১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


মিসরের কায়রোতে প্রাচীন রাজা-রানীর মমির শোভাযাত্রা

মমিবাহী গাড়ি - ছবি : সংগৃহীত

প্রাচীন মিসরীয় শাসকদের এক অভাবনীয় ও ঐতিহাসিক শোভাযাত্রা বের হচ্ছে দেশটির রাজধানী কায়রোতে। শনিবারের এই শোভাযাত্রায় কায়রোর রাস্তায় জনতার ঢল নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাঁকজমকপূর্ণ ও ব্যয়বহুল এ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন কয়েক হাজার বছর আগের ২২ জন শাসক। তাদের মধ্যে ১৮ জন রাজা ও চারজন রানী। সাজানো গাড়িতে করে প্রাচীন এই শাসকদের মমি নিয়ে যাওয়া হবে তাদের নতুন ঠিকানায়।

এতদিন মিসরীয় জাদুঘরে থাকা এই শাসকদের নিয়ে যাওয়া হবে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তাদের নতুন ঠিকানায়। মিসরীয় সভ্যতার ওপর নির্মিত ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ইজিপশিয়ান সিভিলাইজেশন নামের নতুন এই জাদুঘরেই এখন থেকে তারা থাকবেন।

শোভাযাত্রা করে এ দূরত্ব পাড়ি দেবেন রাজা-রানীরা। এতে খরচ হবে কয়েক মিলিয়ন ডলার।

রাজ পরিবারের রক্ত ও মর্যাদার কথা বিবেচনা করে এ শোভাযাত্রা উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মিসরে এসব মমিকে বিবেচনা করা হয় জাতীয় সম্পদ হিসেবে।

শোভাযাত্রায় এই সব রাজা-রানীর কাকে কোথায় রাখা হবে ওটা নির্ভর করবে তাদের শাসনকালের ওপর।

বলা হচ্ছে শাসনকালের ক্রম অনুসারে তাদের মমি নিয়ে যাওয়া হবে।

এসব রাজা-রানীর মধ্যে রয়েছেন সপ্তদশ শতাব্দীর রাজা সেকেনেনরে থেকে শুরু করে খৃস্টপূর্ব দ্বাদশ শতাব্দীর রাজা নবম র‍্যামসেসও।

বলা হচ্ছে, শোভাযাত্রায় প্রধান আকর্ষণ রাজা দ্বিতীয় র‍্যামসেস। তাকে নিয়েই মানুষের বেশি আগ্রহ। তিনি ৬৭ বছর শাসন করেছেন এবং নিউ কিংডমে তিনিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ফারাও। বলা হয় যে তিনিই প্রথম কোনো শান্তি চুক্তিতে সই করেছিলেন।

আরেকজন রানী হাটশেপসুট। তার সময়ে কোনো নারীর ফারাও হওয়ার প্রথা না থাকলেও তিনি শাসক হয়েছিলেন।

মমি-বাহী প্রত্যেকটি গাড়ি সুন্দর করে সাজানো হবে। এছাড়াও রাস্তায় চলার পথে এগুলো যাতে ঝাঁকুনি না খায় সেজন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও যে পথে মমিগুলো নিয়ে যাওয়া হবে সেগুলোও মসৃণ করে তোলার জন্য মেরামত করা হয়েছে।

তাদেরকে ঘিরে থাকবে মোটরগাড়ির বহর ও ঘোড়ায় টানা রথের রেপ্লিকা।

ফারাওদের মৃতদেহ মমি করে রাখার পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন মিসরে। কিন্তু এ শোভাযাত্রার সময় এসব রাখা হবে নাইট্রোজেন-ভর্তি বিশেষ কিছু বাক্সর ভেতরে।

বাইরের আবহাওয়া থেকে মমিগুলোকে রক্ষার জন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কায়রোর আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে মিসর-বিদ্যার অধ্যাপক সালিমা ইকরাম বলেছেন, ‘মমিগুলো যাতে অক্ষত, স্থিতিশীল থাকে এবং সেগুলোর কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য এগুলোকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রাখার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পর্যটন ও প্রাচীনকালের নিদর্শন সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়।’

এসব মমিকে ১৮৮১ সালে থেকে ১৮৯৮ সালের মধ্যে প্রাচীন মিসরের রাজধানী থিবস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আধুনিক কালে এ জায়গাটি লুক্সর নামে পরিচিত।

ড. ইকরাম বলছেন, এর আগেও এসব মমিকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। লুক্সর থেকে রাজধানী কায়রোতে আনা হয়েছে নীল নদ দিয়ে নৌকায় করে। কিছু মমিকে আনা হয়েছে ট্রেনের প্রথম শ্রেণির বগিতে।

কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন জাদুঘরে স্থানান্তর করার পর এগুলো সারা বিশ্ব থেকে প্রচুর পর্যটক আকর্ষণ করবে। এর ফলে চাঙ্গা হয়ে উঠবে পর্যটন শিল্প যা মিসরের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।

এর আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সাম্প্রতিক কালে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এ শিল্পটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এক বছর আগে মিসরে করোনাভাইরাসের বড় ধরনের সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এর পর ধীরে ধীরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা কমে আসার পর জনসমাগমের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

রাজা রানীদের এ শোভাযাত্রা অনলাইনেও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
এক বছর পর দাউদকান্দিতে ড. মোশাররফ গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে সুষ্ঠুভাবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন রাজধানীতে আ’লীগের শান্তি সমাবেশ আজ কুয়াকাটা সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমুদ্রস্নান সরকারি হাসপাতালে অবৈধ ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান বন্ধের নির্দেশ ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে আ’লীগ জনগণকে নাগরিক হিসেবে বাতিল করেছে : জোনায়েদ সাকি ইবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের লাইন মালয়েশিয়ায় বিএমইটি কার্ডের নামে প্রতারণার ফাঁদ : সতর্ক করল দূতাবাস ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল আল মাহমুদপুত্র মীর তারিকের ইন্তেকাল

সকল