২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


ফিলিস্তিনিদের ছোড়া আগুনে বেলুন নয়, ইসরাইলি বিমান হামলার কারণ ভিন্ন

ফিলিস্তিনিদের ছোড়া আগুনে বেলুন নয়, ইসরাইলি বিমান হামলার কারণ ভিন্ন -

ইসরাইলের জঙ্গিবিমান আবারো গাজায় হামলা চালিয়েছে। খান ইউনুসের পূর্বাঞ্চলীয় মোয়াইন এলাকা এবং গাজার দক্ষিণে আল যেইতুন এলাকায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি জঙ্গি বিমান।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গাজা থেকে কয়েকটি আগুনে বেলুন ইসরাইলের দিকে ছোড়া হয় যার বিস্ফোরণে কয়েক জায়গায় আগুন ধরে যায়। এর প্রতিশোধ নিতেই গাজায় হামাসের সামরিক অবস্থানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। বায়তুল মোকাদ্দাস বা জেরুসালেমের ওল্ড সিটির কাছে উগ্র ইহুদিবাদীদের পতাকা মিছিল অনুষ্ঠানের মাত্র এক দিন পর ইসরাইল গাজায় এ হামলা চালালো।

তারা প্রতি বছর জেরুসালেমে পতাকা মিছিল বের করে। ইসরাইল এমন সময় এ বিমান হামলা চালালো যখন সম্প্রতি ১২ দিনের যুদ্ধে গাজার ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলার ধকল সইতে হয়েছিল ইসরাইলকে এবং শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের শরণাপন্ন হয়েছিল তেলআবিব। এছাড়া ইসরাইলে ক্ষমতারও পালাবদল হয়েছে।

গত সোমবার ইসরাইলে ভঙ্গুর মন্ত্রিসভা গঠিত হয় এবং নাফতালি বেনত্‌ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নেতানিয়াহু অত্যন্ত অপমানজনকভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। নতুন সরকার গঠন করেই নাফতালির মন্ত্রিসভা বায়তুল মোকাদ্দাস বা জেরুসালেমের ওল্ড সিটিতে উগ্র ইহুদিবাদীদের পতাকা মিছিলের অনুমতি দেয়।

বলা হচ্ছে উগ্র ইহুদিবাদীদের প্রচণ্ড চাপে পড়ে এবং নতুন মন্ত্রিসভাকে পতনের হাত থেকে রক্ষার জন্যই নয়া প্রধানমন্ত্রী নাফতালি পতাকা মিছিলের অনুমতি দেন। কিন্তু ইসরাইলের পুলিশ জানিয়েছে, পতাকা মিছিলের সড়ক পরিবর্তন করা হয় এবং এমন স্থানে ইহুদিবাদীরা এ মিছিল বের করে যাতে তারা আল আকসা মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং তারা কেবল বাব আল আমুদ থেকে ইয়াফা সড়কের মধ্যেই তাদের কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা আগেই যে কোনো উস্কানিমূলক তৎপরতার ব্যাপারে উগ্র ইহুদিবাদীদেরকে সতর্ক করে দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে সে কারণেই ইহুদীরা দূরত্ব বজায় রেখে পতাকা মিছিল করেছে।

প্রধানমন্ত্রী নাফতালি এই দুর্বলতা ধামাচাপা দেয়া, ইসরাইলের নাগরিকদের খুশী করা ও ফিলিস্তিনিদের মোকাবেলায় নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্যই গাজায় নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ইসরাইলের নতুন মন্ত্রিসভা স্বীকার করেছে, ফিলিস্তিনিদের হুমকির কারণেই উগ্র ইহুদিদের পতাকা মিছিলের সড়ক পরিবর্তন এবং আল আকসা মসজিদ থেকে তাদেরকে দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে এর প্রতিশোধ নিতেই তারা গাজার দুটি এলাকায় এলোপাথাড়ি হামলা চালিয়েছে, কেবল ইসরাইলি নাগরিকদেরকে খুশী করার জন্য। অর্থাৎ ইসরাইলের নতুন মন্ত্রিসভা এলে হতাশ হয়ে এবং ভঙ্গুর মন্ত্রিসভাকে পতনের হাত থেকে রক্ষার জন্যই ওই হামলা চালিয়েছে, আর মাত্র দুই এক জনের সিদ্ধান্তে এ হামলা হয়েছে। এদিকে গাজায় বিমান হামলা চালানোর পাশাপাশি ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ ক'জন ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দখলদার ইসরাইলের নতুন মন্ত্রিসভা এমন সময় এ ধরনের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে যখন তারা খুব ভালো করেই জানে ফিলিস্তিনিরা পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে। যার ফলে ইসরাইলের মন্ত্রিসভার পতনও ঘটতে পারে। অর্থাৎ বোঝা যায় ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের হামলা ও আগ্রাসন চালিয়ে কেবল নিজ মন্ত্রিসভার মান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
সূত্র : পার্সটুডে


আরো সংবাদ



premium cement