২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসরাইলি স্পাইওয়্যার দিয়ে উগান্ডার মার্কিন দূতাবাসে নজরদারি

-

উগান্ডায় মার্কিন দূতাবাসের ১১ কর্মীর আইফোন হ্যাকে ইসরাইলের এনএসও গ্রুপের বানানো স্পাইওয়্যার ব্যবহৃত হয়েছে বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত কয়েকজন জানিয়েছেন। এনএসওর প্রযুক্তি বিভিন্ন দেশের সরকার ভিন্নমত দমনে কাজে লাগাচ্ছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলি এ কোম্পানিকে মাসখানেক আগে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের ওপর নজরদারিতে ইসরাইলি কোম্পানির স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহারের বিষয়টি শুক্রবার প্রকাশ্যে আসে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারিতে পেগাসাসার ব্যবহারের অভিযোগ এটিই প্রথম। বলা হয়, পেগাসাস যদি একবার আপনার ফোনে ঢোকার পথ করে নিতে পারে, তা হলে আপনার অগোচরে সে আপনার ফোনকে পরিণত করবে ২৪ ঘণ্টার এক নজরদারির যন্ত্রে। ফোনে যত মেসেজ আসুক বা পাঠানো হোক, পেগাসাস তা কপি করে পাঠিয়ে দিতে পারবে নির্দিষ্ট জায়গায়। ফোনে থাকা ছবির ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। এ সফটওয়্যার ফোন কল রেকর্ড করতে পারে, এমনকি ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে গোপনে আপনার ভিডিও ধারণ করতে পারে।
আপনি হয়তো হাতের কাছে ফোন রেখে কারো সাথে কথা বলছেন। পেগাসাস আপনার ফোনের মাইক্রোফোনকে জাগিয়ে তুলে আপনার অজান্তেই সেই আলাপ রেকর্ড করে ফেলতে পারে। ‘থথটার্গেটেড ব্যক্তি’ কোথায় আছেন, কিংবা কোথায় গিয়েছিলেন, কার সাথে দেখা করেছিলেন, সেসব বিষয়ও পেগাসাস চিহ্নিত করার ক্ষমতা রাখে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উগান্ডার মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি এনএসও চালিয়েছে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি; সম্ভবত কোম্পানিটির কোনো এক গ্রাহক, ধারণা করা হচ্ছে বিদেশি কোনো দেশের সরকার এ হ্যাকিংয়ের নির্দেশ দিয়েছিল।
দূতাবাসকর্মীদের ফোন হ্যাকে এনএসও’র পেগাসাস ব্যবহারের বিষয়টি এমন একসময়ে এলো যখন ভিন্নমতাবলম্বীদের লোকেশন জানা, তাদের কথোপকথন শোনা এবং তাদের ফোনে থাকা ফাইল গোপনে ডাউনলোডের উদ্দেশ্যে নজরদারি সফটওয়্যার বানানো ইসরাইলি কোম্পানিগুলোর ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করেছে। হোয়াইট হাউজে কয়েক দিন পর হতে যাওয়া একটি সম্মেলনে এ ধরনের সফটওয়্যার বানানো কোম্পানির বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরো পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
মার্কিন কূটনীতিকদের ফোনে ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এর আগেও হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছে; বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব হ্যাকিংয়ে রাশিয়ার নাম এসেছে। তবে এবার এমন একটি কোম্পানির নাম এলো, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র একটি দেশের সাথে কাজ করে। এনএসও বলছে, তারা খুব সতর্কতার সাথে তাদের ক্রেতা নির্বাচন করে আসছে। যদিও গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, কোম্পানিটির সফটওয়্যার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের পরিপন্থী, যে কারণে তারা কোম্পানিটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে। উগান্ডায় মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের ওপর নজরদারি বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অ্যাপলের প্রতিনিধিরা মন্তব্য করতে রাজি হননি। এনএসও বলেছে, তারা এ অভিযোগ বিষয়ে স্বতন্ত্রভাবে তদন্ত করবে এবং যেকোনো সরকারি তদন্তে সহায়তা করবে।


আরো সংবাদ



premium cement