০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়ছে লোডশেডিং-তাপপ্রবাহ

বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়ছে লোডশেডিং-তাপপ্রবাহ - ছবি : ইউএনবি

উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রাজধানীর বাইরে লোডশেডিং শুরু হয়েছে।

শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি আরও খারাপ। কারণ জনরোষ এড়াতে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার দিকে বেশি মনোনিবেশ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরো বাড়িয়ে তুলছে।

ঢাকাসহ চার বিভাগে তাপপ্রবাহের সতর্কতা (হিট অ্যালার্ট) জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে বিদ্যমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির অফিসিয়াল পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মূলত মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশে গ্রীষ্ম শুরুর সাথে সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়।

দীর্ঘ শীতের পর গত ২৫ মার্চ মধ্যরাতে প্রায় ২০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হলে দেশে প্রথম বড় ধরনের লোডশেডিং হয়।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১ এপ্রিল রাত ২টায় প্রথমে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ৮৫০ মেগাওয়াট অতিক্রম করে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন,‘গ্রীষ্মের শুরু থেকে অর্থাৎ এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে, দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে।’

তিনি বলেন,‘দেশে এখন প্রতিদিন ১২০০-১৬৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে।’

পিজিসিবির তথ্যে আরো দেখা যায়, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ২ এপ্রিল বিকাল ৫টায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং রেকর্ড করা হয়, যেখানে ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১১ হাজার ৯৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

গত বছর ১৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি চাহিদার বিপরীতে গত ৩০ জুলাই সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছিল ১৫ হাজার ১০৪ মেগাওয়াট।

ফলে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করলেও বিদ্যুৎ সরবরাহে ৩ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি দেখা দেয়।

কিন্তু পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহে সীমাবদ্ধতার কারণে দেশে সব সময় ২৫০০-৩০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার উৎপাদন ইউনিট অলস রাখতে হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা পূর্বাভাস দিয়েছেন, এই গ্রীষ্মে দেশের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং গ্যাস সরবরাহ না বাড়ালে গত বছরের মতো লোডশেডিং পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দেশে ৭১৭ মিলিমিটার লোডশেডিং হয়েছে।

সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বাড়তে পারে আশঙ্কা করছেন বিপিডিবি কর্মকর্তারা।

এদিকে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনাল উৎপাদন শুরু করতে ব্যর্থ হওয়ায় আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না।

পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনিং) ইঞ্জিনিয়ার মো: কামরুজ্জামান খান বলেন,‘আমরা মনে করি সামিটের এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ পেতে আরও ৩-৪ দিন সময় লাগতে পারে।’

তিনি আরো জানান, সামিটের এলএনজি টার্মিনাল পুনরায় চালু হলে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে।

পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ৪ হাজার এমএমসিএফডির বেশি চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস সরবরাহ ছিল ২ হাজার ৬৪০ এমএমসিএফডি।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement