ থেকে মুক্ত আছেন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা। এতে ব্যাংকের আয় না বেড়ে কৃত্রিম আয় বাড়ছে।

ব্যাংক সম্পদের গুণগত মানও কমে যাচ্ছে। বিদায়ী অর্থবছরে প্রণোদনা প্যাকেজের ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৫ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এতে প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগী হয়েছে- ৯৫ হাজার ৭৩৩ জন। প্রণোদনার টাকা ৭৭ শতাংশ বিতরণ হলেও বড় বড় ব্যবসায়ীরাই বেশি পেয়েছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রকৃত অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা কমই পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সঠিক তদারকিরও ঘাটতি ছিল। তার পরও বলব প্রণোদনার মাধ্যমে সরকারের এ উদ্যোগ অর্থনীতিকে আরো বেশি ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে। ব্যবসায়ীরা এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সেজন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রণোদনার অর্থ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণোদনার সার্কুলার অনুযায়ী গ্রাহক যথাসময়ে প্রণোদনার অর্থ মুনাফাসহ পরিশোধ না করলে গ্রাহকের চার শতাংশ হারে মুনাফা পরিশোধের যে সুবিধা তা বাতিলে হয়ে যাবে এবং গ্রাহককে ৯ শতাংশ হারেই মুনাফা দিতে হবে তা ছাড়া সময়মতো (ডিউটাইমে) পরিশোধ না করলে ২ শতাংশ জরিমানাও দিতে হবে। ইতোমধ্যে শোনা যাচ্ছে কোনো কোনো ব্যবসায়ী এ প্রণোদনা ঋণের দীর্ঘমেয়াদি কিস্তি সুবিধা চাচ্ছেন।

দ্বিতীয় দফায় প্রণোদনা তহবিল আরো ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা চলতি বছরে (২০২১) ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাবসায়ীদের দাবির মুখে ও প্রণোদনার অর্থ দ্রুত বিতণের জন্য অভ্যন্তরীণ ঋণঝুঁকির রেটিং পদ্ধতি (আইসিআরআরএস) স্থগিত করেছে। এটা শুধু প্রণোদনা প্যাকেজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দ্বিতীয় দফা প্রণোদনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মেয়াদি ঋণ নিতে পারবে। মাঝারি ব্যবসায়ীরা মেয়াদি ঋণ নিতে পারবে না। মূলধন ঋণ নিতে পারবে। চলতি মূলধন ও মেয়াদি ঋণ মাসিক/ত্রৈমাসিক কিস্তিতে আদায় করা যাবে। এবারের বরাদ্দে ৭০ শতাংশ দিতে হবে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের, ৩০ শতাংশ দিতে হবে মাঝারি উদ্যোক্তাদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয় দফায় প্রণোদনার টাকা বিতরণে আরো বলা হয়েছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দের ৭০ শতাংশের মধ্যে ৬৫ শতাংশ সেবা ও উৎপাদন খাতে ও ৩৫ শতাংশ ট্রেডিং ও ব্যবসা খাতে দিতে হবে। মাঝারি উদ্যোক্তাদের ৩০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে দিতে হবে। প্যাকেজের ৮ শতাংশ দিতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের।

প্রথম দফায় বিতরণ করা প্রণোদনার অর্থ যথাসময়ে আদায় না হলে ব্যাংকগুলোর ওভারডিউ আরো বেড়ে যাবে, ফলে দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণে উৎসাহ হারাবে, যার লক্ষণ ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে ঋণ আদায়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করা দরকার।

করোনা মহামারীর কারণে দেশের ৩০ শতাংশ মানুষের আয় অর্ধেক হয়ে গেছে। মহামারীর আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা আর লকডাউনের কারণে এ অবস্থা। লকডাউন মূলত স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সংক্রমণ কমানোর জন্যই; কিন্তু মানুষ লকডাউনে যতটা লক হওয়ার কথা তা না হয়ে বরং অর্থনীতির লকডাউন হয়েছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি অনেকের নজর ছিল না, তারা কাজ হারিয়েছে, শহর থেকে গ্রামে চলে গেছে, বেকার হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। কেউ সঞ্চয় ভেঙে খেয়েছে। সড়ক, নৌপথ ও বিমানপথের শ্রমিক ও প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দোকানপাট, হোটেল রেস্তোরাঁ ও পর্যটন খাত। এ খাতের অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে তাদের আয়ও কমে গেছে, ঋণগ্রস্ত হয়েছে অনেক। মধ্যবিত্তদের অবস্থা আরো খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে। এখন করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি দেখা দিলেও যেকোনো সময় সংক্রমণ বাড়তে পারে। কারণ প্রয়োজনীয় করোনা টিকা এখনো আমাদের সংগ্রহে নেই। যত দ্রæত সম্ভব করোনার টিকা সংগ্রহ করে হোক, উৎপাদন করে হোক বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় এনে অনিশ্চয়তা কাটানোর উদ্যোগ নিতে হবে। দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার অর্থ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও গতিশীল করতে সহায়ক ভ‚মিকা রাখতে পারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে ব্যাংকারদের মতে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ করলে বেশির ভাগই আদায় হয়, বিপরীত চিত্র বড় উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে। বেশির ভাগ বড় উদ্যোক্তা ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করেন না। বিতরণকৃত ঋণ যথাসময়ে আদায় না হলে সামগ্রিক ঋণ বিতরণে এর প্রভাব দেখা দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে ঋণ পরিশোধের নানা শিথিলতার পরও চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছয় হাজার ৩৫১ কোটি বেড়ে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি হয়েছে। মোট ঋণের যা ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে (২০২০) এ খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বাড়ার সাথে সাথে প্রভিশন বা শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে অর্থসংস্থানে ঘাটতি বেড়েছে। আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তার প্রয়োজনে ঋণের শ্রেণিমান বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্ধারিত হারে ব্যাংকগুলোর মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হয়।

কোনো ব্যাংক ঘাটতি থাকা অবস্থায় সাধারণত লভ্যাংশ দিতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাচ-২১ শেষে ব্যাংক খাতের মোট প্রভিশন রাখার কথাছিল ৬৮ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। তবে তা সংরক্ষণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা। যে কারণে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, ঋণ আদায়ের হার হ্রাস, প্রভিশনে ঘাটতি তা ছাড়া সর্বোপরি করোনায় ব্যবসা বাণিজ্য ও উৎপাদনে নিম্নমুখিতায় বেসরকারি বিনিয়োগে ধাক্কা লেগেছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাত কমে গেছে বেসরকারি বিনিয়োগ।

এ বিনিয়োগের হার দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জিডিপির ৩০ শতাংশের মতো বেসরকারি বিনিয়োগ দরকার। অথচ করোনার আগের বছরগুলোতেও বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ২২ থেকে ২৩ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সামরিক হিসাবে গত অর্থবছরে (২০২০-২১) চলতি বাজারমূল্যে দেশে মোট বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে ছয় লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৪ কেটি টাকার। বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি বোঝার অন্যতম সূচক হলো শিল্পঋণ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় শিল্পঋণ কমে যায় ৮ শতাংশের বেশি। আর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শিল্পঋণ বিতরণ কমে প্রায় ৩১ শতাংশ। গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এখন ক্রমান্বয়ে করোনার পরিস্থিতি কমে আসছে।

এখনই শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেই ভ‚মিকা পালন করতে হবে। এ অবস্থায় ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের আদায় না বাড়লে, খেলাপি ঋণ বাড়লে বিনিয়োগে মন্দা দেখা দিতে পারে। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। কারণ ব্যাংকের মুনাফা না বাড়লে ব্যাংক ঋণ দিতে পারবে না। তাছাড়া সব ঋণের সুদের হার একরকম হওয়া উচিত নয়।

কোনো ঋণ স্বল্পমেয়াদে, কোনো ঋণ দীর্ঘ মেয়াদে, সে আলোকে ঋণের সুদের হার ঠিক হওয়া উচিত। সুদ হার মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বাজারভিত্তিক হওয়া উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের মে পর্যন্ত দেশে বেসরকারি খাতে ঋণ স্থিতি ছিল ১১ লাখ ৭১ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। গত ২০২০ সালের মে-তে ছিল ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। মে ২০২১ পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ৮২ হাজার ২৫১ কোটি টাকা, যা ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। দেশে বিদ্যমান ঋণখেলাপি কমাতে হলে ও তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ঋণ ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন দরকার। এটি একটি পুঞ্জীভূত সমস্যা, জাতীয় সমস্যা। শুধু আইন প্রণয়ন ও মামলা করে এ ঋণ আদায় করা সম্ভব নয়। ছদ্মবেশী খেলাপি ঋণ দূর করতে হবে। এটি মারাত্মক সমস্যা। ব্যাংকারদের ঋণ প্রদানে সঠিক নিয়ম মানা উচিত। ঋণ জালিয়াতি রোধ করে দুর্নীতিবাজদের কঠিন সাজার আওতায় আনার পাশাপাশি ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহকদের ঋণসুবিধা বন্ধ করতে হবে। সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে হলে ব্যাংকিং খাতের সম্পদের গুণগতমান বাড়াতে হবে। ওভারডিউ ও খেলাপি ঋণের হার কমাতে হবে। সিএমএসএমই খাতে বিনিয়োগ প্রদানের পাশাপাশি শিল্পঋণ বাড়াতে হবে। শিল্পে উৎপাদনের গতি আনতে হবে। করোনায় দীর্ঘদিন অনেক অফিস ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন সেখানে কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তা ছাড়া দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন ও প্রতিনিধিরা খেলাপি ঋণ ও প্রণোদনার টাকা আদায়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসা উচিত।

লেখক : ব্যাংকার
ই-মেল : main706@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement

সকল