৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ক্রাইস্টচার্চ ট্র্যাজেডি শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদের হুমকির ব্যাপারে ট্রাম্পের নীরবতার সমালোচনা

২০১৯ সালের ১৭ মার্চ ওয়াশিংটন ডিসির সেন্ট জনস এপিসকোপল চার্চের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে চলে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প : এএফপি -

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় ও জাতিগত দ্বন্দ্বের ওপর তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রোববার এক আরব-আমেরিকান আইনপ্রণেতার নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের নীরবতার ব্যাপক সমালোচনা করেন। তারা এই নীরবতাকে হোয়াইট হাউজের শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠবাদী ও আধিপত্যবাদী মানসিকতা বলে উল্লেখ করেন। ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার পর টুইটারে ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রতিক্রিয়ার পর হোয়াইট হাউজের প্রধান স্টাফ মিক মুলভানি ট্রাম্পের চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কোনো সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করতে বাধ্য হন।
ফক্স নিউজে রোববার এক সাক্ষাৎকারে মুলভানি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী নন।’ তবে রোববার পৃথক টকশোতে মুসলিম ডেমোক্র্যাট রাশিদা তালিব বলেন, ‘শেতাঙ্গ সুপ্রিমিসির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টের জোরালো বক্তব্যদানে ব্যর্থতা দেশটিকে কম নিরাপদ করে তুলছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ ট্রাম্প। তিনি ওভাল অফিস থেকে একটি পরিষ্কার সঙ্কেত দিতে পারেন। আমরা অতীতে বিদেশী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এটি করেছি। আমরা একেবারে বাড়ির সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এটি করতে চাই। এ ব্যাপারে আমরা একেবারে নীরব থাকি।’
গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এতে ৫০ জন মারা যান। এ ঘটনায় ট্রাম্প নিউজিল্যান্ডের জনগণের প্রতি সহানুভূতি ও সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ওভাল অফিসের সাংবাদিকদের মন্তব্যে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়েছে, শেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান বিপদকে প্রতিনিধিত্ব করে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘সত্যিই না। আমি মনে করি এটি একটি ছোট গ্রুপ। যার খুব গুরুতর সমস্যা রয়েছে।’
ট্রাম্প একটি প্রতীক
ক্রাইস্টচার্চের ঘটনায় অভিযুক্ত বন্দুকধারীর নাম একজন অস্ট্রেলিয়ান শেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী হিসেবে চিহ্নিত। তার হামলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার হয়। তার ষড়যন্ত্র বর্ণবাদী তত্ত্বে ভরা। ট্রাম্পকে সে ‘শেতাঙ্গ পরিচয়ের নতুন উধাহরণ’ বলে উল্লেখ করে। নিউজিল্যান্ডে তৃণমূলপর্যায়ে আক্রমণ আমেরিকার ইহুদি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সংহতি বৃদ্ধির সূচনা করেছিল। শত শত মানুষ সিনসিনাটি থেকে ফিলাডেলফিয়া, পাসদোনা থেকে নিউ ইয়র্ক পর্যন্ত এই সংহতিতে অংশ নেয়। কিন্তু ইসরাইল ব্যাপারে কংগ্রেসের মুসলিম মহিলা ইলহান ওমরের মন্তব্যের ওপর বিতর্কের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃশ্য ফুটে ওঠে। নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর এই বিতর্ক ট্রাম্পের মন্তব্যে স্থানান্তরিত হয়।
রিপাবলিকান শেতাঙ্গ কার্স্টেন গিলিব্রেন্ড টুইট করেন, ‘প্রেসিডেন্টরা বর্ণবাদী সন্ত্রাসীদের নিন্দা করার পরিবর্তে তাদের সাহসী করে তুলেছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’ মুলভানি এসব নিয়ে মাথা ঘামান। তিনি বলে, ট্রাম্পের ইমিগ্র্যান্ট বিরোধী নীতির কারণে নিউজিল্যান্ডের আক্রমণের বিষয়ে কিছু করার ছিল। ‘নিউজিল্যান্ডে যা ঘটেছিল এটি একটি ভয়ানক মন্দ ও দুঃখজনক কাজ। চলুন বিশ্বের এসব বিষয় কেন আরো বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করি। এটি কি ডোনাল্ড ট্রাম্প? অবশ্যই না।’


আরো সংবাদ



premium cement