গ্রামীণ টিভির একটি প্রতিবেদন ভাইরাল হয়েছে যা ফেসবুকের মাধ্যমে দেখলাম। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার গজারিয়া গ্রাম নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সেই গ্রামে ১২ বছর ধরে দুই পক্ষের মারামারিতে গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। খুন-খারাবি, লুট, ধর্ষণ, মাদকের কারবার গ্রামটিতে অনবরত চলে আসছে। এক দলের লোক আদালত থেকে জামিনে এসে আরেক দলের লোকদের বাড়িতে লুটপাট, ধর্ষণ, খনু-খারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। আবার অন্য আরেক দলের লোকও জামিনে এসে অনুরূপ কাজই করে চলছে। পুলিশের উপস্থিতিতেই এ জাতীয় ঘটনা ঘটে চলেছে।
এতে পুলিশ বাদি হয়েও দুই পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। কিন্তু সফল হচ্ছে না। গ্রামের নিরীহ মানুষগুলো এখন দিশেহারা হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। অন্য দিকে গত ৯ জুন দৈনিক নয়া দিগন্তের তৃতীয় ও চতুর্থ পৃষ্ঠায় দেখলাম সেই গজারিয়া গ্রামেই কবি আবুতালেব মিয়া ১৯৫১ সালের ৯ জুন জন্মগ্রহণ করেছেন। যিনি বিশ্ববাসীকে শান্তির পথে আহ্বান করেছেন তার লেখনীর মাধ্যমে। মানবতার সেবাই যার লেখনীর মূল উদ্দেশ্য অথচ তার সেই জন্মস্থানেই জ্বলছে অশান্তির দাবানল।
আমরা মানুষ, আমাদের পথ প্রদর্শক ছিলেন নবী-রাসূলরা। তাদের অনেকের জন্মস্থানও ছিল বিভীষিকাময়। তা ছাড়া অনেক নবীর আমলে শাসক ছিলেন হিংস্র ও ভয়ঙ্কর, যেমন মুসা আ:-এর আমলে শাসক ছিল ফেরাউন। ফেরাউন মুসা আ:কে হত্যা করতে গিয়ে নিজেই সদলবলে নীল নদে ডুবে মারা যায়। আরেক শাসক ছিল নমরুদ। তার শাসনামলে ইবরাহিম আ:কে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা করার চেষ্টা সফল হয়নি। অথচ সামান্য মশার আক্রমণে শেষ হয় নমরুদ। সর্বশেষ আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সা: যখন মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন তখনকার সমাজপতি ও শাসকরা তার ওপর এমন জুলুম শুরু করল যে- রাতের অন্ধকারে তিনি ঘরবাড়ি, দেশ ছেড়ে মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হলেন। এককথায়, আরব ছিল তখন আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে। এখন কথা হলো- যুগে যুগে মানুষের মুক্তির জন্য আল্লাহ নবী-রাসূলদের পাঠিয়েছেন। লেখনীর মাধ্যমে ভঙ্গুর সমাজ ও জাতিকে পথের দিশা দেখাতে পারে। কবিদের লেখায় উজ্জীবিত হয়ে মানুষ শান্তির পথ গ্রহণে আগ্রহী হতে পারে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী যেমন আমাদের সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগায়। এমন আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে। তাই তাদের জন্মভূমি বা জন্মস্থান এবং সে এলাকার মানুষ অত্যাচারী হওয়াই স্বাভাবিক।
পুলিশ এ গ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত সফল হয়নি। ভাঙ্গা থানা বা স্থানীয় প্রশাসন নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তাই সরকার পুলিশের বিশেষ সংস্থা পিবিআই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থাকে এ কাজে ব্যবহার করতে পারে। সাধারণ মানুষের ওপর যারা অত্যাচার করে, যাদের দ্বারা সমাজ কলুষিত হয় তাদেরকে নিবৃত্ত করার নির্দেশ ধর্মেও রয়েছে। তদন্ত করার পর যাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে তাদের কারাগারে রেখে বিচার শেষ করতে হবে।
কবি আবু তালেব মিয়ার জন্মস্থান গজারিয়া গ্রাম আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের দায়িত্ব আছে বলে আমি মনে করি। যেকোনো মূল্যে গ্রামটি থেকে দাঙ্গামুক্ত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা