বারিধারায় একটি বাড়ি থেকে দুর্লভ পাঁচটি ঘড়ি এবং দুটি আইফোন চুরির ঘটনায় এক চোরের দলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
চুরি যাওয়া পাঁচটি ঘড়ির সব কয়টিই নামী ব্রান্ডের বিরল ও দামী ঘড়ি। এক একটি ঘড়ির মূল্য কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত। এমনটিই জানা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে ঘড়িগুলোর মূল্য সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে।
এর মধ্যে একটি ঘড়ি ছিল সোনায় মোড়ানো, যা গলিয়ে এক লাখ তিন হাজার টাকায় বিক্রিও করে দেয় চোরের দল।
চুরি হওয়া তিনটি ঘড়ি পুলিশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ বলছে, ঘড়ির মালিক মামুন আহমেদ নামে একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন সৌখিন ঘড়ি সংগ্রাহক।
তবে, গুলশান থানায় এ সংক্রান্ত যে মামলাটি হয়েছে, সেটির বাদি মামুন আহমেদ নন, তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক।
গুলশান থানার পরিদর্শক তদন্ত আমিনুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, গত ৮ জুন বারিধারার পার্ক রোডে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে পাঁচটি ঘড়ি চুরি করে নিয়ে যায় চোর।
এ ঘটনায় পরদিন পুলিশে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে, পরবর্তীতে ২৩ জুন মামলা হয়।
ওই দিন গুলশান ও ভাটারায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করে।
এদের মধ্যে একজন চুরির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল, অন্য দু’জনকে চোরাই ঘড়ি কেনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, চুরির পরপরই তারা ওই বাসার বাইরে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
একটি ফুটেজে রাতে ওই বাসার পাশে এক ব্যক্তিকে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়।
সেই ব্যক্তির ছবি আশেপাশের থানার সোর্সদের দেখিয়ে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয় তাকে।
এক পর্যায়ে মিজান নামে ব্যক্তিকে শনাক্তের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চুরির কথা স্বীকার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের চোর পুলিশকে বলেছে, ঘড়ির মূল্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না।
চুরি যাওয়া ঘড়ি সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে
পুলিশ জানিয়েছে, চুরি যাওয়া পাঁচটির মধ্যে তিনটি ঘড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সবকটি ঘড়িই বহুমূল্য। এর একটি বিশ্বখ্যাত রিশা মিল্লে ব্রাণ্ডের।
সুইস প্রতিষ্ঠানটি বিলাসবহুল ঘড়ি তৈরি করে। একইসাথে রেসিং কারও উৎপাদন করে।
পুলিশ বলছে, উদ্ধার হওয়া রিশা মিল্লে স্পেশাল এডিশন ঘড়িটির মূল্য সোয়া এক কোটি টাকা বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদি।
তবে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, রিশা মিল্লে স্পেশাল এডিশন পৃথিবীতে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি বানানো হয়েছে।
এর স্যাফায়ার কেসিং, বেজপ্লেট টাইটানিয়ামের, তার ওপর হীরা বসানো।
রিশা মিল্লের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই সিরিজের ঘড়িগুলোর দাম শুরু হয়েছে ৯০ হাজার পাউন্ড থেকে।
আরেকটি ঘড়ি ছিল প্যাটেক ফিলিপ ব্র্যান্ডের।
প্যাটেক ফিলিপ ঘড়িকে ঘড়ির রাজ্যের রোলস রয়েস বলা হত একসময়।
২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে বিলাসবহুল গহনা, হীরা এবং ঘড়ি বিক্রির বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউপি ডায়মন্ডসের করা বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ির একটি তালিকায় দুটি প্যাটেক ফিলিপ জায়গা পেয়েছে।
তার একটির দাম ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আরেকটি ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তবে চুরি যাওয়া ঘড়িটি এই মডেলের কি-না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পুলিশ।
একটি ঘড়ি ছিল বিএমডব্লিউ ব্রান্ডের, যেটি বিশ্ববিখ্যাত বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
এজাহারে এ ঘড়িটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ৫০ লাখ টাকার মতো।
এছাড়া মোভাদা মিউজিয়াম ব্র্যান্ডের দুটি ঘড়ি ছিল, এই ঘড়ি দুটি সোনায় মোড়ানো ছিল।
চোর সোনা গলিয়ে এক স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করে এক লাখ তিন হাজার টাকা পেয়েছে।
সেই টাকাও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মোভাদা মিউজিয়ামও বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড।
এ নিয়ে ঘড়ির মালিক মামুন আহমেদ এবং মামলার বাদি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা